চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকদের মাঝে হাইব্রিড বিপ্লব এনেছে বাংলাদেশের সবচেয়ে মোটা জাতের হীরা-৯ ধান। অন্যান্য জাতের ধানের তুলনায় চাষিরা রোগ ও পোকার আক্রমণ বিহীন হীরা-৯ জাতের হাইব্রিড ধান চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে তেরখাদা উপজেলার ইখড়ি এলাকায় অনুষ্ঠিত হীরা ধানের মেগা মাঠ দিবস, খেত দেখানো কর্মসূচি ও আলোচনা সভায় স্থানীয় কৃষক মোহাম্মদ তাহিদুল শেখ জানিয়েছেন, তিনি তার দুই বিঘা জমিতে হীরা-৯ জাতের বোরো থান চাষ করে এবার বাম্পার ফলন পেয়েছেন। আগামীতেও তিনি এ জাতের ধান চাষ করবেন। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে যেসব হাইব্রিড ধান চাষ হয়, হীরা-৯ তার মধ্যে অন্যতম। উচ্চ ফলনশীল হওয়ার কারণে এই ধান তাদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
সুপ্রিম সীড কোম্পানির আয়োজনে হীরা ধানের মেগা মাঠ দিবসে স্থানীয় কৃষক জব্বার মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপসহকারী কুষি কর্মকর্তা সঞ্জয় পোদ্দার, কোম্পানির এক্টিং রিজিওনাল ম্যানেজার কৃষিবিদ মো. সাইফুল আলম, কৃষক মাসুদ শেখ, রহিম মোল্লা প্রমুখ।
মাঠ দিবসের আলোচনার শুরুতে অতিথিরা কৃষকদের নিয়ে হীরা-৯ ধানসহ অন্যান্য জাতের চাষ করা কয়েকটি বোরো খেত পরিদর্শন করেন ও ধানের ছড়া সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে গণনা করে হীরা-৯ ধানের প্রতিটি শীষে গড়ে ৩০৬ থেকে ৩১০টি ধান পাওয়া যায়। অন্যান্য জাতের ধানে যেখানে সর্বোচ্চ ২০০টি ধান পাওয়া যায়।
অনুষ্ঠিত সভায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তার বক্তব্যে বলেন, হীরা-৯ বাংলাদেশের সবচেয়ে মোটা হাইব্রিড ধান। এই জাতের ধানে অন্য যেকোন হাইব্রিড জাতের ধানের তুলনায় বেশি ফলন হয়। রোগ ও পোকার আক্রমণ বিহীন ১৪৫ দিনের জীবন কালের হীরা-৯ ধানের জাতে প্রতি শতকে এক মণের অধিক ধান পাচ্ছেন কৃষকরা। পাশাপাশি এ ধানের খোসা অত্যন্ত পাতলা হওয়ায় প্রতি ১০০ মণ থানে ৭৩ মণের অধিক চাল পাওয়া যায়। এছাড়াও এ ধানের চাউলের ভাত অন্যান্য জাতের মতো আঠালো হয় না।
সভায় উপস্থিত প্রায় দুই শতাধিক কৃষকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বোরো চাষের মুরুতে আগে ভাবতে হবে কোন ধানের বীজ বপন করে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। কারণ এটা শুধু বীজ নয়, একটি পরিবারের স্বপ্ন। কৃষকরা জানিয়েছেন হীরা-৯ ধান চাষ করে তারা অন্যান্য চাতের চেয়ে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। তাই আগামীতেও তারা হীরা-৯ ধান চাষ করবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে যে কয়টি কোম্পানি হাইব্রিড ধানের আমদানির অনুমতি পেয়েছে তাদের মধ্যে একটি সুপ্রিম সীড। কোম্পানিটি বাংলাদেশে প্রথম চীন থেকে হীরা ধানের বীজ দেশে এনে বাজারজাত করে। এরপর তারা নিজস্ব উৎপাদনে যায়। বর্তমানে ৯০ শতাংশ বীচ নিজেরাই উৎপাদন করে বাজারজাত করছেন।
খুলনা গেজেট/জেএম