তেরখাদা উপজেলাতে আম বাগান ও বসতবাড়ির গাছে সবুজ পাতার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল। বসন্তের আগমনী বার্তায় প্রকৃতি সেজেছে ভিন্ন সাজে। শীত বিদায়ের শুরুতেই মুকুল জানান দিচ্ছে নতুন ঋতুর আগমন। বাগানের মালিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিচর্যায়। ভালো ফলনের আশায় তারা আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কৃষি বিভাগ বলছে, প্রাকৃতিক কারণেই এবার আগেভাগেই গাছে মুকুল এসেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ উপজেলাতে প্রায় ৬০ টির মত বাগান রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা মিলে আমের মুকুল আর গাছ। উৎপাদন লাভজনক হওয়ায় প্রতিটি বাড়ি আর বাগানে বাড়ছে গাছের সংখ্যা। প্রতিটি গাছে এখন মুকুলে সমারোহ হয়ে উঠেছে। এলাকার লোকজন আমের মুকুল ধরে রাখতে নানা প্রকার পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। তবে রোপণ করা গাছের মধ্যে দেশীয় পাশাপাশি বিদেশী ল্যাংড়া, গোপালভোগসহ নানা প্রজাতির আম গাছ রোপণ করা হয়েছে ।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমের মুকুল ঝরে পড়ে যায়। ফলে আশানুরূপ মুকুল থেকে আম আসেনা। তবে এ বছর প্রথম দিক থেকেই গাছে মুকুলের সমারোহ দেখা দিয়েছে। গাছগুলোতে ফাল্গুন মাসের প্রথম দিক থেকেই প্রচুর কুঁড়ি এবং মুকুল আসতে শুরু করে।
চাষিরা বলেছেন, পূর্ণাঙ্গ ফলে রূপ নেয় কয়েকটি পর্যায় অতিক্রম করে। প্রথমে মুকুল, মুকুল থেকে ফুল, ফুল থেকে গুটি এবং গুটি বড় হয়ে আম রূপ নেয় ফলে। প্রতিটি পর্যায়েই গাছের বালাই ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব রয়েছে। তবে মুকুল আসার আগে এবং পরে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কারণ মুকুল ঝরে পড়েই আমের উৎপাদন বহুলাংশে হ্রাস পায়। তা যদি প্রতিরোধ করা যেত তা হলে বিশাল আয় হত।
উপজেলার জয়সেনা এলাকার ইমামুল মিনা বলেন, বর্তমানে আবহাওয়ার যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে ধারনা করা হচ্ছে আমের জন্য অনুকুলই হবে এবং ভাল হবে। এখন পর্যন্ত যেহেতু বড় ধরণের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি। মুকুলের রোগবালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহার করে যাচ্ছি।
হাড়িখালী এলাকার চাষী মো. আসাদুজ্জামান শেখ ও আবুল হাসনাত মিটু বলেন, আমাদের বাগানে মুকুল আসার পর থেকেই গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছি। মুকুলের রোগবালাই আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী গাছের পরিচর্যা করছি।
তেরখাদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শিউলি মজুমদার বলেন, তেরখাদা উপজেলায় প্রায় ৫০/৬০ টি আমবাগান রয়েছে। এসব বাগানে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ করা হয়। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর আমের চাষ যেমন বেশি হয়েছে, তেমন আমগাছে মুকুলও এসেছে বেশি। অনুকূল আবহাওয়া এবং কৃষকরা আমবাগানের পরিচর্যায় যত্নবান হলে আমের বাম্পার ফলনের জন্য উপযোগী। এ অবস্থায় থাকলে এবার আমের বাম্পর ফলনের আশা প্রকাশ করছেন।
খুলনা গেজেট/এএজে