ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আজ বৃহস্পতিবার ৮৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে এরই মধ্যে ২২ উপজেলার ভোট স্থগিত করা হয়েছে। বাকি উপজেলাগুলোতে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। কারণ, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর বর্জনে এর আগের দুই ধাপে কম ভোটার উপস্থিতির রেকর্ড রয়েছে।
তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলার তপশিল হলেও পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় সব পদে একক প্রার্থী থাকায় সেখানে ভোট হচ্ছে না। বিভিন্ন কারণে আরও দুই উপজেলায় ভোট স্থগিত। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসি সচিবালয়ের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী ভোট হবে ৮৭ উপজেলায়। এর মধ্যে ইভিএমে ১৬টি; বাকিগুলোতে ব্যালটের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে। তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ইভিএমসহ সরঞ্জাম এবং ভোট গ্রহণ-সংশ্লিষ্টরা টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপে পৌঁছাতে না পারায় ইউনিয়নটিতে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা দিয়েছে।
ইসি সচিবালয় জানিয়েছে, তৃতীয় ধাপে মোট ১ হাজার ১৫২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৯৭, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৫৬ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আছেন ২৯৯ জন। এ ধাপে চেয়ারম্যান পদে ১, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন।
গতকাল নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে যা ছিল, এই ধাপে আরও বাড়ানো হয়েছে, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে জড়িত এবং কমিশন খুব কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সহিংসতা করে কেউ পার পাবে না। আবহাওয়া কেমন থাকবে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ভোটার উপস্থিতি নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করার সুযোগ নেই।
কম ভোটার উপস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, ভোটার উপস্থিতি বাড়িয়ে দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। ১ শতাংশ ভোট পড়লেও কমিশন খুশি। ইসির কঠোর নির্দেশনা রয়েছে, একজন এলে, ওই একটি ভোটই হবে। দুটি দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি বাড়িয়ে অথবা কমিয়ে দেখান এবং তা যদি প্রমাণিত হয়, কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও তিন উপজেলায় ভোট স্থগিত
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে আগের দিন ১৯টির সঙ্গে গতকাল আরও তিন উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে ইসি। উপজেলাগুলো হলো নেত্রকোনার খালিয়াজুরী এবং চাঁদপুরের কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ।
উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে ভোট করার সুযোগ থাকলেও এবার স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বা মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। ফলে আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। অন্যদিকে বিএনপির কিছু নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়লেও দলটি উপজেলা পরিষদের ভোট বর্জন করেছে।
এ ধাপের নির্বাচনে ৩ হাজার ২৭৭ জন পর্যবেক্ষককে অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ১৫ পর্যবেক্ষক সংস্থার কেন্দ্রীয়ভাবে ২২৯ ও স্থানীয়ভাবে ৩ হাজার ৪৮ জন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে থাকবেন। আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপের ভোট হবে।