ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এদিকে ভূমিকম্প আঘাত হানার নবম দিন মঙ্গলবার আরও নয়জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা গুটিয়ে এনে এখন গৃহহারা মানুষদের জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা ও খাদ্য সহায়তার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
বড় ধরনের এই ভূমিকম্পে কেবল তুরস্কেই নিহত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৪১৮ জন। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ৮০০ জনের বেশি। বেঁচে যাওয়া অনেক গৃহহীন মানুষ তীব্র শীতের মধ্যে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। প্রাথমিক উদ্ধার তৎপরতায় সমস্যা থাকার কথা স্বীকার করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তবে তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।
এরদোয়ান বলেন, ‘আমরা শুধু আমাদের দেশেই নয়, মানবতার ইতিহাসেও সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করছি।’
মঙ্গলবার জীবিত উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ১৭ ও ২১ বছর বয়সী দুই ভাই রয়েছেন। তুরস্কের কাহরামানমারাস প্রদেশের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। আন্তাকিয়ায় একজন সিরীয় পুরুষ ও একজন সিরীয় তরুণীকে ভূমিকম্পের ২০০ ঘণ্টারও বেশি সময় পর ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আরও জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা আছে বলে একজন উদ্ধারকারী বলেছেন।
তবে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, উদ্ধার পর্ব শেষ হওয়ার পথে। এখন থেকে আশ্রয়, খাদ্যসহায়তা ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ওপর জোর দেওয়া হবে।
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজিয়ান্তেপ শহরে একটি খেলার মাঠে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন শরণার্থী হাসান সাইমোয়া। তিনি বলেন, ‘মানুষ অনেক দুর্ভোগে আছে। আমরা একটি তাঁবু, সাহায্য তথা কিছু জিনিসের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি।’
যুদ্ধের কারণে নিজ দেশ থেকে সাইমোয়া ও অন্য সিরীয়রা পালিয়ে গাজিয়ান্তেপে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু ভূমিকম্প তাঁদের বাস্তুহারা করেছে। এখন তারা প্লাস্টিক শিট, কম্বল ও কার্ডবোর্ড দিয়ে খেলার মাঠে অস্থায়ী তাঁবু টানিয়ে থাকছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপ অঞ্চলের পরিচালক হ্যানস হেনরি পি ক্লুগ বলেন, ‘(সাহায্যের) চাহিদা প্রচুর, প্রতি ঘণ্টায় সেটা বাড়ছে। দুই দেশের প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।’