পছন্দের ব্যক্তিকে সাইকেল গ্যারেজ ইজারা না দেওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মোহসীন আলী ফরাজিকে গালিগালাজ ও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আসাদের সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা কক্ষে উপস্থিত অন্য চিকিৎসকদের দিকে তেড়ে যান। এ নিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় শনিবার (২৪ মে) কলেজ ও হাসপাতাল খুললে কর্মসূচি ঘোষণা দিতে পারেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালে সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়, বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুর ১২টা ২৯ মিনিটে ৮ থেকে ১০ জন নেতাকর্মীকে নিয়ে পরিচালকের কক্ষে প্রবেশ করেন আসাদুজ্জামান আসাদ। পরিচালকের কক্ষে ডা. মোহসীন আলী ফরাজির সঙ্গে আসাদসহ অন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে এসেছে।
অডিও ক্লিপে আসাদকে বলতে শোনা যায়, এতদিন আওয়ামী লীগের লোকজন কাজ করেছে, এখন আমাদের দিতে হবে। এ সময় পরিচালক কিছু দিন অপেক্ষা করতে বলেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আসাদ। পরিচালককে উদ্দেশ্য করে আসাদ বলেন, ‘আপনার মতো লোক বহু দেখেছি, ১৬ বছর আওয়ামী লীগ পিটাইছি। সাহস থাকলে তুই বাইরে আয়, তোর খবর আছে।
এ সময় অন্য চিকিৎসকরা তার কথার প্রতিবাদ করলে আসাদ বলতে থাকেন, ‘সাহস থাকলে বাইরে আয়, এখনই আয়, এরপর দেখাচ্ছি আমি কি করতে পারি না পারি। বাইরে বের হয়ে দেখ, দেখতেছি’।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহসীন আলী ফারাজী বলেন, ‘হাসপাতালের সামনে গ্যারেজটি ‘অন্তিকা এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেওয়া রয়েছে। জুন মাসে এর মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু এর আগেই তারা আরেকজনকে ভাড়া দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তাদের বারবার বলা হচ্ছিলো, নির্ধারিত সময়ে দরপত্রে অংশ নেন। কিন্তু তারা কোনো ধরনের কথা শুনতে চাইছিলেন না। এরপরে যা ঘটেছে আমার তিন দশকের চিকিৎসা জীবনে এমন ঘটনার মুখোমুখি হইনি। এসব বলতেও বিব্রত লাগছে।’
তবে আসাদুজ্জামান আসাদ পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহত এক নেতাকে দেখতে গিয়েছিলাম। তখন তত্ত্বাবধায়কের কাছে একটি কথা বলতে গিয়েছিলাম। তার ব্যবহার ভালো ছিল না। তাকে একটু ভালো ব্যবহার করতে বলেছি।’
এর আগে ২ মার্চ আউটসোর্সিং জনবল নিয়োগের দরপত্রকে কেন্দ্র করে সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার শাহ আলম মোল্লার কক্ষে ভাঙচুর এবং তাঁকে লাঞ্চিত করেন আসাদুজ্জামান আসাদ। ওইদিনও তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন।
খুলনা গেজেট/এমএনএস