সাকিবের ফিফটির পর বিদায় নেন আফিফ। ওকসের বলে কাভারে তুলে দেন মঈন আলীর হাতে। ২৪ বলে ১৫ রান করেন তিনি। তার আউটে ভেঙে যায় ৪৯ রানের জুটি। এরপর মিরাজ এসে ১ ওভারও টিকতে পারেননি। ৬ বলে ৫ রান করে অভিষিক্ত রেহানের বলে তার হাতেই ক্যাচ দেন মিরাজ। মিরাজের পর তাইজুল এসে ৬ বলের বেশি খেলতে পারেননি। আর্চারের স্লো বলে উপরে তুলে দেন তাইজুল (২), আর্চারই ক্যাচ নেন তার। ১৫ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশ হারায় ৩ উইকেট। আরেক পাশে সাকিব খেলে যাচ্ছেন সাবলীল ভাবে।
সাকিবের টানা দ্বিতীয় ফিফটি
ওকসের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটির দেখা পান সাকিব আল হাসান। মুশফিক-মাহমুদউল্লার বিদায়ের পর তার ব্যাটেই ভিত গড়ে বাংলাদেশ। ৫৫ বলে ৩টি চারে ক্যারিয়ারের ৫২তম ফিফটি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ। এই সিরিজে টানা দ্বিতীয় ফিফটি। অন্য ব্যাটসম্যানরা সংগ্রাম করলেও সাকিব ছিলেন সাবলীল। স্ট্রাইক রোটেট করছেন, সুযোগ পেলেই মারছেন বাউন্ডারি।
মুশফিকের পর রশিদের ঘূর্ণিতে বোল্ড মাহমুদউল্লাহ
মুশফিকের পথে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আদিল রশিদকে ছক্কা হাঁকিয়েছেন ১ বল আগে। ডাউন দ্য উইকেট গিয়ে লং অনে আছড়ে ফেলেন বাউন্ডারির বাইরে। পরের বল বেরিয়ে যায়। এরপরই বিপত্তি। ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন কিন্তু রশিদের স্কিড করা গুগলি ভেঙে দেয় মিডল স্ট্যাম্প। ৮ রানে ইতি ঘটে মাহমুদউল্লাহর ইনিংসের। ক্রিজে সাকিবের সঙ্গী আফিফ।
সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড মুশফিক
ওয়াইড লেগে করা আহের বল মিস করেছিলেন। জায়গা দাঁড়িয়ে শট করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বল বেরিয়ে যায়। এবার আর এমন করেননি রশিদ, সোজাসুজি করা ফুলার বলে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হলেন। ৭ ইনিংস পর ফিফটির দেখা পেয়েও সেঞ্চুরিতে রুপান্তরিত করতে পারেননি। ৯৩ বলে ৭০ রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন সাজঘরে। ক্রিজে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
সাত ইনিংস পর মুশফিকের ফিফটি
ওয়ানডে ক্রিকেটে দীর্ঘদিন পর রান পেলেন মুশফিকুর রহিম। গত বছরের ৫ আগস্ট জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫২ রানে অপরাজিত ছিলেন। এরপর ৭ ম্যাচে তার সর্বোচ্চ রান ছিল কেবল ২৫। সাত মাস, সাত ইনিংস পর তার ব্যাট থেকে এলো ফিফটি রানের ইনিংস।
চট্টগ্রামে সোমবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে ফিফটি পেয়েছেন। ৬৯ বলে ক্যারিয়ারের ৪৩তম ফিফটি পেয়েছেন মুশফিক। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে তামিম ড্রেসিংরুমে ফিরলে ক্রিজে আসেন মুশফিক। শুরুতে রান পেতে ভুগেছেন। থিতু হওয়ার পর বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করছেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। দেখা যাক ইনিংসটি বড় করতে পারেন কিনা।
রান আউটে ভাঙল মুশফিক-শান্তর জুটি
লেগ স্পিনার রেহান আহমেদের বল সুইপ করে স্কয়ার লেগে পাঠিয়েছিলেন শান্ত। রান নেওয়ার কোনো ইচ্ছাই ছিল না তার। নো নো বলে কলও দিয়েছিলেন। কিন্তু মুশফিকুর রহিম তখন প্রান্ত বদলের জন্য মাঝ ক্রিজে চলে যায়। সতীর্থর ডাকে তখন সাড়া দেন শান্ত। কিন্তু তাতেই ডেকে আসে বিপদ। বাটলারের সহজ থ্রো ধরে বোলার রেহান উইকেট ভাঙেন। ডাইভ দিয়েও উইকেট বাঁচাতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ফিফটি পাওয়া শান্তকে ৫৩ রানে। তৃতীয় উইকেটে তাদের ৯৮ রানের জুটিতে লড়াইয়ে ফিরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শান্তর আউটে নিশ্চিতভাবেই ছন্দপতন হলো আরো একবার।
শান্তর ফিফটি, লড়াইয়ে বাংলাদেশ
খাদের কিনারা থেকে দলকে তুলে দারুণ লড়াইয়ে ফিফটি পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। বিপর্যয় সামলে নিতে দুজনই সময় নিয়েছিলেন। থিতু হওয়ার পর তাদের আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ধারাবাহিক রান তুলে শান্ত পেয়েছেন সিরিজের দ্বিতীয় ফিফটি। ৬৯ বলে ফিফটি পেতে চার মেরেছেন ৫টি।
মুশফিক-শান্তর ফিফটির জুটিতে বাংলাদেশের প্রতিরোধ
বরাবরের মতো শুরুতে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর প্রতিরোধ গড়েন মুশফিকুর রহিম-নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনে থিতু হতে বেশ সময় নিয়েছেন। পাওয়ার প্লেতে আসে মাত্র ৩৪ রান। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রান তোলার চেষ্টা করছেন তারা। ৭৯ বলে দুজনের জুটির রান ফিফটি পূর্ণ করে।
পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ৪৩টি ডট, বাউন্ডারি ৪টি
১৭ রানে নেই দুই ওপেনার। এরপর দুই ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম-নাজমুল হোসেন শান্ত প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছেন। তবে স্ট্রাইকরোটেট করে খেলতে পারছে না দুজনে। তাদের নজর ক্রিজে থিতু হওয়া। তার প্রভাব পড়ছে পাওয়ার প্লেতে। ১০ ওভারে বাংলাদেশ স্কোরবোর্ডে জমা হয় ২ উইকেটে মাত্র ৩৪ রান। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে বাংলাদেশ ডট বলই খেলে ৪৩টি, অর্থ্যাৎ ৭.১ ওভার! বাউন্ডারি আসে মাত্র ৪টি।
লিটনের পর ১১ রানে তামিমের বিদায়
আবারও কারানের আঘাত। হালকা সুইং করা বলে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন তামিম। টাইমিং ঠিক হয়নি। বল চলে যায় পয়েন্টে। সহজ ক্যাচ ধরেন জেমস ভিন্স। শুরুতেই বাংলাদেশ হারালো ২ উইকেট। ৬ বলে ১১ রান করেন তিনি। এর আগে লিটন ফেরেন শূন্য রানে। ১৭ রানে দুই ওপেনারকে হারালো বাংলাদেশ।
টানা দুই ম্যাচে লিটনের শূন্য
আবারও লিটন দাস আউট প্রথম ওভারে। টানা দুই ম্যাচে ফিরলেন শূন্য রানে। স্যাম কারানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। প্রথম ওভারেই বাইরেই বল খেলতে গিয়ে অযথা উইকেট বিলিয়ে এসেছেন এই ওপেনার। এর আগের ম্যাচে কারানের প্রথম বলেই ফেরেন শূন্য রানে। তিন ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ৭, ০, ০। সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটিং ভরাডুবির অন্যতম কারণ শুরুতেই লিটনের আউট হয়ে যাওয়া। চট্টগ্রামে স্পোর্টিং উইকেটেও লিটন ব্যর্থ।
বিশ্রামে তাসকিন, ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে আজ সোমবার দুপুর ১২টায় জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সিরিজের তিন ম্যাচেই বাংলাদেশ টস জিতে। ২-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে ইংল্যান্ড।
বাংলাদেশ নেমেছে এক পরিবর্তন নিয়ে। বিশ্রামে রাখা হয়েছে তাসকিন আহমেদকে। একাদশে ঢুকেছেন ইবাদত হোসেন চৌধুরী।
বাংলাদেশ একাদশ
তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, ইবাদত হোসেন চৌধুরী, তাইজুল ইসলাম।
ইংল্যান্ড দল নেমেছে তিন পরিবর্তন নিয়ে। একাদশে ফিরেছেন জোফরা আর্চার, ক্রিস ওকস। অভিষেক হচ্ছে রেহান আহমেদের।
ইংল্যান্ড একাদশ
জস বাটলার (অধিনায়ক), মইন আলি, স্যাম কারান, দাভিদ মালান, আদিল রশিদ, জেসন রয়, ফিল সল্ট, জেমস ভিন্স, ক্রিস ওকস, রেহান আহমেদ ও জফ্রা আর্চার।
৯ বছর পর ধবলধোলাইয়ের মুখে বাংলাদেশ
২-০ ব্যবধানে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করেছে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশের সামনে ৯ বছর পর ঘরের মাঠে ধবলধোলাই এড়ানোর চ্যালেঞ্জ। ২০১৪ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে শেষবার সিরিজের সবগুলো ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ। সেবার হাথুরুসিংহের প্রথম মেয়াদের প্রথম সিরিজ ছিল। কাকতালীয়ভাবে এবার হাথুরুসিংহের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম সিরিজ! মাঝের বছরগুলোতে ওয়ানডেতে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ ছিল এক কথায় অপ্রতিরোধ্য। ১৬ সিরিজে এবারেরটিসহ মাত্র হেরেছে তিনটিতে।
চট্টগ্রামের উইকেটে বড় পরীক্ষা
ইংলিশদের সামনে সাগরিকার উইকেটে হতে পারে বড় পরীক্ষা। বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানদের ছড়াছড়ি ইংল্যান্ড দলে, ব্যাটিং বান্ধব হিসেবে পরিচিত এই উইকেটে কীভাবে আঁটসাঁট বোলিং করেন স্বাগতিক বোলাররা এটাই দেখার বিষয়। ব্যাটসম্যানদের লড়তে হবে বিশ্বসেরা বোলারদের বিপক্ষে। সবমিলিয়ে স্পোর্টিং উইকেটে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের শক্তির পরীক্ষা হয়ে যাবে। মাত্র তিন মাস আগে এই ভেন্যুতে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিতীয় বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। ভারত প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ৪০৯ রান করেছিল। জবাবে ১৮২ রানে গুটিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। ইংলিশরাও কি তেমন কিছু করবে?
বাউন্স ব্যাক করতে চায় বাংলাদেশ
সব পেছনে ফেলে বাংলাদেশ চায় পাল্টা আক্রমণ করতে। স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথের প্রত্যাশা তেমনটাই, ‘পরাজিত দলে থাকাটা সহজ কিছু নয়। তবে এটা খেলারই অংশ। আমাদের শক্তিশালী হয়ে ফিরতে হবে। এই চ্যালেঞ্জটা নিতে, শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো করার জন্য আমরা মুখিয়ে আছি।’
সিরিজ জিতে নির্ভার ইংল্যান্ড
অন্যদিকে বাংলদেশ দলের তুলোনায় ইংল্যান্ড শিবির ছিল নির্ভার। উইকেট নিয়েও তাদের মাঝে নেই কোনো দুশ্চিন্তা। ‘যদি ঘূর্ণি উইকেটও হয়, আমরা মানিয়ে নিতে পারব। ভারতে গিয়েও হয়ত এরকম উইকেট পাব আমরা। আমরা সেখানে যাব এবং চাইব বিশ্বকাপ জিততে। আমাদের ব্যাটিং ইউনিট নিশ্চয়ই রোমাঞ্চিত হবে’-এভাবেই বলেছেন ইলিংশ পেসার মার্ক উড।
খুলনা গেজেট/ এসজেড