সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (সিভিবি) বন্ধ হয়ে যাওয়ার তিন দিনের মাথায় বন্ধ হয়ে গেলো যুক্তরাষ্ট্রের আরেক জনপ্রিয় ব্যাংক। ১২ই মার্চ বন্ধ হয়ে গেছে দেশটির নিউইয়র্কভিত্তিক সিগনেচার ব্যাংক। সিভিবি’র মতো এই ব্যাংকটিরও গচ্ছিত অর্থ ও যাবতীয় নথিপত্র অধিগ্রহণ করেছে সরকার। এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি।
খবরে জানানো হয়েছে, সিভিবি বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ, ফেডারেল ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন এবং ট্রেজারি দপ্তর। এতে বলা হয়েছে, আমানতকারীরা সোমবার থেকে তাদের সমস্ত অর্থের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে। ওই বিবৃতিতেই সিগনেচার ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করা হয়। সিগনেচার ব্যাংকের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১১০ বিলিয়ন ডলার এবং তাদের আমানত আছে ৮৮ বিলিয়ন ডলার।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ফেড ঘোষণা করেছে তারা আমানতকারীদের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করার জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে অতিরিক্ত তহবিল দেবে। আমাদের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা জোরদার করে মার্কিন অর্থনীতিকে রক্ষা করার জন্য আমরা সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছি। ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের পরে গৃহীত সংস্কারের কারণে মার্কিন ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা শক্তিশালী ভিত্তির উপরে রয়েছে। ওই সংস্কার এবং আজকের দিনে আমাদের পদক্ষেপ যৌথভাবে প্রমাণ করে যে, আমানতকারীদের সঞ্চয়গুলি সুরক্ষিত রাখার জন্য আমরা কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জানা গেছে, গ্রাহকদের মাঝে জনপ্রিয় ছিল নিউইয়র্কের সিগনেচার ব্যাংক।
বহু মানুষ এই ব্যাংকে সঞ্চিত অর্থ রেখেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ব্যাংকটির অগ্রগতি থমকে যায়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও গতকাল রোববার সিগনেচার ব্যাংকের ম্যানহাটনের প্রধান কার্যালয়ে এক বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার জন্য কর্মীরা জড়ো হয়েছিলেন। এমনকি ইতালীয় রেস্তোরাঁ কারমিন থেকে দুপুরের খাবারের অর্ডারও দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু ব্যাংক বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে কর্মীরা এক এক করে প্রধান কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন।
মার্কিন প্রশাসন অবশ্য গ্রাহকদের আশ্বস্ত করেছে। সিগনেচার ব্যাংকের আগে শুক্রবার সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায়। তার নথিপত্রও অধিগ্রহণ করেছে সরকার। ২০০৮ সালের বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার পর, এটাই দেশটির ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় পতন। প্রযুক্তিভিত্তিক স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগের মাধ্যমে অল্প সময়ে বিপুল অর্থ সঞ্চয় করেছিল সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক। আমেরিকার বন্ডেই এই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু মূল্যস্ফীতির হার কমাতে ফেডারেল রিজার্ভ গত বছর সুদের হার বাড়াতে শুরু করে, যার ফলে বন্ডের দর কমে যায়। এতেই পতন হয় সিভিবি’র। এবার একই পরিণতি হলো সিগনেচার ব্যাংকের।
খুলনা গেজেট/ বিএম শহিদ