রাজধানীর মহাখালীর সাততলা বস্তিতে লাগা আগুন প্রায় তিন ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ সোমবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে কয়েকশ’ ঘর পুড়ে গেছে। হতাহত হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আগুনে দুই শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডে যাঁদের ঘর পুড়ে গেছে, তাঁরা রাস্তায় এসে ভিড় করেছেন। তাঁদের মধ্যে রিকশাচালক রফিকুল পোড়া ঘর দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। রফিকুল বলেন, ‘আমি রিকশা চালিয়ে যা আয় করেছিলাম, সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’ রফিকুলের মতো বস্তির আরও অনেকে আগুনে সব হারিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক নিয়াজ আহমেদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার খবর জানিয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনো জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মকর্তা কামরুল হাসান এর আগে জানান, আজ ভোররাত চারটার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট। গ্যাস কিংবা বিদ্যুতের লাইন থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া সকালে মুঠোফোনে বলেন, ভোররাত ৪টা ৮ মিনিটে মহাখালীর সাততলা বস্তিতে আগুন লাগার খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান।
এদিকে বস্তিতে ভোরে যে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, তার কারণ তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। একইসাথে তারা বলছে, সাততলা বস্তির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের পাশাপাশি বস্তির বাসিন্দারাও আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। বাতাসে আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয়।
এছাড়াও সকাল ৭টায় গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে প্রেস ব্রিফ করেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সাজ্জাদ হোসাইন। তিনি বলেন, অবৈধ গ্যাসের লাইন বা বিদ্যুৎ লাইনের ত্রুটি থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে। তবে প্রকৃত ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষ।
ফায়ার সার্ভিস সদর দফতর সূত্র জানায়, এর আগে ২০১২, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ডিসেম্বরে এবং ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর মহাখালীর এই বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রতিবারই বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। অবৈধ বৈদ্যুতিক সংযোগের দুর্বল তারের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। আর সেই ঝুঁকি এখনও রয়ে গেছে।
খুলনা গেজেট/ টিআই/এনএম