যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তিনদিন বন্ধ থাকার পরে আবারও উৎপাদন শুরু হয়েছে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাত একটার দিকে কেন্দ্রটির ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট থেকে উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হচ্ছে। বুধবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিঃ (বিআইএফপিসিএল) উপমহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে শনিবার (১৫ এপ্রিল) রাত থেকে কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় এই মেগা প্রকল্পের। তারও আগে ১৪ জানুয়ারি কয়লা সংকটে বন্ধ হয়েছিল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।
উপমহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, কারিগরি ত্রুটির কারণে ১৫ এপ্রিল রাত থেকে কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার রাত থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রটির কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের জেলা গুলোতে ব্যাপক লোড শেডিং দেখা দিয়েছিল। কেন্দ্রটি আবারও উৎপাদনে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট্যরা।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিঃ এর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাঃ) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়। এই কোম্পানির অধীনে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান শুরু হয় ।
রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় ১ হাজার ৩৪ একর জমি অধিগ্রহন শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান শুরু হয়। ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই শুরু হয় জমি ভরাট ও সড়ক নির্মাণের কাজ। প্রায় ৯ বছর বিশলা কর্মেযজ্ঞ শেষে বানিজ্যিকভাবে উৎপাদনে গেল প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে এবছরের ১১ জুলাই বয়লার স্টিম ব্লোয়িং স্থাপন করা হয়। এক মাস পরে ১৪ আগস্ট টারবাইন-এ স্টিম ডাম্পিং এবং একদিন পরে ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রীডের সাথে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়। পরে ১৭ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় গ্রীডে বানিজ্যিকভাবে যুক্ত হয় এখানের বিদ্যুৎ। পরে ১৪ জানুয়ারি কয়লা সংকটে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটি। এর প্রায় একমাস পরে কয়লা প্রাপ্তি সাপেক্ষে ১৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১২টায় আবারও প্রথম ইউনিটের উৎপাদন শুরু হয়।
খুলনা গেজেট/ এসজেড