খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ভবনটিকে ২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। মূলত এটি হাসপাতালের পৃথক একটি ইউনিট। গত তিন বছর সেখানে প্রায় ১০ হাজার ১০১ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। সংক্রমণ কমে যাওয়ায় গতবছর থেকে রোগী শুন্য হতে থাকে হাসপাতালটি। এর মধ্যে গত ২৬ এপ্রিলের পর থেকে সেখানে কোনো রোগী ভর্তি হননি।
রোগী না থাকায় গত ৫ মাস ভবনটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। ব্যবহার না করায় নষ্টের উপক্রম হয়েছে রোগীদের জন্য জরুরিভিত্তিতে আনা ১০টি আইসিইউ শয্যা, ১০টি এইচডিইউ শয্যা, ভেন্টিলেশন মেশিন, ১২টি হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলাসহ কোটি কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম।
সম্প্রতি করোনা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনটির উর্ধ্বমূখী সম্প্রসারণের কাজ চলছে। রোগী না থাকায় প্রধান ফটকের সামনে সিমেন্টের অবস্থা স্তুপ করে রাখা হয়েছে। ভবনের প্রতিটি স্তরে অবহেলা, অযত্মের ছাপ।
দেখা গেছে, নিচতলায় মেঝেতে বৃষ্টির পানি জমে রয়েছে। রোগী ভর্তির স্থান রেড জোন ও ইয়োলো জোন তালা দেওয়া। নার্সদের কক্ষটি ধুলোতে ভরা। দ্বিতীয় তলায় আইসিইউ, এইচডিইউ ইউনিট তালাবদ্ধ। ভেতরের কক্ষগুলোতে মাকড়োশার ঝুল জমেছে। নির্মাণ কাজ চলায় কাদাপানি, ধুলো সয়লাব প্রতিটি স্থান।
হাসপাতালের নথিতে দেখা গেছে, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৭ হাজার ১২৯ জন এবং করোনা ওয়ার্ডে ২ হাজার ৯৭২ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৬০০ জন। হাসপাতালটিতে সর্বশেষ রোগী ছিলেন ডুমুরিয়া উপজেলার আবদুর রহমান। ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল ভর্তি হয়ে ২৯ এপ্রিল তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এরপর আর কোনো রোগী ভর্তি হননি।
হাসপাতালের নিচতলায় র্যাপিড এন্টিজেন দিয়ে এখনও করোনা শনাক্ত করার কাজ চলছে। গত ২৮ আগস্ট সর্বশেষ ডলি রানী দাশ নামের এক রোগীর করোনা শনাক্ত হয়।
খুলনার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী বলেন, আইসিইউ বিভাগ চালু করতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছি। টেকনিশিয়ানরা সরঞ্জামগুলো পরীক্ষা নিরিক্ষা করছেন। খুব শিগগিরই বিভাগটি চালু করে ননকোভিড রোগীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
খুলনা গেজেট/হিমালয়