লক্ষ্যটা মোটেই সহজ ছিল না। জিততে হলে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে পাড়ি দিতে হতো ১৯৪ রান। হিমশীতল শেরেবাংলায় এই কঠিন কাজটাই করে দেখাল সিলেট। তৌহিদ-জাকিরদের দৃঢ়তায় তারকাবহুল বরিশালকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয়ের স্বাদ পেল মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার দল।
বিপিএলে শনিবার দিনের ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ৬ উইকেটে হারিছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। এই নিয়ে আসরে দুই ম্যাচ খেলে দুটোতেই জয় পেল মাশরাফীর দল।
দিনটি হতে পারতো সাকিব আল হাসানের। কুয়াশাভেজা সন্ধ্যায় নান্দনিক ব্যাটিংয়ে দর্শকদের আনন্দ দিয়েছিলেন তিনি। খেলেছেন ৬৭ রানের দারুণ ইনিংস। কিন্তু সাকিবের ইনিংস মলিন করে শেষ পর্যন্ত সব আলো কেড়ে নেয় সিলেট স্ট্রাইকার্স।
মিরপুর শেরববাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বরিশাল। সাকিবের ব্যাটিং তাণ্ডবে ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান তোলে বরিশাল। ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৩২ বলে ৬৭ রানের ইনিংস উপহার দেন সাকিব। ৭ চার ও ৪ ছয়ে সাজানো ইনিংস থামে মাশরাফীর বলে মোহাম্মদ আমিরের হাতে ক্যাচ তুলে।
সাকিব ছাড়াও আলো ছড়িয়েছেন চতুরাঙা ডি সিলভা ও এনামুল হক। ওপেনিং জুটিতে দুইজন স্কোরবোর্ডে জমা করেন ৬৭ রান।
সিলেটের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেছেন মাশরাফী। যদিও চার ওভারে ৪৮ রান দেন তিনি। এছাড়া একটি করে উইকেট পান ইমাদ ওয়াসিম, থিসারা পেরেরা। তবে কেউই বাঁধা হতে পারেনি বরিশালের বড় সংগ্রহের কাছে। সিলেটকে ১৯৫ রানের বড় লক্ষ্য বেঁধে দিতে সক্ষম হয় সাকিব, মিরাজরা।
বরিশালের বেঁধে দেওয়া বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী সিলেট। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে রানআউট হন কলিন অ্যাকারম্যান৷ এরপর দ্বিতীয় উইকেট পড়ে ১০২ রানে। নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয় মিলে দলকে চালকের আসনে বসান। রান আউটের দুর্ভাগ্যে ৪০ বলে ৪৮ রান করে আউট হন শান্ত। করিম জান্নাতের বলে লেগ বিফোর হওয়ার আগে হৃদয় খেলেন ৩৪ বলে ৫৫ রানের ঝকমকে ইনিংস।
হৃদয়ের আউটের পর সিলেটের রানের চাকা সচল রাখেন জাকির হোসেন। চতুরাঙা ডি সিলভার বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ১৮ বলে ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন জাকির। ইনিংসটি সাজান ৪ চার ও ৩ ছয়ের মারে। জাকিরের আউটের পর যেটুকু কাজ ছিল মুশফিকুর রহিম ও থিসারা পেরেরা মিলে শেষ করে আসেন। ৯ বলে ২০ রানে পেরেরা ও ১১ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক। ১৯ ওভারে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৬ রান করে জয়ের নাগাল পেয়ে যায় সিলেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বরিশাল : ২০ ওভারে ১৯৪/৭। (ডি সিলভা ৩৬, এনামুল ২৯, ইফতেখার ১৩, সাকিব ৬৭, মাহমুদউল্লাহ ১৯, হায়দার ৩, মিরাজ ১, জান্নাত ১৭* ; মাশরাফী ৪-০-৪৮-৩, আমির ৪-০-৩১-০, ইমাদ ৪-০-২৭-১, রেজাউর ৪-০-৩২-১, পেরেরা ৩-০-৩৮-১, কলিন ১-০-১৬-১)।
সিলেট : ১৯ ওভারে ১৯৬/৪। (কলিন ১, শান্ত ৪৮, হৃদয় ৫৫, মুশফিক ২৩*, জাকির ৪৩, পেরেরা ২০*; সাকিব ৪-০-৩১-০, ইবাদত ২-০-৩০-০, মিরাজ ৩-০-৩৫-০, খালেদ ৩-০-৩৫-০, ডি সিলভা ২-০-১৪-১, কামরুল ২-০-২৪-০, জান্নাত ২-০-১৫-১, ইফতেখার ১-০-৮-০)।
ফল : সিলেট স্ট্রাইকার্স ৬ উইকেটে জয়ী।