কুমিল্লার পাঁচে পাঁচ, নাকি বরিশালের আরাধ্য শিরোপায় চুমু আঁকা? আধিপত্য ধরে রাখবে কি কুমিল্লা, ঘরে তুলবে হ্যাটট্রিক শিরোপা, নাকি তিন-তিনবারের দুঃখ ঘুচিয়ে শিরোপা উঠবে বরিশালের লঞ্চে? সাকিব আল হাসান যা পারেননি, তাকি পারবেন তামিম ইকবাল! নাকি লিটন দাস পেয়ে যাবেন নিজের পঞ্চম শিরোপার স্বাদ?— এমন সব প্রশ্ন যখন ঘুরপাক খাচ্ছে ক্রিকেট পাড়ায়, তখন আরো প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে কারো কারো মনের দুয়ারে; টুর্নামেন্ট-সেরা হবেন কে?
সাত দলের হয়ে খেলেছেন শতাধিক ক্রিকেটার। সুপ্ত প্রতিভাবান দেশীয়রা তো বটেই, জাতীয় দলের তারকারাও যেখানে ছড়ি ঘোরান। আর পৃথিবী চষে বেড়ানো ক্রিকেট ফেরিওয়ালারাও আসেন দলে দলে। ফলে এতো এতো তারকার ভিড়ে বিপিএল মঞ্চের সেরা ক্রিকেটার হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়!
১৯ জানুয়ারি শুরু হয় বিপিএলের দশম আসর। মোট ৪৫ ম্যাচ শেষে আজ শুক্রবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স আর ফরচুন বরিশালের মধ্যকার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ দিয়ে পর্দা নামবে এবারে বিপিএলের। স্বভাবজাত নিয়মে চ্যাম্পিয়ন খুঁজে পাবার পরে বেছে নেয়া হবে একজন ক্রিকেটারকে। যার হাতে উঠবে ‘আসর সেরা’র খেতাব।
একটা সময় গাড়ি দেয়া হতো, মোটর সাইকেলেরও দেখা মিলেছিলো। তবে কালের বিবর্তনে জৌলুস হারানো বিপিএলে এখনকার টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার মোটে ৫ লাখ টাকা। যদিও টাকা নয়, এখানে সম্মানটাই বড় হয়ে দাঁড়ায়।
আগের ৯ আসরে ৪ বারই এমন সম্মান জুটেছে সাকিব আল হাসানের ললাটে। শেষবার এই পুরস্কার জেতেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের ছাড়াও বিপিএল সেরা হয়েছেন- মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আসহার জাইদি, ক্রিস গেইল ও আন্দ্রে রাসেল। তবে এই আসরে তাদের মাঝে কেবল সাকিবই আছেন এবারের আলোচনায়।
শুরুর দিকে চোখের চোটে ভালো করতে না পারলেও মাঝপথে এসে জ্বলে উঠেন সাকিব। চলে আসেন আসর সেরা আলোচনায়৷ তবে নক আউটে প্রত্যাশিত পারফর্ম করতে না পারা আর দলকে ফাইনালে তুলতে না পারার প্রভাব পড়েছে তার ওপর। আলোচনায় থাকলেও, আসর সেরা হবার দৌড়ে একটু পিছিয়ে তিনি।
এই আসরে ১৫৮.৩৯ স্ট্রাইকরেটে ১১ ম্যাচে ২৫৫ রান করেন সাকিব। বল হাতে ৬.৩১ ইকোনমিতে নেন ১৭ উইকেট। যা আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
সাকিব পিছিয়ে যাওয়ায় আসর সেরার দৌড়ে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে তাওহীদ হৃদয় আর তামিম ইকবালের মাঝে। তামিম নেতৃত্ব দিচ্ছেন বরিশালকে, আর কুমিল্লার তুরুপের তাস হচ্ছেন হৃদয়। দুজনের দলই উঠেছে ফাইনালে, দুজনেই লড়াই করছেন আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হতেও!
১৪ ইনিংসে ১২৫.৪৮ স্ট্রাইকরেটে তামিমের রান ৪৫৩। গড় ৩৪.৮৫। বিপরীতে এক ইনিংস কম খেলে তাওহীদ হৃদয় করেছেন এখন পর্যন্ত ৪৪৭ রান। তবে তার স্ট্রাইকরেট ১৪৯.৫০ আর গড় ৪০.৬৪!
মানে বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে দুজনের মাঝে। ফলে প্রকৃত আসরে সেরা খুঁজতে হলে তাকাতে হচ্ছে ফাইনালের দিকেই। মিরপুরে আজ সন্ধ্যার ফাইনাল শেষেই নিশ্চিত হবেন আসর-সেরা। যেখানে শিরোপা জয় রাখবে নিঃসন্দেহে বড় ভূমিকা। তাছাড়া ফাইনালে দারুণ কিছু করার সুযোগ আছে দুজনের সামনেই!
খুলনা গেজেট/ টিএ