বিসিবি সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে নির্বাচন করা, আরেকটা হলো বোর্ড সভাপতি হওয়া। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বোর্ড সভাপতির এখন যে কাজ সেটি তিন ভাগে ভাগ করা যায়। একটা হচ্ছে প্রতিদিন ম্যানেজমেন্ট ঠিক রাখা। যাতে বোর্ড প্রেসিডেন্টের তেমন কিছু করার থাকে না। আরেকটা যেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হলো, টিম, ম্যানেজমেন্ট, কোচিং স্টাফদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা। যেটা আমার সময়ও ঠিক মতো হয়নি, তার আগেও হয়নি। আমি বলছি না খারাপ হয়েছে, তবে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটনা ঘটেছে। একটা জিনিস নিশ্চিত যে, ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করা অত্যন্ত জরুরি। আমি মনে করি, বোর্ড প্রেসিডেন্ট যেই হোক না কেন, তার এটা থাকলেই ভালো। কারণ একটা ম্যানেজমেন্টের টিমের সঙ্গেও সমস্যা থাকতে পারে আবার কোচিং স্টাফদের সাথেও সমস্যা থাকতে পারে। সে জন্য একজনকে দরকার। আমার মনে হচ্ছে যে, এটার জন্য উপযুক্ত হলো বোর্ড সভাপতি। কিন্তু আমি মনে করি এটা এখন গুরুত্বপূর্ণ।’
আজ বুধবার হয়ে গেল বিসিবির ১১তম বোর্ড সভা। সভায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচন থেকে শুরু করে আসন্ন বিশ্বকাপ নিয়ে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন হাজির হলেই প্রশ্ন ওঠে নির্বাচন নিয়ে। তখন তিনি জানালেন, এবারের নির্বাচন উন্মুক্ত রাখতে চাইছেন তাঁরা।
নাজমুল হাসান আরও বলেন, ‘আইসিসি সঙ্গে যোগাযোগ এবং আইসিসিতে বিসিবির অভিমতকে ঠিকমতো তুলে ধরা এবং সেটাতে আমাদের অভিমত যাতে ঠিকমতো প্রতিফলিত হয় সেই চেষ্টা করা সভাপতির দায়িত্ব। এ ছাড়া কোচ সিলেকশন, এই যে সামনে যে বিশ্বকাপ আছে, টি-টোয়েন্টি আছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আছে কোথায় হবে সেসব নিয়ে কাজ। দ্বিতীয় হচ্ছে, আগে যদি আমরা দেখি যেটা হতো বাংলাদেশ খেলা বেশি পেত না। আমরা যদি খেলা না পাই তাহলে আমরা উন্নতি করব কীভাবে। এখন এই জিনিসটা কিন্তু আপনারা এখন টের পাচ্ছেন। এ জিনিসটা থেকে বাংলাদেশ বের হয়ে আসছে। এটা এখনই শেষ করে দিলে হবে না। যারাই আসবে এটা নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রচুর কাজ করতে হবে, যাতে করে বাংলাদেশ প্রায়, বাংলাদেশের সাথে ওরা খেলতে আসে আমরাও যাতে ওখানে গিয়ে খেলার সুযোগ পাই। জোরদার করতে হবে, বাংলাদেশকে একটা গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বের হতে হবে এর জন্য ভালো খেলতে হবে। মিনিমাম র্যাঙ্কিংয়ে পাঁচে যেতে হবে।’
এরপর নির্বাচনে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে বোর্ড প্রধান বলেন, ‘আমি মনে করি এখানে নতুন কেউ যদি আসে তাহলে ভালো হয়। পরিচালক পদও ওপেন থাকবে। মানুষ যাকে পছন্দ করে সে আসুক। আমাদের গতানুগতিকভাবে যেভাবে আসছিল সেটা থেকে বের হওয়ার একটা চিন্তা ভাবনা আমি করছি। এজন্য আমি বলছি আমি বোর্ডের পরিচালকের ইলেকশন করতে পারি, সভাপতি নাও হতে পারি (হাসি)।’
এদিকে লম্বা সময় ধরে টি-টোয়েন্টিতে নেই তামিম ইকবাল। তাই আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তামিমের খেলা নিয়ে শঙ্কা জেগেছিল। সেই শঙ্কাই সত্যি হলো। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে সরে দাঁড়ালেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তবে বিশ্বকাপ না খেললেও টি-টোয়েন্টিতে ফিরবেন বলে জানিয়ে রেখেছেন তিনি।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তেমনটাই আশা করছেন। এই বিশ্বকাপে না হোক, সামনের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তামিমকে দেখতে চান বিসিবি সভাপতি।
তামিমের বিশ্বকাপ না খেলার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন নাজমুল হাসান। বিসিবিপ্রধান মনে করেন, বেশ সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তামিম।
নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমার দেখা সবচেয়ে সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিক, সেরা অধিনায়ক মাশরাফী। বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। তামিম যদি দলে আসে, সে সব সময় প্রথম পছন্দ, বাদ দেওয়ার প্রশ্ন আসে না। তবে এই সিদ্ধান্ত তার ব্যক্তিগত। সে আমাদের প্রথম পছন্দ। এই বিশ্বকাপ দলেও ছিল। কিন্তু নিজের ঘোষণার পর এই স্কোয়াডে সে থাকবে না। আজ আমাদের যে দল দিয়েছিল, সেখানেও সে ছিল। কিন্তু সে যেহেতু প্রত্যাহার করে নিয়েছে এখন থাকবে না। সামনে আরও বিশ্বকাপ আছে, সে আবার খেলবে আশা করি। সিদ্ধান্তটা সহজ নয়, এটা সাহসী সিদ্ধান্ত অথচ সবাই বিশ্বকাপ খেলতে চায়।’
তামিমের সিদ্ধান্তকে পূর্ণ সমর্থন করে নাজমুল হাসান বলেন, ‘একটা সমস্যা, তামিম অনেক দিন টি–টোয়েন্টি খেলছে না। নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়েতে টি–টোয়েন্টি খেলেনি। ওর ইনজুরি থাকায় খেলেনি। অনেকে প্রশ্ন করে, ও তাহলে ওয়ানডে খেলল কেন? তামিম ওয়ানডে অধিনায়ক, ঝুঁকি নিয়ে খেলেছে। সে এমনই দায়িত্ব থাকলে সিরিয়াসলি খেলে। এখনকার দলটা ভালো খেলছে। হতে পারে আমাদের হোম কন্ডিশনে। যখন দল ভালো খেলে, খুব একটা দল পরিবর্তন করতে চাই না। সব চিন্তা করে, ও যেটা বলেছে, সে ভালো কথাই বলেছে। ও জানে স্কোয়াডে থাকলে সে খেলবেই। সে মনে করেছে এটা হলে অনেকের জন্য অবিচার হতে পারে। ও যেহেতু লম্বা সময় খেলছে না, এই চোট থেকে ফিরে বিশ্বকাপ খেলাটা কঠিন।’