দেশের বৃহত্তম আইনজীবী সমিতি ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী সমর্থক জাতীয়তাবাদী ঐক্য প্যানেলের (নীল প্যানেল) প্রার্থীরা।
বৃহষ্পতিবার সকালে বিনপির কেন্দ্রীয় নেতা এবং খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম আমাদের আন্দোলনের পর এবার তারা ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষা পণ্ড করে ভোটের মুড়ি বই, ব্যালট পেপার, স্লিপ নিয়ে তারা সঙ্কট তৈরি করেছে। সে কারণে আমরা ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি। আমাদের কেউ এখন ভোটের মাঠে নেই।”
বুধবার প্রথম দিনের ভোট গ্রহণ শেষে রাত ১০টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন নীল প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী খোরশেদ মিয়া আলম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
তারা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনেন এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানান। ভোটারদের ভোটদানে থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান তারা।
বৃহস্পতিবার সকালে আদালতপাড়া ঘুরে দেখা যায়, নীল প্যানেলের কোনো প্রার্থী, সমর্থক, প্রচারকারী কেউ ভোটের লাইনে নেই। নীল প্যানেলের প্রচার কেন্দ্র গুটিয়ে ফেলা হয়েছে। শুধু সাদা ক্যাপ পরা (আওয়ামী লীগ সমর্থক বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সাদা প্যানেলের অনুসারী) আইনজীবীরা লাইনে আছেন ।
ঢাকা বারে চলছে নির্বাচন
বিএনপিপন্থি নীল প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, প্রথম দিনে ১৪টি কাউন্টারে ভোট গ্রহণ হয়েছে। যেখানে চার হাজার ২৩ ভোট। কিন্তু কিছুক্ষণ পর পাঁচ হাজার ২৮টি ভোট গ্রহণ হয়েছে বলে ঘোষণা দেয়। পরে কোন কাউন্টারে কত ভোট হয়েছে হিসাব নিয়ে দেখা গেছে চার হাজার ২৩ ভোট হয়েছে।
“প্রথম দিনে এক হাজার পাঁচ ভোট কারচুপি করেছে। আমরা এসব জানতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে বলি যে আজকের বুধবারের ভোটের মুড়ি ও স্লিপের হিসাবে ব্যবধান কেন? প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুল্লাহ আবু বলেন তারা এর উত্তর দিতে ‘বাধ্য নন’। আবদুল্লাহ আবু আমাদের বলেন, দুই দিনের (বুধ ও বৃহস্পতিবার) ভোট শেষ হলে এসবের উত্তর পাওয়া যাবে।
“আমরা দেখেছি গতবারেও তারা এ কাজ করেছে। নির্বাচন কমিশনের প্রধানসহ ১১৩ জনের মধ্যে আমাদের মনেনীত সদস্য রাখা হয় মাত্র ৩২ জনকে। অথচ কয়েক সেশন আগে নির্বাচন কমিশনে দুই পক্ষেরই শতকরা ৫০ ভাগ, অর্থাৎ অর্ধেক করে সদস্য রাখা হত। তারা হেরে যাওয়ার ভয়ে জাতীয় নির্বাচনের মত অপকর্ম শুরু করেছে। সে কারণে আমরা ভোট বর্জন করেছি।“
ঢাকা বারের ভোট বর্জন বিএনপিপন্থি নীল প্যানেলের
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি আবদুল্লাহ আবু বলেন, “তারাই নির্বাচনে হেরে যাওয়ার আভাস পেয়ে ভোটে বজর্ন করেছে। এ সব নালিশের কোনো বাস্তবতা নেই। ভোট চলছে চলবে।”
এ নির্বাচনের ভোট শুরু হয় বুধবার। বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত তা চলার কথা। নির্বাচনে ভোট দিতে ভোটার হয়েছেন ঢাকা বারের ২৭ হাজার ৯২৪ সদস্যের মধ্যে ১৯ হাজার ৬২৯ জন।
নির্বাচনে সমিতির ২৩টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছিলেন দুই প্যানেলের ৪৬ জন।
আওয়ামী লীগ সমর্থক সাদা প্যানেলে সভাপতি পদে মিজানুর রহমান মামুন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে খন্দকার গোলাম কিবরিয়া জুবায়ের পার্থী হয়েছেন।
খুলনা গেজেট/ বি এম এস