রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১ নারীসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় দগ্ধ হয়েছেন তার স্বামী আসিফ মো. খান (৩০)। এ ছাড়া আরও কয়েকজন দগ্ধ হয়েছেন। বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গুরুতর কয়েকজনকে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর আগে কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছানোর অল্প কিছুক্ষণ আগে গোপীবাগ কাঁচাবাজারের সামনে ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাতে এ ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসের
মিডিয়া অফিসার আনোয়ার ইসলাম জানান, মোট ৪টি বগিতে আগুন লেগেছে। ৯টা ৫ মিনিটে আগুনের সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট কাজ করছে। আগুন ছড়িয়ে পড়ে ইঞ্জিনসহ বেশ কয়েকটি বগিতে। আগুন নেভাতে সাহায্য করা ও নিরাপত্তা জোরদার করতে ঘটনাস্থলে চার প্লাটুন আনসার মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।
জানা যায়, ট্রেনটি ভারত থেকে ঢাকায় ফিরছিল। গোপীবাগে পৌঁছালে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান বলেন, রাত ৯টার দিকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করেছে।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস (৭৯৫) দুপুর ১টায় বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসে। ট্রেনটির ঢাকায় পৌঁছার কথা রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে। এর মধ্যে গোপীবাগে পৌঁছালে আগুনের ঘটনা ঘটে।
বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনে পুড়ে জানালায় ঝুলে ছিলেন এক যাত্রী। গোপীবাগ এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ ট্রেনের একটি বগিতে আগুন ধরে যায়। মুহূর্তে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি শুরু করেন যাত্রীরা। এরমধ্যে হতভাগ্য এক যাত্রী পুড়ে মারা যান।
ট্রেন থেকে নেমে আসা এক যাত্রী জানান, আমরা ওই যাত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। এক পর্যায়ে সে একটি জানালার পাশে এসে অক্সিজেন নিয়ে শক্তি সংগ্রহ করে বের হওয়ার চেষ্টা চালায়। আমরাও তাকে বের করে নিয়ে আসতে বাইরে থেকে টানতে থাকি। তবে তার একটি পা দগ্ধ হওয়ায় সে পরিপূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করতে পারেনি। এছাড়া ট্রেনের জানালাটাও অর্ধেক বন্ধ থাকায়, তাকে আর বের করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় জানালায় অর্ধেক বের হওয়া অবস্থায় হাজারো মানুষের সামনে পুড়ে জানালাই ঝুলে রইলেন ওই যাত্রী।
এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর ভোরে ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনে এক নারী ও তাঁর শিশু সন্তানসহ চারজন দগ্ধ হয়ে মারা যান। ওই ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলেছিলেন, যাত্রীবেশে ট্রেনে উঠে আগুন দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা।