বিএনপির তিন সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সমন্বয়ে বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশ আজ শনিবার ( ২২ জুলাই ) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ঢাকার এই তারুণ্য সমাবেশে ব্যাপক শোডাউন দেখাতে চায় বিএনপি। সমাবেশে ব্যাপক উপস্থিতির মাধ্যমে বিএনপি আবারও সরকারবিরোধী বার্তা স্পষ্ট করতে চায়। সমাবেশ থেকে বিএনপি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলেও জানা গেছে।
ঢাকা, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগ মিলেই এই সমাবেশ। ইতোমধ্যে সমাবেশে পুলিশের অনুমতিও মিলেছে। সমাবেশে যোগ দিতে অনেক নেতাকর্মী দু’একদিন আগেই ঢাকায় চলে এসেছেন। দলের তারুণ্যনির্ভর এই তিন সংগঠনের বাইরে বিএনপির উদীয়মান নেতাকর্মীরাও সমাবেশে উপস্থিত হবেন।
বিএনপি ও আয়োজক সংগঠনের নেতারা বলছেন, নতুন ভোটাররা গত ১৫ বছরে ভোট দিতে পারেননি। তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। অনেকে আবার চাকরি বঞ্চিত। কেউ কেউ মামলার ঘানি টানছেন। তাই এই সমাবেশে যোগদানে তাদের ব্যাপক উদ্দীপনা রয়েছে।
জুন মাসের প্রথমদিকে নতুন ভোটার আর তরুণদের কাছে টানতে ‘তারুণ্য সমাবেশে’র ঘোষণা দেয় বিএনপি। দলটির অঙ্গ সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সমন্বয়ে এই সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে দলটির নীতি নির্ধারণী ফোরাম। সংগঠন তিনটির পক্ষ থেকে পরে দিনক্ষণ ও তারিখ ঘোষণা করা হয়।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ ২২ জুলাই ঢাকায় সমাবেশ করছে। এরই মধ্যে ঢাকার বাইরের সব কয়টি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনেকটাই শান্তিপূর্ণভাবে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসব সমাবেশের উপস্থিতি ছিল বেশ নজরকাড়া। এবার ঢাকার সমাবেশে সফলভাবে সম্পন্ন করতে চায় দলটি।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুপুরে সমাবেশের আনষ্ঠানিকতা শুরুর কথা। ঢাকা বিভাগের সব জেলা থেকে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দলের নেতারা গতকালও দিনভর কাজ করেছেন। নেতারা বলছেন, সমাবেশের দিন অর্থাৎ আজ সকাল থেকেই অঘোষিতভাবে রাজধানীর প্রবেশ মুখ নানা কারণে বন্ধ করে দিতে পারে প্রশাসন। তাই রাতের মধ্যেই বড় অংশের নেতাকর্মীকে ঢাকায় প্রবেশের নির্দেশ দেন দলের নেতারা।
এছাড়া আশপাশ থেকে যারা যানবহন বন্ধ করে দিলেও হেঁটে আসতে পারবেন তাদের খুব ভোরে সমাবেশস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে। অতীত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা জনসমাবেশে উপস্থিতি নিশ্চিতে কৌশল নির্ধারণ করেছেন।
শুক্রবার বিএনপির পক্ষ থেকে তারুণ্য সমাবেশের অবস্থান তুলে ধরতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ।
এ সময় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু বলেন, বঞ্চিত তরুণদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তারুণ্যের সমাবেশ। তরুণ সমাজ প্রস্তুত, জনগণের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তারা এখন মুক্তি চায়। এখন আর কোনো প্রতিবাদ নয়, সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, ভোট ও চাকরি থেকে বঞ্চিত তরুণদের নিয়ে আমাদের তারুণ্যের সমাবেশ। এটি বিএনপির আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার আন্দোলন নয়। জনগণের ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আন্দোলন করছে বিএনপি। তারুণ্যের সমাবেশের মাধ্যমে তরুণ সমাজ উজ্জীবিত হচ্ছে। তাদের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। তারা বারবার জীবন দিয়ে প্রমাণ করছে তারা শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন যান জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীসহ নেতারা। এ সময় এস এম জিলানী বলেন, ঢাকার তারুণ্যের সমাবেশে নতুন জাগরণ ও গণজোয়ার সৃষ্টি হবে। তারুণ্যের নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে। তরুণদের নিয়ে রাজপথে সরকারকে রুখে দেবো।
এদিকে, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী গণমাধ্যমে বলেন, তারুণ্যের সমাবেশ থেকে আন্দোলনের নতুন বার্তা আসবে।
খুলনা গেজেট/ বিএম শহিদ