বিশ্বব্যাপী তাণ্ডব চালানো মহামারি করোনাভাইরাসে ২৪ ঘণ্টায় দেশে ফের বেড়েছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার করোনা শনাক্ত সর্বোচ্চ ছিল রাজশাহীতে। এরপরেই খুলনা বিভাগ। এর আগের দিন বুধবার করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুতে শীর্ষে ছিল খুলনা বিভাগ। এরপরেই ছিল রাজশাহী। গত কয়েকদিনের করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণে করে দেখা যায় খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে করোনা সংক্রমণ উর্দ্ধমুখী। যা ঢাকাকে টপকে গেছে।
ঢাকার বাইরে দক্ষিণ-পশ্চিমের বিভাগ খুলনা যেন এখন করোনার হটস্পট। প্রতিনিয়ত বাড়ছে সংক্রমণ। করোনা হাসপাতালে সামাল দেয়া যাচ্ছে না রোগীর চাপ। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী তো আছেনই। মেঝেতেও পাতা হয়েছে বিছানা। তারপরও আসছেন নতুন করোনা রোগী। তাই খুলনায় মেডিকেলে বেড খালি সাপেক্ষে রোগী ভর্তি করা হচ্ছে। সংকট আছে আনুষঙ্গিক সরঞ্জামের। তবে বিভাগীয় শহর বাদে অন্য কোথাও নেই ডেডিকেটেড হাসপাতাল। জেলায় ওয়ার্ড কিংবা করোনা ইউনিটে নামমাত্র চিকিৎসা চলায় বেশিরভাগ রোগী আসেন খুলনার করোনা হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ১০০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি ছিল ১৩০ জন। বেড বাড়ানোর কথা থাকলেও তাতে অগ্রগতি নেই।
অপরদিকে উত্তর-পশ্চিমের বিভাগ রাজশাহীতে সংক্রমণ বাড়লেও বগুড়া ছাড়া কোথাও নেই ডেডিকেটেড হাসপাতাল। চিকিৎসা চলে করোনা ওয়ার্ড কিংবা ইউনিটে। রাজশাহী মেডিকেলে বেড ও রোগীর চাপ সমান। প্রতিদিনই বাড়ছে প্রাণহানি। আরও দুটি হাসপাতাল প্রস্তুতের কাজ চলছে বলে জানান সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
এছাড়া বিভিন্ন স্থানে চলা লকডাউন ও বিধিনিষেধ মানছেন না বেশিরভাগ মানুষ। ফলে বাড়ছে ঝুঁকি; বাড়ছে উদ্বেগ।
করোনা সংক্রমণরোধে খুলনায় এক সপ্তাহের বিধিনিষেধ শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার (১০ জুন) মধ্যরাতে। শুক্রবার জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
রাজশাহীতে আজ শুক্রবার (১১ জুন) থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হচ্ছে। একইসঙ্গে রাজশাহী থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মারা গেছেন আরও ৪০ জন, আগের দিন মারা গিয়েছিল ৩৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা পজিটিভ হয়েছেন আরও ২ হাজার ৫৭৬ জন, যা আগের দিনের চেয়েও বেশি। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছিল দুই হাজার ৫৩৭ জন।
এ সময় শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক রাজশাহী বিভাগে। সেখানে ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫ হাজার ১১০টি, তার মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন ৮১৫ জন। এরপরে রয়েছে খুলনা বিভাগ, যেখানে এক হাজার ৪৮৫টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ৫৭৮ জন।
একই সময়ে ঢাকা বিভাগে পরীক্ষা হওয়া আট হাজার ৬৮৭ জনের মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন ৫১৩ জন। এরপর রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। সেখানে দুই হাজার ৪০৩টি পরীক্ষা করে শনাক্ত হয়েছেন ৩৩৭ জন। এরপর রংপুর বিভাগে পরীক্ষা হওয়া ৪১৬ জনের মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন ১৩০ জন। সিলেট বিভাগে ৫২৪টি নমুনার বিপরীতে শনাক্ত হয়েছেন ৯২ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৪৪টি পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত হয়েছেন ৬২ জন আর বরিশাল বিভাগে ২৬৮টি পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত হয়েছেন ৪৯ জন।
খুলনা গেজেট/এমএম