এবছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিদিনই প্রাণহানির তালিকায় নতুন নতুন নাম যোগ হওয়ায় স্বজনদের আহাজারি বাড়ছে। ঢাকার বাইরেই এখন ডেঙ্গু রোগীর দাপট বেশি। ফলে বিভিন্ন জেলার ডেঙ্গুর গুরুতর রোগীরা ছুটে আসছেন ঢাকার হাসপাতালগুলোতে।
একদিনে আরও ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। গত ২৩ দিনে মৃত্যু ২৫৫ জন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০৬ জনে। দেশে ইতিমধ্যে ডেঙ্গু রোগী মৃত্যু ও শনাক্তে পুরনো রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৭০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরের এ পর্যন্ত ১ লাখ ৬ হাজার ৪২৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর মধ্যে রাজধানীতে ৫১ হাজার ২৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫৫ হাজার ৪০২ জন। মৃত ৫০৬ জনের মধ্যে নারী ২৮৮ জন এবং পুরুষ ২১৮ জন। মোট মৃত্যুর মধ্যে ঢাকার বাইরে মারা গেছেন ১৩২ জন এবং রাজধানীতে ৩৭৪ জন। আজ সারা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ২ হাজার ৭০ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮৫৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৩১২ জন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন ২ হাজার ৭০ জনসহ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৮২৫ জনে। ঢাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩ হাজার ৫৮০ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪ হাজার ২৪৫ জন। চলতি বছরের এ পর্যন্ত ১ লাখ ৬ হাজার ৪২৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তি রোগীর মধ্যে পুরুষ আক্রান্ত ৬৬ হাজার ৩৮৯ জন এবং নারী ৪০ হাজার ৪০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯৮ হাজার ৯৮ জন।
অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত ১৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৩ জন, মার্চে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১১ জন এবং এপ্রিলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪৩ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫৬ জন এবং মারা গেছেন ৩৪ জন। জুলাইতে শনাক্ত ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন এবং মারা গেছেন ২০৪ জন। আগস্টের ২৩ দিনে ৫৪ হাজার ৫৯৭ জন শনাক্ত এবং প্রাণহানি ২৫৫ জনের। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি হবে। কারণ অনেক ডেঙ্গু রোগী বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন, তাদের হিসাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খাতায় নেই।
খুলনা গেজেট/ টিএ