খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় ১৯৭১ সালের এই দিনে। নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে আজ সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) ডুমুরিয়া মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সকালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সকাল ১০টায় মুক্তিযোদ্ধা জনতার সমন্বয়ে বিজয় শোভাযাত্রা বের করা হয়। এরপর উপজেলা চত্বরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক আলোচনা সভা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আবদুল ওয়াদুদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান শারমিনা পারভীন রুমা।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক, বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী নাজিম উদ্দীন ও চন্দ্রকান্ত ফৌজদার প্রমূখ।
স্মৃতিচারণ মূলক বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় ডুমুরিয়ার চুকনগরে ঘটে ভয়াবহ ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। যা দেশের সবচেয়ে বড় গণহত্যা বলে জানা যায়। ১৯৭১ সালে ১৩ ডিসেম্বরে ডুমুরিয়াকে শত্রুমুক্ত এলাকা ঘোষণা করি আমরা। অথচ দিনটির কথা অনেকেই জানেন না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এ অবিচ্ছেদ্য ঘটনা নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন দেখি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শত্রুমুক্ত দিবস পালিত হচ্ছে। তখন নিজেকে খুব অপরাধী মনে হয়। এখন বয়স বেড়েছে। প্রকৃতির নিয়ম অনুয়ায়ী বেশিদিন হয়তো বাচঁবো না। তাই নিজের কর্তব্য ও দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এবারই প্রথম দিবসটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ এর সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ রিয়াজুল ইসলাম,সাধরণ সম্পাদক মোঃ মহাব্বত হোসেন মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম লিপু, সহসভাপতি উত্তম মন্ডল, রাকিবুজ্জামান পিন্টু ও মোঃ আমিনুল ইসলাম,দপ্তর সম্পাদক শাহরিয়ার আলম খান,অর্থ সম্পাদক সোহাগ আলম বাপ্পি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়দেব কুমার সাহা,বিপ্লব কুমার এবং তপন তরফদার কমলেশ মন্ডল, মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক রিক্তা রায়, সদস্য মোড়ল আক্তারুজ্জামান বাবলু, দেবব্রত মন্ডল ও অশোক দেবনাথ প্রমূখ।
প্রসঙ্গত, দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর। কিন্তু ২০১১ সালের আগে ডুমুরিয়ায় দিনটি পালিত হয়নি। ২০১১সাল থেকে মুক্তিযুদ্ধ কমান্ডার নুরুল ইসলাম মানিক দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেন। সেই থেকে প্রতিবছর আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই