আলোচিত সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদের ১০০ বিঘা জমি, ৫টি ভাড়ি ও ২টি ফ্ল্যাট জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তার নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এসব হিসাবে হারুনের জমা রয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার ৪৬৮ টাকা। পাশাপাশি তার ভাই শাহরিয়ারের ৩০ বিঘা জমি জব্দ, ১১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ ও ৩টি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন পৃথক দুটি আবেদনে হারুন ও তার ভাইয়ের স্থাবর সম্পদ জব্দ ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন। পরে আদালত শুনানি নিয়ে আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
জব্দ ও অবরুদ্ধ হওয়া সম্পদের মধ্যে- হারুন অর রশিদের নামে ঢাকার উত্তরায় ৭.৪৫ কাঠা জমিতে ৩ কোটি টাকার মূল্যের একটি ইমারত রয়েছে। এ ছাড়া গুলশানে ১০.৩৬ শতক জমিতে ৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার আরেকটি ইমারত রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার কুড়িলে সেমিপাকা একটি টিনশেড বাড়ি, খিলক্ষেতে ১ তলা একটি দালান ও সেমিপাকা আরেকটি টিনের বাড়ি রয়েছে হারুনের নামে। এসব ভবন জব্দ করার আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়া হারুনের নামে উত্তরায় ১০ নম্বর সেক্টরে ৭ তলা ভবনে ২য় তলায় একটি ফ্ল্যাট ও জোয়ার সাহারায় ৬ তলা ভবনের ৬ তলায় আরেকটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এই দুই ফ্ল্যাটসহ আশিয়ান সিটিতে হারুনের নামে ৫ কাঠার একটি প্লট জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
অন্যদিকে হারুনের নামে কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার ও নারায়ণগঞ্জে ৯৯ দশমিক ১৮ বিঘা জমি জব্দ করা হয়েছে। এর ভেতর শুধু কিশোরগঞ্জেই হারুনের নামে ৯১.৩২ বিঘা জমি রয়েছে।
এ ছাড়া তার ভাই শাহারিয়ারের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থিত ৩০ বিঘা জমি জব্দ ও ১১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি শাহারিয়ারের তিনটি কোম্পানির শেয়ারও অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
ডিবি হারুনের আবেদনে বলা হয়, আসামি মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ ১৭ কোটি ৫১ লাখ ১৭ হাজার টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রাখার অভিযোগে মামলা হয়েছে। তদন্তকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, আসামি তার মালিকানাধীন ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। যা করতে পারলে এ মামলা আদালত কর্তৃক বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় থেকে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে স্থাবর সম্পত্তিগুলো জব্দ ও অস্থাবর সম্পত্তিগুলো অবরুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন।
শাহারিয়ারের আবেদনে বলা হয়েছে, আসামি এবিএম শাহারিয়ার ১২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬০৪ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলে রেখেছেন। আসামি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবিপ্রধানের পদসহ বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তাকে অপরাধে প্রত্যক্ষ সহায়তা করায় মামলা হয়েছে। তদন্তকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, আসামি শাহারিয়ার তার মালিকানাধীন ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। যা করতে পারলে ওই মামলায় আদালত কর্তৃক বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় থেকে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে।সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে স্থাবর সম্পত্তিগুলো জব্দ ও অস্থাবর সম্পত্তিগুলো অবরুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন। এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
খুলনা গেজেট/ টিএ