সাতক্ষীরা মেডিকেলের ৬ষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. অপরাজিতা আখির আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনাকারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে সামেক এর শিক্ষার্থীরা । রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরে মেডিকেল কলেজের সামনে সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে ।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ইন্টার্ন চিকিৎসক প্রিতম দাস, ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান কবির, সামিয়ান বিন ইমু, সাহারা সামান্তা রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের গাইনী বিভাগের প্রধান ডা. শংকর কুমার ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন তার ছেলের স্ত্রী ডা. অপরাজিতা আখি। স্বামীর পরিবারের সদস্যদের করা মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে সে নিজে আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে ডা. শংকর কুমারকে ইডুকেশন কো-অর্ডিনেটর ও সামেক হাসপাতালের গাইনী বিভাগের প্রধান এর পদ থেকে অসারণের দাবি করেন বক্তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী রায়হান কবির বলেন, যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের শাস্তির দাবি জানাই। একই সাথে সামেকের গাইনি বিভাগের প্রধান ও একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর ডাক্তার শংকর কুমার বিশ্বাসকে অপসারণ করতে হবে। আমাদের দাবি না মানলে আমরা ক্লাসে ফিরব না।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা সামেকের গাইনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও একাডেমিক কো-অর্ডিনেটরের রুমের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষ প্রদর্শন করে। এ সময়ে স্লোগানের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস।
প্রসঙ্গত, ৬ মাস আগে সাতক্ষীরা মেডিকেলের ৬ষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. অপরাজিতা আখির সাথে বিয়ে হয় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের গাইনী বিভাগের প্রধান ডা. শংকর কুমার বিশ্বাসের ছেলে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ইউরোলজি বিভাগে এম এস কোর্সে অধ্যায়নরত ডা. রাহুল দেব বিশ্বাসের। অপরাজিতা আখির বাবার বাড়ি যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া এলাকায়। বিয়ের পর থেকে স্বামীর পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ‘শুকনো মেয়ে’ সহ বিভিন্ন অপমানসূচক কথা শুনতে হতো আখির। মাসখানেক আগে তিনি সাতক্ষীরা থেকে নওয়াপাড়ায় চলে যান। গত বুধবার তিনি ডা. রাহুল দেব বিশ্বাসের কাছ থেকে ডিভোর্স লেটার পান। এসব কারণে শুক্রবার রাতে তিনি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেন বলে সাতক্ষীরা মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে আখির শশুর অধ্যাপক ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস জানান, মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেয়ে আখির মরদেহ নিয়ে সৎকার করি। আখি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন। তাছাড়া তার মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় বা অন্য কোথাও কোন অভিযোগ করা হয়নি।
খুলনা গেজেট/এএজে