ওআরএস হচ্ছে ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট। যাকে খাওয়ার স্যালাইন বা ওরস্যালাইন বলে জানি আমরা। গ্রীষ্মের এই সময় প্রতিদিনই রেকর্ড গড়ছে তাপমাত্রা। আর এই তীব্র তাপমাত্রায় অধিকাংশ মানুষই পানিশূন্যতা কাটিয়ে উঠার জন্য সেলাইন প্যান করেন। এতে যেমন পানিশূন্যতা দূর হয়, একইভাবে শরীরের জ্বালাপোড়া ভাবও দূর হয়। কিন্তু সমস্যা ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়ে।
ডায়াবেটিস রোগীদের অনেকেই এই গরমের সময় নিয়মিত স্যালাইন পান করছেন। কিন্তু কেউ কেউ আবার ডায়াবেটিস রোগীদের স্যালাইন পান নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। এ নিয়ে নানা মত রয়েছে। ডায়াবেটিস রোগীদের স্যালাইন পান নিয়ে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট মেডিসিন এবং ডায়াবিটিস বিশেষজ্ঞ ডা. আশিস মিত্র। এবার তাহলে এই চিকিৎসকের ভাষ্য অনুযায়ী এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
ওআরএসের গুণাগুণ: চারটি উপাদান দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে ওআরএস। ১. সোডিয়াম ক্লোরাইড, ২. ট্রাইসোডিয়াম সাইট্রেট, ডিহাইড্রেট, ৩. পটাশিয়াম ক্লোরাইড ও ৪. গ্লুকোজ। এসব উপাদান শরীরে ইলেকট্রোলাইটসের সমতা ফেরানোয় খুব উপকারী।
ডায়াবেটিস থাকলে কি ওআরএস পান করা যাবে: তীব্র গরমে প্রায় সবাই ঘামে ভিজে যায়। এ কারণে শরীর থেকে অনেক পানি ও ইলেকট্রোলাইটস নিঃসরণ হয়। এ জন্য শরীরে পানিশূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইটসের ব্যালেন্স ফেরানোর জন্য ওআরএস পান করতে হবে। কিন্তু ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা গরমের সময় দিনে একটির বেশি কখনো পান করবেন না। এতে সুগার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ডায়রিয়ায় যত খুশি তত: গরমের সময় ডায়রিয়া ও বমির প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। এমনকী ডায়াবেটিস রোগীরাও এসব সমস্যার মুখে পড়েন। এ সময় সুস্থ হওয়ার জন্য ওআরএস খুবই কার্যকরী। এ জন্য গরমে বমি, পায়খানা হলে ওআরএস একাধিকবার পান করতে পারেন। এতে সুগার বাড়ার খুব বেশি সম্ভাবনা নেই।
অন্যান্য পানীয়: শুধু ওআরএস পান করলেই হবে না। পাশাপাশি ডাবের পানি, স্যুপ, ফলের রসও পান করতে হবে। তবেই ভালো উপকার পাওয়া যাবে। আর গরমের সময় দিনে প্রায় চার লিটার পানি পান করতে হবে। তবে যাদের কিডনি বা হার্ট ফেলিওরজনিত সমস্যা রয়েছে, তারা হঠাৎ করেই পানি পানের পরিমাণ বাড়াবেন না। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
যেসব ক্ষেত্রে সতর্কতা: গরমের সময় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাইরে বের না হওয়া ভালো। খুব প্রয়োজন হলে হালকা সুতির জামা-কাপড় পরে বের হতে পারেন। মাথায় ছাতা বা টুপি রাখার চেষ্টা করুন। যদি মাথা ঘুরে, শরীর হঠাৎ বেশি গরম হয়ে যায়, খুব ঘাম হয়, অস্বস্তিবোধ লাগে, তাহলে ছায়ার নিচে বসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
খুলনা গেজেট/এনএম