স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, খুলনা বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্যসেবার মান সন্তোষজনক, তবে এটাকে আরো ভালো করতে হবে। দেশের দরিদ্র মানুষ স্বাস্থ্যসেবার জন্য সরকারি হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল। তাই ডাক্তারদের কর্মক্ষেত্রে রোগীদের প্রতি মানবিক আবেগ থাকতে হবে। খুলনার শহিদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে যে ডায়ালাইসিস সেবা ৪০০ টাকায় পাওয়া যায় সেই একই সেবা বেসরকারি হাসপাতালে পেতে মানুষকে প্রায় দশগুণ টাকা খরচ করতে হয়।
বুধবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে খুলনা সিটি ইন হোটেলে খুলনার স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত সকল পরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক, সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, সরকার সকল জেলা হাসপাতালে ১০ শয্যার ডায়ালাইসিস ইউনিট ও ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিট স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন। করোনাকালে দেশের ১২০ টি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। দেশে চলমান সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির সফলতা ৯৮ শতাংশের বেশি। দেশের জেলা-উপজেলা হাসপাতালগুলোর শতভাগ বেডে রোগী ভর্তি থাকছে যা দেশের স্বাস্থ্যসেবার ওপর মানুষের আস্থার বহিঃপ্রকাশ।
তিনি আরো বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলো সবসময় পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় রোগ নির্ণয়ে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ভালো থাকলে রোগীরা ভালো সেবা পাবেন। রোগীর চিকিৎসা ব্যয় কমাতে রোগ নির্ণয়ের সকল পরীক্ষা যথাসম্ভব সরকারি হাসপাতালে করানোর চেষ্টা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্যখাতের প্রতি সব সময় নজর রাখেন। তাঁর চেষ্টায় করোনাকালে দেশে চিকিৎসা সেবা চালু থেকেছে। করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুহার সীমিত রাখা সম্ভব হয়েছে। দেশে কোভিড ভ্যাক্সিনের কাভারেজ ৮০ শতাংশের বেশি অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু: আনোয়র হোসেন হাওলাদার ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। এতে স্বাগত জানান খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিচালক ডাঃ মোঃ মনজুরুল মুরশিদ।
আট বিভাগে নির্মাণ হবে আধুনিক হাসপাতাল
এদিন সকালে খুলনার শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসা সেবা বাড়ানোর লক্ষে দেশের আট বিভাগে নতুন ৮টি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ হবে। হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৪ হাজার শয্যা থাকবে। হাসপাতালগুলো নির্মান হলে দেশের মানুষকে আর বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে না।
দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় জনবল ও আধুনিক যন্ত্রপাতির সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, জনবলের ঘাটতি থাকলে চিকিৎসা সেবায়ও কিছুটা ঘাটতি হতে পারে, তবে আমাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই।
দেশে ডেঙ্গু রোগী বাড়ার কথা স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার যথেষ্ট ব্যবস্থা করা হয়েছে। শয্যা বরাদ্দ আছে, ওষুধ আছে, চিকিৎসার জন্য যা প্রয়োজন সব-ই আছে।
খুলনা গেজেট/এমএম