হেমন্তের সময়টাতে কখনো গরম আবার কখনো ঠাণ্ডা আবহাওয়াতে সর্দি-কাশি, বুকে শ্লেষ্মা বা কফ জমার সমস্যা বাড়তে শুরু করেছে ঘরে ঘরে। বর্ষার স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া বিদায় না নিতেই, শীতের আগমনের সময়টাতে সর্দি-কাশির সমস্যা বেড়ে যায়। অনেকেই একে সাধারণ সমস্যা ভেবে উপেক্ষা করেন। কিন্তু এতে বিপদ আরো বাড়তে পারে। সময় মতো এই সমস্যার চিকিৎসা না করালে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে শ্বাসযন্ত্রে। তবে চাইলে ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করলে সর্দি-কাশি, বুকে কফ বা শ্লেষ্মা জমার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
গলায় খুসখুসে ভাব দূর করতে ব্যবহার করা হয় আদা চা। ২ কাপ পানিতে কিছুটা আদার কুঁচি দিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে এর সঙ্গে সামান্য মধু মিশিয়ে খেলেই গলার খুসখুসে ভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আদা-মধুর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান গলার গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া কমায় এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করে।
চায়ের পরিবর্তে উষ্ণ গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। প্রতিদিন এই মিশ্রণ পানের অভ্যাস করুন। এ ছাড়াও গ্রিন-টি পানের অভ্যাস করতে পারেন। উপকৃত হবেন।
কলা একটি নন-অ্যাসিডিক খাবার যা গলা খুসখুসে ভাব কমাতে খুবই কার্যকরী। এ ছাড়াও কলা একটি লো-গ্লাইসেমিক খাবার যা ঠাণ্ডা লাগা বা সর্দি ভাব দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন এক চামচ করে মধু খাওয়ার অভ্যাস করুন। মধু হচ্ছে উচ্চ ওষধিগুণ সম্পন্ন একটি ভেষজ তরল। নিয়মিত মধু খাওয়ার অভ্যাস আপনার শ্বাসনালীর নানা সমস্যা দূরে রাখবে এবং সেই সঙ্গে সর্দি-কাশির সমস্যাও।
গাজরকে বলা হয় সুপার ফুড। গাজরের ভিটামিন ও মিনারেলস শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এই কারণেই চট করে সর্দি-কাশির মতো রোগগুলো শরীরকে কাবু করতে পারে না। তবে ঠাণ্ডা লাগলে কাঁচা গাজর না খেয়ে সেদ্ধ করেই খাওয়া উচিত।
সর্দি-কাশির সমস্যার কারণে যদি আপনার নাক বন্ধ থাকে তাহলে সামান্য উষ্ণ গরম পানি-লবণ নাক দিয়ে টানার অভ্যাস করুন। নাকের একপাশ দিয়ে টেনে অন্য পাশ দিয়ে বের করার চেষ্টা করুন। এতে জমে থাকা মিউকাস সহজেই বের হয়ে যাবে এবং সর্দি-কাশির সমস্যাও দ্রুত কমে যাবে।
সর্দি-কাশির সমস্যা হলে প্রচুর পানি পান করুন। প্রচুর পরিমাণে পানি খেলে শ্লেষ্মা পাতলা হয়ে আসে। শ্লেষ্মা পাতলা হয়ে গেলে সেটা ধীরে ধীরে বের হয়ে যায় নিজে থেকেই। তাই সর্দি-কাশির সমস্যায় সারাদিনে প্রচুর পানি পান করতে থাকুন।
এক চামচ পাতিলেবুর রসের সঙ্গে সমপরিমাণ মধুর মিশ্রণ দিনে দুইবার করে খেয়ে দেখুন। এই মিশ্রণ গলার ভেতরের সংক্রমণ দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।
সর্দি-কাশির সমস্যায় গরম পানি ভাপ বা সেঁক নেওয়া একটি অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি। গরম পানিতে ভাপ নিলে সহজেই নাক দিয়ে শ্লেষ্মা বের হয়ে আসবে। তাই গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে নিয়ে দিনে দুইবার করে ভাপ নিন।
খুলনা গেজেট/এনএম