খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  খুলনার বড় বাজারের পাটের বস্তার গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস
  আজারবাইজানে কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলন শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
করোনা মোকাবিলায় ৪ প্রস্তাব

টিকার ট্রায়াল বাংলাদেশে হওয়া উচিত : পরামর্শক কমিটি

গেজেট ডেস্ক

জনগণের মধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এর টিকার ট্রায়াল বাংলাদেশে হওয়া উচিত বলে মনে করে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। তাদের মতে, টিকা আন্তর্জাতিক বাজারে এসে গেলে তা কিভাবে প্রথমেই বাংলাদেশে নিয়ে আসা যায় তা বিস্তারিত পরিকল্পনা এখনই করা প্রয়োজন।

কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ১৭তম অনলাইন সভায় এই মতামত ব্যক্ত করেন কমিটির সদস্যরা। সভায় চারটি প্রস্তাব গ্রহণ করে তা সরকারের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বুধবার রাতে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ১৭তম অনলাইন সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা। সভায় নিম্নলিখিত প্রস্তাব গৃহীত হয় :

১. কোভিড-১৯ বিশ্বমহামারী মোকাবিলায় টিকার গুরুত্ব বিবেচনা করে এ বিষয়ে জাতীয় পরার্মশক কমিটি নিম্নলিখিত প্রস্তাব পেশ করছে:

ক) টিকা আন্তর্জাতিক বাজারে এসে গেলে তা কিভাবে প্রথমেই বাংলাদেশে নিয়ে আসা যায় তা বিস্তারিত পরিকল্পনা এখনই করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে কি পরিমাণে টিকার প্রয়োজন, তা সংগ্রহে কত খরচ হবে কিংবা বিনামূল্যে পাওয়া যাবে কিনা এ ব্যাপারে এখনই হিসাব করা প্রয়োজন। এখন থেকেই যে সব প্রতিষ্ঠান বা দেশ টিকার ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায়ে আছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত যেন টিকা মানবদেহে প্রয়োগের অনুমতি পাওয়া মাত্রই বাংলাদেশ তা পেতে পারে। টিকা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সিরিঞ্জ পর্যাপ্ত পরিমাণে উৎপাদন বা ক্রয় করার প্রস্তুতি থাকতে হবে। টিকা প্রাপ্তির পরে টিকার সংরক্ষণ (Space with Cold chain), বিতরণ, লোকবল, সরঞ্জামসহ সব পরিকল্পনা/ ব্যবস্থাপনা (Microplanning) এখনই ঠিক করে রাখা উচিত। টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কোন উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনসংখ্যা অগ্রাধিকার পাবে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অগ্রাধিকারে কোন জনগোষ্ঠী সেটা নির্ধারণ করে রাখা প্রয়োজন। সাধারণত প্রথম ব্যবহার যোগ্য ভ্যাকসিন/ টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমেই বিতরণ করা হয়। একটি নির্দিষ্ট মাথাপিছু আয়ের নিচে যেসব দেশ সেসব দেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিনা মূল্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভ্যাকসিন/ টিকা দিয়ে থাকে এবং কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন/ টিকার ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসরণ করা হবে যেটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই দ্রুত ব্যবস্থার মাধ্যমে টিকা সংগ্রহ করার লক্ষ্যে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কিংবা সে দেশের সরকারের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করা এবং প্রয়োজনীয় অগ্রিম অর্থ প্রদান করার প্রয়োজন হতে পারে।

খ) কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে টিকার ট্রায়াল বাংলাদেশে হওয়া উচিত। বিশ্বের যে সব দেশ যেমন : যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, রাশিয়া টিকার গবেষণায় এগিয়ে আছে, তাদের টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অন্যান্য দেশও অংশগ্রহণ করছে। যেমন : অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল ব্রাজিল ও ভারতে হচ্ছে, চীনের সিনোভ্যাক টিকা ব্রাজিল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, চিলি, ফিলিপিন ও তুরস্কে হচ্ছে। বাংলাদেশে টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হলে, প্রথমত বাংলাদেশে এর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তা প্রমাণের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং এই টিকা সফল প্রমাণিত হলে সর্বাগ্রে পাওয়ার নিশ্চয়তা পাওয়া থাকবে।

২. সরকারিভাবে কোভিড-১৯ এর টেস্টের জন্য বর্তমানে ধার্যকৃত মূল্য পরিবর্তন করা প্রয়োজন। সন্দেহকৃত কোভিড-১৯ রোগী বুথে এসে টেস্টের জন্য নমুনা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিনামূল্যে এবং বাসায় স্বাস্থ্য কর্মী গিয়ে নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৩০০ টাকা করার পরামর্শ প্রদান করা হয়।

৩. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত লাইভ স্বাস্থ্য বুলেটিন চালু রাখার পক্ষে এ সভা মত প্রদান করেছে। এর পাশাপাশি সপ্তাহে একবার গণমাধ্যমের উপস্থিতিতে প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকা উচিত বলে এ সভা মনে করে।

৪. হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের পর ডাক্তারসহ স্বাস্থ্য কর্মীদের বিভিন্ন হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকার ব্যবস্থা বর্তমানে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের পর মানসম্মত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন, অন্যথায় শুধু স্বাস্থ্যকর্মীরাই নয়, তাদের পরিবার-পরিজনদেরও কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।

 

খুলনা গেজেট / এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!