প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বারবার অভিযোগ তুলেছেন, যে ‘আইন-সম্মত ভোট’ গণনায় তারই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার কথা। কিন্তু এই দাবির কোনো যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি নেই। এখনো যেসব ভোট গণনা করা হচ্ছে সবই মেইল করে পাঠানো, আইন-সম্মত ভোট। মেইল ইন ভোটগুলো শেষে গোনা হচ্ছে কারণ অনেক রাজ্যের ক্ষেত্রে সেটিই নিয়ম।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কয়েকমাস আগে থেকেই তার সমর্থকদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকতে উদ্বুদ্ধ করে আসছিলেন। পোস্টাল ভোটে জালিয়াতির সুযোগ বেশি থাকে দাবি করে ঐ ধরণের মন্তব্য করছিলেন তিনি। তবে মার্কিন নির্বাচনে জালিয়াতির সুযোগ খুবই কম থাকে। ২০১৭ সালে ব্রেনান সেন্টার ফর জাস্টিসের এক গবেষণা অনুযায়ী মার্কিন নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির সম্ভাবনা ০.০০০৯%।
মি ট্রাম্পের ঐ ধরণের বক্তব্যের কারণে অধিকাংশ মেইল ইন ভোট জো বাইডেনের সমর্থকদের কাছ থেকে আসার সম্ভাবনা বেশি। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে নিজের সমর্থকদের মেইল ইন ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন জো বাইডেন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার প্রতিপক্ষ কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচন চুরির চেষ্টা করছে। ওয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলন তিনি কোন প্রমাণ উপস্থাপন করেন নি, তবে তিনি বলেছেন বিভিন্ন রাজ্যে তারা আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন দাখিল করেছেন।
তিনি বলেন ‘আইন-সম্মত’ ভোট গুনলে তিনি সহজেই বিজয়ী হয়েছেন। যদি, তার ভাষায়, ‘বেআইনি ভোট’ গোনা হয় তাহলে তাদের কাছ থেকে নির্বাচন চুরি করা হচ্ছে।
মি. ট্রাম্প বলেন যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে তিনি অনেক ভোটে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু পরে ‘রহস্যজনক’ ভাবে অনেক নতুন ভোট গোনা শুরু হয়।
তিনি দাবী করেন, এখানে নির্বাচন শেষ হবার পর ভোট পাঠানো হয়েছে, বেআইনি ভোট গ্রহণ করা হয়েছে, গোপনে ভোট গোনা হয়েছে, ভোট গণনা কেন্দ্রে রিপাবলিকান দলের পর্যবেক্ষকদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। তবে তার এসব দাবীর পক্ষে তিনি কোন প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।
তিনি নির্বাচনের আগের মাসগুলোতে প্রকাশিত জনমত জরীপের তীব্র নিন্দা করে বলেন যে, তার সমর্থকদের নিরুৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে জো বাইডেনকে এগিয়ে দেখিয়ে এসব জরীপ প্রচার করা হয়েছিল।
নির্বাচনের আগে বেশির ভাগ জরীপে দেখা গিয়েছে মি. বাইডেন দেশব্যাপী এগিয়ে। অনেক পর্যবেক্ষক ধারণা করেছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর বিপুল বিজয় হবে।
আমেরিকান টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএস ট্রাম্প নির্বাচনী কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে রিপোর্ট করেছে যে, জো বাইডেন জয় ঘোষণা করলেই ডোনাল্ড ট্রাম্প পরাজয় মেনে নেবেন, তেমন কোন পরিকল্পনা প্রেসিডেন্টের নেই। “একটি সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট জয়ী হবেন,’’ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে সিবিএস এ কথা বলে।
এর আগে সিএনএন ও এএফপির খবরে বলা হয়েছে, মিশিগানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয় পেয়েছেন বাইডেন। এই জয়ের ফলে সব মিলিয়ে বাইডেনের ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা দাঁড়াল ২৬৪। আর ট্রাম্প এখন পর্যন্ত পেয়েছেন ২১৪ ভোট। মোট ৫৩৮ ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে প্রেসিডেন্ট হতে প্রয়োজন ২৭০ ভোট। এর মানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে বাইডেনের প্রয়োজন আর মাত্র ছয়টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট।
খুলনা গেজেট/এনএম