খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে

ট্রাইব্যুনালে খুলনার ৩১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কিছুই জানে না নিহতের পরিবার

এ এইচ হিমালয়

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী গ্রামের যুবক রকিবুল হাসান রকির মৃত্যুর ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানেন না বাদী ও নিহত যুবকের বাবা রফিকুল ইসলাম গাজী। সরকারি সাহায্যের কথা বলে ১৭ নভেম্বর দুই যুবক গ্রামের বাড়ি গিয়ে রকিবুল হাসানের মৃত্যু সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি নিয়ে যান। শনিবার লোকমুখে মামলার বিষয়টি জানতে পারে তাঁর পরিবার।

গত ৫ আগস্ট বিকেলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আনন্দ মিছিল নিয়ে খুঁটিতে জাতীয় পতাকা টাঙাতে গেলে বিদ্যুৎস্পর্শে মারা যান রকিবুল হাসান রকি। তিন মাস পর ২১ নভেম্বর রকিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৩১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন জমা দেওয়া হয়।

ঘটনাস্থল পাইকগাছা উপজেলায় হলেও মামলার অভিযোগে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা, কেসিসির কাউন্সিলর, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাবেক দুই উপাচার্যসহ ১৫ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা, কেসিসির ২৯ জন কাউন্সিলর, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও আইনজীবীদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই সক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। আন্দোলন চলাকালে তাদের অনেকেই ছাত্রদের বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান নেন। আবার ছাত্রদের পক্ষে ছিলেন এমন কয়েকজনও রয়েছেন আসামির তালিকায়।

আবার স্বেচ্ছাসেবী কাজে যুক্ত অনেক ব্যক্তি, সংগঠক, ব্যবসায়ীর নামও অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হলে মামলার বাদি ও পরিবার সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হয়।

গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম গাজী চোখে দেখেন না। চা বিক্রি করে সংসার চালান তিনি। এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে রকি ছিলেন বড়। তিনি খুলনার বিএল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। খুলনায় থাকতেই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। পরে কলেজ বন্ধ এবং কারফিউ জারি হলে গ্রামে গিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। আন্দোলন সফলের পর তাঁর করুণ মৃত্যুতে পরিবারের সবাই শোকাহত। তবে এভাবে মিথ্যা মামলা দেওয়ার বিষয়টি মানতে পারছেন না তারা।

মামলার বাদি ও নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম গাজী ফোনে জানান, ছেলের মৃত্যুর পর চায়ের দোকানের অল্প আয় দিয়ে টেনেটুনে সংসার চলছিল। গত রোববার দুটি ছেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে তাঁর বাড়িতে আসে এবং ছেলের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। প্রায় এক সপ্তাহ পর শনিবার লোকমুখে মামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বাড়িতে আসে এবং স্ট্যাম্পে সই করে দিতে জোরাজুরি করেন। বাধ্য হয়ে মোবাইল বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক ও খুলনার বিএল কলেজের শিক্ষার্থী সাজিদুল হাসান বাপ্পীকে মৃত্যু সনদ নিয়ে যাওয়া দুই যুবকের ছবি দেখালে তিনি জানান, আন্দোলনে তারাও (যুবকরা) ছিলেন। কিন্তু বিস্তারিত পরিচয় জানেন না। মামলার আবেদন বা আসামিদের নাম কীভাবে এসেছে, তাও তিনি জানেন না।

এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম বলেন, কেউ অভিযোগ দিলে আমরা যাচাই-বাছাই করি। যদি প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়, তখন অভিযোগটি তদন্ত সংস্থার কাছে পাঠাই। তাই কারও নামে অভিযোগ করলেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

 

খুলনা গেজেট/হিমালয়

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!