কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রত্যাহার করা হয়েছে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাসকে। তার স্থলে এবি এম এস দোহাকে নতুন অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এর আগে ৫ আগস্ট দুপুরে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ থানার পুলিশের ৯ সদস্যর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার।
এদিকে তিন মাসের মধ্যে দ্রুত বিচার আদালতের মাধ্যমে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যার বিচার সম্পন্ন ও দোষীদের ফাঁসি দাবি করেছে সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সংগঠন রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া)। বুধবার বিকালে রাওয়া’র হেলমেট হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এই দাবি জানান। সেইসঙ্গে পুলিশ বাহিনীকে সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য জবাবদিহিমূলক আইন প্রণয়ণ করে পুর্নগঠন করাসহ ১১টি দাবি জানান তারা।
মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান (অব.) হত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেজর (অব.) খন্দকার নুরুল আফসার। তিনি বলেন, আমরা সুশৃঙ্খল বাহিনীর সদস্য। ইচ্ছে করলেই রাস্তায় নেমে উচ্ছৃঙ্খলা দেখাতে পারিনা। কিন্তু এই বিষয়ে দাবি আদায় না হলে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হব। উঁচু গলায় কথা বলবো। তিন বাহিনীর প্রাক্তন প্রধানদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে বিচার দাবি করবো।
এসময় সিনহা হত্যার বিচারের দাবি উত্থাপন করেন মেজর (অব.) খন্দকার নুরুল আফসার। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
তিন মাসের মধ্যে দ্রুত বিচার আদালতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার সম্পন্ন করতে হবে এবং দোষীদের ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।
অনতিবিলম্বে সকল আসামিকে (তদন্তে যাদের নাম আসবে তারাসহ) মামলার স্বার্থে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে রাখতে হবে।
কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার (এসপি)-কে অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। এই ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা, তথ্য গোপন করে মিডিয়াতে মিথ্যা বিবৃতি দেয়া ও একমাত্র চাক্ষুস স্বাক্ষী সিফাতের বিরুদ্ধে দুটি কাল্পনিক ও বানোয়াট মামলার রুজু করার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ওসি প্রদীপকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠাতে হবে।
সিফাত, ট্রাক চালকসহ সকল স্বাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনুরূপ একটি ভিন্ন মন্ত্রণালয় (ভ্যাটারান মন্ত্রণালয়) গঠন করে সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের নিরাপদ ও আত্মমর্যাদা সম্পন্ন জীবনযাপনে সার্বিক সহায়তা করতে হবে। সূত্র : মানবজমিন।