খুলনা, বাংলাদেশ | ২৬ ফাল্গুন, ১৪৩১ | ১১ মার্চ, ২০২৫

Breaking News

  আমিনবাজারে পাওয়ার গ্রিডে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে
  মধ্যরাতে পল্লবী থানায় ঢুকে হামলা, ওসিসহ আহত ৩

টিয়ারশেল, কাঁদানে গ্যাসে জামায়াত নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ, সাঈদীর মরদেহ পিরোজপুরের পথে

গেজেট ডেস্ক

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে বিক্ষোভ করেছেন জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবিরের নেতা–কর্মীরা। তাঁদের দাবি, ঢাকায় সাঈদীর জানাজা পড়াতে হবে। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভেতরে ও সামনের সড়কে রাতভর জামায়াত–শিবিরের নেতা–কর্মীরা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ উল্লেখ করে বিক্ষোভ করেন। সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন তাঁরা।

আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে পুলিশ কঠোর অবস্থান নেয়। এ সময় কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় পুরো হাসপাতাল এলাকা। এক পর্যায়ে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। তাঁরা হাসপাতাল ও শাহবাগ এলাকা ত্যাগ করে বিভিন্ন দিকে চলে যান।

কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা চলে আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। এ ঘটনায় বেশ কিছু নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে জামায়াত-শিবিরের সমর্থকেরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন।

পরে দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স পুলিশের কড়া পাহারার মধ্যে শাহবাগ এলাকা ছাড়ে। তাঁর মরদেহ পিরোজপুরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গতকাল সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে শাহবাগ এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা–কর্মীরা জড়ো হন। শাহবাগ মোড় থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের (সাবেক শেরাটন হোটেল) মোড় পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নেন তাঁরা। তাঁদের অবস্থানের কারণে সড়কের এক পাশ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হলে গত রোববার বিকেলে কারাগার থেকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওই রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিএসএমএমইউতে নেওয়া হয়।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ছিলেন। তিনি জামায়াতের রাজনীতির পাশাপাশি ওয়াজ করা বা ধর্মীয় বক্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগের মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ঢাকায় তাঁর শাহীনবাগের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন থেকেই তিনি কারাগারে রয়েছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারের মুখোমুখি করা হয়।

২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল  মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তাঁর আপিলের ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেন ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। সেই রায়ে সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আপিল বিভাগের রায়ও পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। কিন্তু সেই আবেদনে আপিল বিভাগের আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়ে কোনো পরিবর্তন হয়নি। সেই থেকে তাঁকে গাজীপুরে কাশিমপুর কারাগারে রাখা হয়েছিল।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে জামায়াতে ইসলামী শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে। জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। তিনি ১৯৮২ সালে জামায়াতের রুকন (দলটির পূর্ণাঙ্গ সদস্য) হন। ১৯৮৯ সালে তিনি জামায়াতের মজলিশে শুরা সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। সাঈদী ২০০৯ সাল থেকে জামায়াতের নায়েবে আমিরের পদে রয়েছেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!