সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের জনপ্রিয়তা বাংলাদেশে শীর্ষ অবস্থানে আছে। কিশোর, যুবক, বয়স্ক সকল শ্রেণী পেশার মানুষই ফেসবুকের সাথে অতপ্রতভাবে জড়িত। সম্প্রতি দেশে ফেসবুকের পাশাপাশি চীনের তৈরী টিকটক অ্যাপ এবং সিঙ্গাপুর ভিত্তিক লাইকি অ্যাপ এখন নতুন প্রজন্মের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে গেছে।
এই অ্যাপ দুটোতে দুই ধরণের মানুষ ব্যবহার করছে। এক ধরণের মানুষ টাকা আয় এবং আরেক ধরনের মানুষ অল্প সময়েই জনপ্রিয়তার উদ্দেশ্যে। অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীদের যার যত ফলোয়ার কর্তৃপক্ষ তাকে টাকা আয় করার সুযোগ দেয়। অনেক সময় কর্তৃপক্ষ তাদের নিজ নিজ পণ্যের প্রমোশন করার জন্য বেশি ফলোয়ার আছে এমন অ্যাপ ব্যবহারকারীদের সাথে চুক্তি করে। প্রমোশনের বিনিময় অ্যাপ ব্যবহারকারীদের দেওয়া হয় টাকা।
খুলনার নতুন প্রজন্ম এই অ্যাপ দুটোর মধ্যে ডুবে আছে। দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবং ফেসবুকের মত অ্যাপে দর্শক ফিডব্যাক কম থাকায় টিকটক এবং লাইকি অ্যাপের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এছাড়া নব্য সন্তান জন্মগ্রহণ, বিবাহ, ঘুরতে যাওয়া, রাইডিং, লাইভ শো করার মত সহজ সুযোগ সুবিধা এই অ্যাপগুলোতে থাকায় খুব অল্প সময়েই পরিচিত মেলে ব্যবহারকারীদের। যা ফেসবুকে মেলে না।
খুলনা মেডিকেল কলেজ, সরকারি বিএল কলেজ, আযম খান সরকারি কমার্স কলেজ, সুন্দরবন কলেজ, সিটি কলেজ, জিলা স্কুল থেকে শুরু করে নগরীর স্বনামধন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে টিকটক এবং লাইকি অ্যাপে আসক্ত। শুধু তাই নয়, প্রাইমারী স্কুল, মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে খুলনার অনেক গৃহবধুসহ পেশাদার মানুষ এখন সময় ব্যয় করছে এই দুটি অ্যাপে। নগরীর ৭নং ঘাট, রূপসা ব্রীজ, রূপসা-খুলনা বাইপাস সড়কের পাশেসহ রেষ্টুরেন্ট এবং হোটেলগুলোতেই টিকটক এবং লাইকি অ্যাপের ভিডিও করা হয়।
মূলত টিকটক এবং লাইকি অ্যাপগুলোতে নানা ধরণের ভিডিও ছোট আকাওে করা যায়। যা ব্যবহার করা সহজ, সবসময় এতে যুক্ত হয় নতুন নতুন ফিচার, ভিডিওতে নিজের কণ্ঠ মিলিয়ে লিপ সিঙ্ক করারও সুযোগ রয়েছে। যার ফলে ভিডিওতে অন্যের কণ্ঠ ব্যবহার করে নিজের অভিনয়কে উপস্থাপন করার সুযোগ রয়েছে।
অ্যাপ দুটোতে সুবিধা এবং অসুবিধা দুটোই আছে। বিনোদন এবং টাকা আয়ের সুযোগের পাশাপাশি এই অ্যাপের মাধ্যমে অনেকেই আবেদনময়ী ভিডিও তৈরী করেন। যা সামাজিকভাবে অবক্ষয়ে কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া সম্প্রতি রাজধানীতে এই অ্যাপের মাধ্যমে পরিচিত হওয়ার শ্লীলতাহানীর ঘটনাও ঘটেছে।
এ বিষয়ে কেএমপি’র অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার ( মিডিয়া এন্ড কমিউনিটি পুলিশ ) কানাই লাল সরকার জানান, আমরা এই বিষয়ে সচেতন আছি। পাশাপাশি মিডিয়া কর্মীদের কাছে কোন তথ্য থাকলে আমাদের সহযোগিতা করবে বলে আশা করি।
খুলনা গেজেট/নাফি