যশোরাঞ্চলে টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে কৃষকের স্বপ্ন মাটিতে মিশে গেছে। ফসল হারিয়ে বহু কৃষক পরিবারে এখন কেবলই হতাশা। ধারদেনা করে রবি ফসল করা অনেক কৃষক চোখে অন্ধকার দেখছেন। সামনের দিনগুলো কীভাবে তারা পার করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই।
আবার অনেকের দুশ্চিন্তা, সার, বীজ, কীটনাশকের দোকানের পাওনা পরিশোধ করা নিয়ে। কেবল যশোর জেলায় এক লাখ ৭৮ হাজার ছয়শ’ ৬৫ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। যদিও কৃষি বিভাগের ভাষায়, আক্রান্ত হয়েছে এসব জমির নানা ধরনের ফসল। এর বাইরে ভেসে গেছে অনেক পুকুর ও ঘেরের মাছ।
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সারাদেশের মত যশোরাঞ্চলে টানা দু’দিন বৃষ্টিপাত চলে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায় যশোর শহরসহ গোটা জেলার নিম্নাঞ্চল ও খেত খামার। পানিতে ডুবে যায় আমন ধানসহ সবজি খেত। ভেসে যায় অসংখ্য পুকুর ও ঘের। এ অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়ে কৃষক। তাদের ফসলের স্বপ্ন বৃষ্টির পানিতে মাটির সাথে মিশে গেছে। পাকা ধান সবজি ও সরিষা ক্ষেত পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে বলে কৃষকরা জানিয়েছে। তাদের ঘরে ঘরে এখন শুধুই হতাশা বিরাজ করছে।
কৃষি বিভাগের দাবি, যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩১ হাজার দুশ’ ৬০ বিঘা জমির রোপা আমন, এক হাজার ৮শ’ ৯৭.৫ বিঘা জমির বোরো বীজতলা, ১ হাজার ৯শ’ ২০ বিঘা জমির আলু, ১ হাজার ৫শ’ ৪৫ বিঘা জমির গম, ১ হাজার ৬শ’ ২০ বিঘা জমির পেঁয়াজ, ৩১ হাজার ২শ’ ২২.৫ বিঘা জমির মসুর ডাল, ৭৪ হাজার ৩শ’ ২৫ বিঘা জমির সরিষা ও ৩৪ হাজার ৮শ’ ৭৫ বিঘা জমির সবজি খেত টানা বৃষ্টির পানিতে আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু কৃষক বলছেন, কৃষি বিভাগের দাবির চেয়ে তাদের বেশি পরিমাণ জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
বিশেষ করে আলু, সরিষা, মসুর, গম ও বিভিন্ন সবজি মাটির সাথে মিশে গেছে। নষ্ট হয়েছে বোরো ধানের বীজতলা। এসব ফসলে কৃষকের চরম বিপর্যয় হয়েছে। সরেজমিনে মাঠের পর মাঠ ফসল নষ্ট হওয়ার দৃশ্য চোখে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কৃষি বিভাগকে আরও দু’ একদিন অপেক্ষা করতে হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস জানিয়েছেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছেন। তারা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর ক্ষতির পরিমাণ সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে। এরপর তারা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই