খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে নতুন বাংলাদেশ গড়তে আর্থিক ও বিনিয়োগের সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

টানা তিন ম্যাচ হারের পর জয়ের স্বাদ পেল অস্ট্রেলিয়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক

পাঁচ ম্যাচ সিরিজের টানা তিন ম্যাচ হারের পর জয়ের দেখা পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার বাংলাদেশের দেওয়া ১০৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে তিন উইকেটে প্রথম জয় তুলে নেয় সফরকারীরা। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ ম্যাচ সিরিজের প্রথম তিন টি-টোয়েন্টি জিতেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের। সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে অজিদের বিপক্ষে ৩ উইকেটের ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা। বাংলাদেশের দেয়া ১০৫ রানের লক্ষ্য ৬ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে গেছে অজিরা।

অল্প রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের চতুর্থ বলে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডকে বোল্ড করে আউট করেছেন মেহেদী। এরপর সাকিব আল হাসান নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে ড্যান ক্রিস্টিয়ানের তোপের মুখে পড়েন। সাকিবের এক ওভারে ৫টি ছক্কা মারেন তিনি।

প্রথম দুই বলে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা হাকান ক্রিস্টিয়ান। তৃতীয় বলে মিড উইকেটের উপর দিয়ে আরেক ছক্কা। চতুর্থ বলে কোনো রান নিতে পারেননি ক্রিস্টিয়ান। পঞ্চম বলে লং অনের উপর দিয়ে আরেকটি ছক্কা মারেন এই অজি ব্যাটসম্যান। শেষ বলে মিড উইকেট দিয়ে আরেকটি ওভার বাউন্ডারি।

সাকিবের ওভারে ছক্কা বন্যার পর দ্রুত দুটি উইকেট হারায় অজিরা। ওপেনার বেন ম্যাকডারমটকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান নাসুম আহমেদ। এর পরের ওভারে এসে ১৫ বলে ৩৯ রান করা ক্রিস্টিয়ানের উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজুর রহমান।

মুস্তাফিজের অফ স্টাম্পের বাইরের বল জায়গা করে খেলতে চেয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ান। তবে টাইমিংয়ে গড়বড়ের কারণে তার সোজা চলে যায় পয়েন্টে শামীম হোসেনের হাতে। মুস্তাফিজের সেই ওভারে কোনো রানই নিতে পারেনি অজিরা। এরপর তৃতীয় ওভার করতে এসে ময়েজেস হেনরিকসকে রান আউট করেছেন সাকিব।

এই বাঁহাতি স্পিনার বল করেছিলেন মিচেল মার্শকে। তার স্ট্রেইট ড্রাইভ সাকিবের হাতে লেগে নন স্ট্রাইকিং প্রান্তের স্টাম্প ভেঙে যায়। ফলে ৪ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় হেনরিকসকে। এরপর অ্যালেক্স ক্যারি মুস্তাফিজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন মাত্র ১ রান করে।

পুরো সিরিজ জুড়েই দুর্দান্ত খেলতে থাকা মিচেল মার্শকে দারুণ এক অফ ব্রেকে বোল্ড করেছেন শেখ মেহেদী। সপ্তম উইকেটে ৩৪ রান যোগ করে ম্যাচ বাংলাদেশের হাতের মুঠো থেকে বের করে নেন অ্যাস্টন আগার ও অ্যাস্টন টার্নার। যদিও শেষদিকে শরিফুলের বলে মিড অনে শামীমের দুর্দান্ত ক্যাচে আউট হন ২৭ রান করা আগার। অবশ্য টার্নার ৯ ও অ্যান্ড্রু টাই ৪ রান করে অপরাজিত থেকে অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।

এর আগে এই ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যদিও ব্যাট হাতে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি বাংলাদেশের ওপেনাররা। দলীয় ২৪ রানেই বাংলাদেশ সৌম্য সরকারের উইকেট হারায়। আগের তিন ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন সৌম্য।

অজি পেসার জস হ্যাজেলউডের বলে কভার দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন সৌম্য। তবে টাইমিং গড়বড়ের কারণে তা চলে যায় সোজা অ্যালেক্স ক্যারির হাতে। তাতেই শেষ হয় সৌম্যর ৮ রানের ইনিংস। আগের তিন ম্যাচে সৌম্যর রান যথাক্রমে ২, ০ ও ২ রান।

সৌম্য ফেরার পর নাইম শেখকে নিয়ে ভালোই এগোচ্ছিলেন সাকিব আল হাসান। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত ১৫ রানে তিনি জশ হ্যাজেলউডের ওপর চড়াও হতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ম্যাথু ওয়েডের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন। এর ফলে ৪৮ রানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় উইকেটের পতন হয়।

সাকিবের পর উইকেটে থিতু হতে পারেননি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তিনি কোনো রান না করেই মিচেল সোয়েপসনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে গেছেন সাজঘরে। এরপর নাইমকে নিয়ে ইনিংস বড় করতে পারননি উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহানও। তিনিও রানের খাতা খোলার আগেই এলবিডব্লিউ হয়েছেন।

আগের বলেই মিচেল সোয়েপসনের বলে এলবিডব্লিউ থেকে অল্পের জন্য রক্ষা হয়েছিল নাইমের। যদিও এই জীবন পাওয়ার সুবিধা নিতে পারেননি তিনি। এই টাইগার ওপেনার ৩৬ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলে সোয়েপসনের বল স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে কাউ কর্নারে ওয়েডের ক্যাচ হয়েছেন।

শেষদিকে অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে অ্যাস্টন আগারের বলে ডিপ মিড উইকেটে ময়েজেস হেনরিকসের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৭ বলে ২১ রান করা আফিফ। সাত নম্বরে নামা শামীম হোসেন ৬ বলে ৩ রান করে অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলে মিড উইকেটে ক্যারিকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন।

শেষ দিকে মেহেদীর ১৬ বলে ২৩ রানের ইনিংসে ভর করে একশো পেরুনো রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। নাসুম আহমেদ ৬ বলে ২ রান করে ইনিংসের শেষ বলে আউট হয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

বাংলাদেশ- ১০৪/৭ (২০ ওভার) (নাইম ২৮, সৌম্য ৮, সাকিব ১৫, মাহমুদউল্লাহ ০, সোহান ০, আফিফ ২১, শামীম ৩, সোয়েপসন ৩/১২, হ্যাজেলউড ২/২৪)

অস্ট্রেলিয়া- ১০৫/৭ (১৯ ওভার) (ক্রিস্টিয়ান ৩৯, ম্যাকডারমট ৫, ওয়েড ২, মার্শ ১১, ক্যারি ১, আগার ২৭, টার্নার ৯*, টাই ৪*; মেহেদী ২/১৭, মুস্তাফিজ ২/৯)




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!