যেকোনো বোলারের জন্য হ্যাটট্রিক সবসময়ই পরম আরাধ্য বিষয়। সেখানে যদি নেয়া হয় টানা চার বলে চার উইকেট, তাও সরাসরি বোল্ড করে! তাহলে তো সেই বোলার সপ্তাকাশে পৌঁছে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকে না। ঠিক এমন কীর্তিই গড়েছেন পাকিস্তানের ২০ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি।
পাকিস্তান দলের ইংল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরে যাননি শাহিন আফ্রিদি। হ্যাম্পশায়ারের সঙ্গে চুক্তি করে ইংল্যান্ডেই থেকে গিয়েছিলেন ভাইটালিটি ব্লাস্ট টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে খেলতে। যদিও টুর্নামেন্টটা খুব একটা ভালো কাটছিল না তার। তবে একদম শেষ ম্যাচে এসে ডাবল হ্যাটট্রিকের মাধ্যমে রীতিমতো রেকর্ডই গড়লেন এ বাঁহাতি তরুণ।
রোববার রাতে টেবিলের নিচের দিকের দুই দল মিডলসেক্স ও হ্যাম্পশায়ারের মধ্যকার লড়াইয়ে আন্ডারডগ ছিল টানা ছয় ম্যাচ হারা হ্যাম্পশায়ারই। শেষ ম্যাচ জিতে ইতিবাচকভাবে টুর্নামেন্ট শেষ করার লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৪১ রানে থামে হ্যাম্পশায়ারের ইনিংস। সহজ লক্ষ্য পায় মিডলসেক্স।
১৪২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৪ ওভারের মধ্যে মাত্র ৮০ রানে ৬ উইকেট হারায় মিডলসেক্স। ষষ্ঠ উইকেটটি শিকার করেন শাহিন আফ্রিদিই। এরপর সপ্তম উইকেট জুটিতে মাত্র ৩ ওভারে ৩৯ রান যোগ করে ফেলেন জন সিম্পসন ও টম হেম। ইনিংসের ১৮তম ওভারে আফ্রিদি আসেন নিজের শেষ ওভার নিয়ে। তখন জয়ের জন্য ১৮ বলে ২৩ রান করতে হতো মিডলসেক্সকে।
সেই ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন সিম্পসন, দ্বিতীয় বলে ফের সিম্পসনকে স্ট্রাইক ফিরিয়ে দেন হেম। এরপর আর ব্যাটিং প্রান্তে যেতে পারেননি হেম। ওভারের তৃতীয় বলে ৪৮ রান করা সিম্পসনকে সরাসরি বোল্ড করে জুটি ভাঙেন শাহিন আফ্রিদি। এরপর বাকি তিন বলে স্টিভেন ফিন, থিলান ওয়ালাভিতা ও টিম মুরতাঘকেও সরাসরি বোল্ডের মাধ্যমে পূরণ করেন নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল হ্যাটট্রিক।
ভাইটালিটি ব্লাস্ট তো বটেই, ইংল্যান্ডের মাটিতেও এটি প্রথম ডাবল হ্যাটট্রিকের রেকর্ড। শাহিন শাহর এই জাদুকরী চার বলে কল্যাণে ২০ রানে ম্যাচ জিতে নেয় হ্যাম্পশায়ার। যা থামায় তাদের ছয় ম্যাচের পরাজয়ের ধারা। তবে ২০০৭ সালের পর প্রথমবারের মতো টেবিলের তলানিতে থেকেই লিগ শেষ করেছে দলটি।
আগের ছয় ম্যাচে ১৯১ রান খরচা করে মাত্র ১ উইকেট শিকার করা শাহিন আফ্রিদি এদিন মাত্র ১৯ রানেই নিয়েছেন ৬টি উইকেট। পাকিস্তানের প্রথম ও সবমিলিয়ে ষষ্ঠ বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে টানা চার বলে চার উইকেট নেয়ার রেকর্ড গড়লেন আফ্রিদি।
সর্বপ্রথম টি-টোয়েন্টিতে চার বলে চার উইকেট নিয়েছিলেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। এরপর একে একে এই কীর্তি গড়েছেন বাংলাদেশের পেসার আলআমিন হোসেন, আফগান লেগস্পিনার রশিদ খান, লঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গা ও ভারতীয় পেসার অভিমান্যু মিঠুন। এদের মধ্যে রশিদ ও মালিঙ্গার কীর্তি আবার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে।
খুলনা গেজেট/এএমআর