ক্ষমতার ধারাবাহিকতা বজায় থাকল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বিএনপিসহ সমমনা বিরোধীদের ভোট বর্জন আর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চোখরাঙানির মধ্যেও ভোট করে বিজয় ছিনিয়ে নিল দলটি। ফলে টানা চতুর্থ জয়ে আবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে গতকাল রোববার দিনভর ভোট গ্রহণ করা হয়। বিকেল থেকে শুরু হয় গণনা। রাতে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন ২২৩টিতে। তাঁদের পরে সবচেয়ে বেশি আসনে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাঁদের দখলে গেছে ৬২টি আসন। আর লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা জিতেছেন ১১টি আসনে। আওয়ামী লীগের শরিক জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টি ১টি করে আসন জিতেছে।
এই নির্বাচনে ভোট পড়ার হার তুলনামূলক কম। রাজধানীতে ভোটারের সারি সেভাবে চোখে পড়েনি। সেই তুলনায় ঢাকার বাইরে গ্রামাঞ্চলে মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে আগ্রহ ছিল। দিন শেষে নির্বাচন কমিশন বলেছে, সারা দেশে ভোট পড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।
ভোটে আগ্রহের মতো এবার নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতাও অন্যবারের তুলনায় কম। যদিও ভোট চলাকালে কয়েকটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষসহ কিছু ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ভোলার লালমোহনে শনিবার দিবাগত রাতে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের সময় স্ট্রোকে মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রাম-১০ আসনে নৌকা ও ফুলকপি প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভোটকেন্দ্র এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। অনেক আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া অন্য প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টের দেখা মেলেনি। কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরে খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নিজেই বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
বেশ কিছু জায়গায় জাল ভোট, ব্যালটে সিল মারাসহ বিভিন্ন অভিযোগও উঠেছে। এর মধ্যে জোর করে ব্যালটে সিল মারার অভিযোগে নরসিংদী-৪ আসনের একটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। কুমিল্লা-৪ আসনের একটি কেন্দ্রেও একই ঘটনা ঘটায় সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অব্যাহতি এবং সিল মারা ব্যালট পেপারগুলো বাতিল করা হয়েছে।
ভোট গ্রহণ চলাকালে এজেন্টদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করা, ব্যালটে সিল মারাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ২৩ আসনে ৩০ জন প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন কয়েকজন।