চার বছরের শিশু আয়াজ তার মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা বানভাসীদের জন্য তুলে দিয়েছে। এ ব্যাংকটি নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় সে বাবা-মায়ের সাথে হাজির হয় প্রেসক্লাব যশোরের সামনে। এসময় সে টাকাসহ ব্যাংকটি তুলে দেয় ত্রাণ সংগ্রহকারী ছাত্রদের হাতে। তার এ অনুভূতি দেখে অবাক হয় উপস্থিত অনেকেই।
ভারতের ত্রিপুরায় বাধ খুলে দেয়ায় ফেনী, কুমিল্লা, খাগড়াছড়িসহ দেশের ১২টি জেলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বানভাসীদের ভয়াবহ কষ্ট দেখে কেঁদে উঠেছে শিশু আয়াজের মন। বেজপাড়ার বাড়িতে বসে শুক্রবার দুপুরে বাবা মায়ের সাথে সে টেলিভিশন দেখছিল। বন্যার্তদের কষ্ট দেখে তার বাবা মা ঘরের পুরনো কাপড়গুলো ত্রাণ সংগ্রহকারীদের জন্য গোছাচ্ছিলেন। এসময় শিশু আয়াজ তার মাটির ব্যাংকটি মায়ের সামনে এগিয়ে ধরে। জানায়, গত একমাস সে ব্যাংকে যে টাকা জমিয়েছে সেটি দিয়ে দেবে। আবেগাপ্লুত হয়ে মা ছেলেকে জানায় অবশ্যই এ টাকা বন্যায় নি:স্বদের দেয়া হবে। এরপর তাকে নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চলে আসেন প্রেসক্লাবের সামনে। এখানে অপটিল্যাক্স প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী ত্রাণ সংগ্রহ করা হচ্ছিল। তাদের হাতে শিশু আয়াজ তার মাটির ব্যাংকটি তুলে দেয়। এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত সাংবাদিকসহ ত্রাণ সংগ্রহকারীরা হতবাক হয়ে যায়। তারা চার বছর বয়সি ওই শিশুর এ অনভূতি দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে।
এদিকে, দেশের ১২টি জেলায় ভয়াবহ বন্যায় নি:স্ব হওয়া মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে শহরবাসী। তারা দু’হাত ভরে ত্রাণ সংগ্রহকারী ছেলেমেয়েদের হাতে জামা, প্যান্ট, শাড়ি, কাপড়, খাবারসহ নগদ টাকা প্রদান করেছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ত্রাণ সংগ্রহ হয়েছে মুজিব সড়কে প্রেসক্লাবের সামনে।
এখানে শহরবাসী শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কমপক্ষে তিন ট্রাক মালামাল ছেলেমেয়েদের হাতে প্রদান করেছে। একইসাথে তারা দিয়েছে বিপুল পরিমান টাকা। অপটিল্যাক্স প্রতিষ্ঠানটি এখানে শহরবাসীর কাছ থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করে। শহরবাসীর এ ত্রাণ সহায়তা তাদের আশার চাইতেও অনেক বেশি দেখে তারা অবাক হয়েছে। এসব মালামাল তারা রেলগেট প্রতিষ্ঠান কার্যালয়ে নিয়ে স্কুটিং করে শনিবার বন্যা উপদ্রুত জেলায় নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে।
খুলনা গেজেটে/কেডি