খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড
  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে

টাকার জন্য মুমূর্ষু রোগীকে তিনঘন্টা আটকে স্বজনদের মারপিট

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় টাকার জন্য মুমূর্ষু এক রোগীকে আটকে রেখে স্বজনদের পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে হার্ট ফাউন্ডেশনে বিরুদ্ধে। টানা ৩ ঘন্টা রোগীকে এ্যাম্বুলেন্সে আটকে রাখার পরে সদর থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে রুগী ও তার স্বজনদের  উদ্ধার করা হয়। রোববার (২ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে শহরের খুলনা রোড মোড় এলাকায় বেসরকারি হাসপাতাল হার্ট ফাউন্ডেশনে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পুলিশ ওই রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
ভুক্তভোগী রোগী মুক্তি বিশ্বাস (৪৫) সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার বাউখোলা পরানপুর  গ্রামের কার্তিক বিশ্বাসের ছেলে। অপরদিকে, রোগীর স্বজনদের মারপিটে নেতৃত্ব দেন হার্ট ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার দেবব্রত ।
ভুক্তভোগী রোগী মুক্তি বিশ্বাসের কাকি টুম্পা বিশ্বাস জানান, গত ২৮ মার্চ দুপুর ১২ টার দিকে ব্রেন স্টোকজনিত সমস্যার কারণে ভাইপো মুক্তিকে হার্ট ফাউন্ডেশনে ভর্তি করি। গত পাঁচ দিন ধরে সে এখানে ভর্তি আছে। রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় রোববার সকালে আমরা তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। তবে হার্ট ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার ভর্তির সময় বেড ভাড়া ১২’শ টাকা চুক্তি করলেও ছাড়পত্র দেয়ার সময় ১৬’শ টাকা করে দাবি করে।
তিনি আরো বলেন, সকাল ১১ টায় আমারা রোগী নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দিকে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে উঠি। তখন আমার ভাইপো উত্তম বিশ্বাস ম্যানেজারের কাছে টাকা পরিশোধ করতে যায়। চুক্তির বাইরে অতিরিক্ত টাকা দিতে না যাওয়ায় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে  ম্যানেজার তাকে মারপিট করে।
হাসপাতালের ম্যানেজার দেবব্রত কর্তৃক  হামলার শিকার উত্তম বিশ্বাস জানান, আমার কাছে ম্যানেজার অতিরিক্ত ২ হাজার টাকা দাবি করে। তখন আমরা অতিরিক্ত টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমাদের সহ অ্যাম্বুলেন্সে থাকা আমার দাদাকে আটকে দেয়। সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত টানা তিন ঘন্টা আমাকে ম্যানেজারের রুমে আটকে রেখে মারপিট করে।
রোগী মুক্তি বিশ্বাসের দাদা গৌতম বিশ্বাস বলেন, চাহিদা মতো অতিরিক্ত টাকা না দেয়ায় মুক্তি বিশ্বাসকে অ্যাম্বুলেন্সে আটকে রাখে এবং উত্তম বিশ্বাসকে ম্যানেজারের রুমে আটকে রাখে। মারপিট করার বিষয়ে জানতে গেলে ম্যানেজার সহ  হাট ফাউন্ডেশনের কর্মচারীরা আমাকেও আমার আরেক দাদা সন্তোষ বিশ্বাসকে ও মারপিট করে।
অভিযুক্ত হার্ট ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার দেবব্রত বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, রোগীর স্বজনরা আমাদের উপর চড়াও হয়েছে। আমরা রোগীর স্বজনদের কোন প্রকার মারপিট করিনি।
হার্ট ফাউন্ডেশনের মালিক ডাঃ ফয়লাস আহমেদ  বলেন, কোন রোগীকে আটকে রাখা হয়নি। ছাড়পত্র করার জন্য আমার বাসায় আসছিলো। এ জন্য দেরি হয়েছে। রোগীর লোকজন হাসপাতালের স্টাফদের উপর চড়াও হয়েছে তবে স্টাফরা কোন মারপিটের ঘটনা ঘটায়নি।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ  (ওসি) আবু জিহাদ ফখরুল আলম খাঁন জানান, রোগীর স্বজনরা থানায় কল করে বিষয়টি জানালে সেখানে  পুলিশ  পাঠালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক  হয়েছে। একই সাথে রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে খুলনা মেডিকেলের জন্য রওনা করে দেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন সজিবুর রহমান জানান, রোগীর স্বজনরা অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে , হার্ট ফাউন্ডেশনে প্রতিনিয়ত রোগী আটকে রেখে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়। এর আগে করোনাকালে রোগীর  কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ারসহ হার্ড ফাউন্ডেশন নাম থাকলেও হার্টের চিকিৎসা হয় না বলেও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!