নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বড় ব্যবধানে হেরে জোর ধাক্কা আত্মবিশ্বাসে। পরের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতে অবশ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। দুই জয়ে অস্ট্রেলিয়া আসর এখন তাদের সফলতম বিশ্বকাপ। হাতছানি বিশ্বকাপে প্রথমবার সেমি-ফাইনালে খেলার। পথ অবশ্য বেশ কঠিন, এর জন্য হারাতে হবে ভারত ও পাকিস্তানকে।
সুপার টুয়েলভে ‘বি’ গ্রুপের প্রথম তিন রাউন্ড শেষে পাঁচ দলের সামনে সুযোগ আছে শেষ চারে যাওয়ার। টানা তিন হারে নেদারল্যান্ডসের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে এরই মধ্যে।
বাংলাদেশ– পয়েন্ট ৪, রান রেট: -১.৫৩৩, শেষ দুই প্রতিপক্ষ ভারত ও পাকিস্তান
প্রথম তিন ম্যাচের দুটিতে জেতা বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ৪। তারা হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়েকে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১০৪ রানের বড় ব্যবধানে হারায় নেট রান রেট এখনও নাজুক, -১.৫৩৩! তাই ভারতের সমান পয়েন্ট নিয়েও টেবিলে তিন নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের বাকি দুই প্রতিপক্ষ ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পেলে আর অন্য কিছুর দিকে তাকাতে হবে না বাংলাদেশকে। নেট রান রেট যেমনই থাক, পাঁচ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে সেমি-ফাইনালে উঠবে তারা।
দুই ম্যাচের একটিতে হারলেও বিপদ অবশ্যম্ভাবী। তখন তাকিয়ে থাকতে হবে গ্রুপের অন্য ম্যাচগুলো দিকে। তাই বাংলাদেশের সামনে ‘সহজ পথ’ একটিই- বাকি দুই ম্যাচ জেতা।
ভারত– পয়েন্ট ৪, রান রেট: ০.৮৪৪, শেষ দুই প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে
বাংলাদেশের মতো তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট ভারতের। তাদের শেষ দুই ম্যাচের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। রোহিত শর্মার দলের জন্য সমীকরণটা সহজ। তারা দুই ম্যাচই জিতলে বাকি সব হিসেব-নিকেশ এক পাশে রেখে পৌঁছে যাবে সেমি-ফাইনালে।
ভারত যদি বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতে জিম্বাবুয়ের কাছে হারে, তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের ৭ কিংবা এর বেশি পয়েন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারত যদি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জেতে এবং বাংলাদেশের কাছে হারে, তাহলে শেষ চারে চলে যেতে পারে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
বাংলাদেশ ও ভারতের ম্যাচটি হবে অ্যাডিলেইডে, আগামী বুধবার। যেখানে ৭০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে বৃষ্টির। তাই ভারতকে প্রকৃতির বাগড়া নিয়েও ভাবতে হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকা– পয়েন্ট ৫, রান রেট: ২.৭৭৭, শেষ দুই প্রতিপক্ষ পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডস
এই গ্রুপে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। পার্থে রোববার ভারতকে হারানোর পর তিন ম্যাচে তাদের রয়েছে ৫ পয়েন্ট। তারা শেষ দুই ম্যাচ খেলবে পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। এর একটিতে জিতলেও সমস্যা নেই তাদের। ভালো নেট রান রেটের কারণে সেমি-ফাইনালের টিকেট পেয়ে যাবে তারা।
পাকিস্তান– পয়েন্ট ২, রান রেট: ০.৭৬৫, শেষ দুই প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশ
চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের পর জিম্বাবুয়ের কাছেও হেরেছে পাকিস্তান। তবে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সেমি-ফাইনাল খেলার গাণিতিক সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রেখেছে তারা। শেষ দুই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশকে বড় ব্যবধানে হারাতে পারলে এবং অন্যান্য ফলাফল পক্ষে এলে শেষ চারে যেতে পারবে বাবর আজমরা।
পাকিস্তান শেষ দুই ম্যাচ জিতলে এবং বাংলাদেশের কাছে হারার পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ভারত জিতলে; এশিয়ার ৩ দলেরই পয়েন্ট হবে ৬ করে। রান রেটে কিছুটা এগিয়ে থাকায় তখন সেমি-ফাইনালে জায়গা করে নেওয়া সম্ভাবনা বেশি থাকবে পাকিস্তানের।
জিম্বাবুয়ে– পয়েন্ট ৩, রান রেট: -০.০৫০, শেষ দুই প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস ও ভারত
পাকিস্তানকে হারিয়ে চমক দেখানো জিম্বাবুয়ের সম্ভাবনাও শেষ হয়ে যায়নি। বাংলাদেশের কাছে হারের পর তিন ম্যাচে তাদের রয়েছে ৩ পয়েন্ট। বাকি দুই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস ও ভারত। দুটি ম্যাচই জিততে পারলে সেরা চারে উঠে যাবে তারা। এক ম্যাচ হারলেও শেষ হয়ে যাবে আশা।
নেদারল্যান্ডস– পয়েন্ট ০, রান রেট: -১.৯৪৮, শেষ দুই প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকা
নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচের সবকটিতে হেরে বিশ্বকাপ থেকে এরই মধ্যে ছিটকে পড়েছে নেদারল্যান্ডস।
বাকি দলগুলোর জন্য গাণিতিক বিবেচনায় যেকোনো কিছু সম্ভব। তবে মূল লড়াই হবে মাঠে। অনিশ্চয়তায় ভরা খেলাটিতে নতুন কোন চমক যে দেখা যাবে না, তা আগেভাগে বলার সুযোগ নেই। পাশাপাশি বৃষ্টির কথাও মাথায় রাখতে হবে সব দলকে। কোনো ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে আরও একবার ওলটপালট হবে গ্রুপের সমীকরণ।