জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়ার পর নিউজিল্যান্ড; টানা তিনটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় বাংলাদেশের। এবার মিশন বিশ্বকাপ, আগামী ১৭ অক্টোবর শুরু হবে কুড়ি ওভারের ফরম্যাটের মেগা আসর। যেখানে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নামবে টাইগাররা। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জানালেন, এই তিন সিরিজ জয়ের ধারাবাহিকতা বিশ্বকাপে নিতে চান তারা।
তবে আজকের উইকেট ছিল তুলনামূলক সহজ ও মোটামুটি স্পোর্টিং। কিন্তু এমন পিচেও টাইগারদের ব্যাটিংয়ের সেই আগের করুণ অবস্থা। ১৩৪ রানেই আটকে থাকা। ফলাফল, ২৭ রানের পরাজয়।
বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে ঘরের মাঠে এ শ্রীহীন ব্যাটিং কি আদর্শ প্রস্তুতির নিদর্শন? সত্যিই কি নিজেদের ভালোভাবে প্রস্তুত করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাচ্ছে টাইগাররা? তবে বিশ্বকাপ মিশনে ভালো করবে এমনটাই প্রত্যাশা বিসিবি ও খেলোয়াড়দের।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচ শেষে আজ (শুক্রবার) পুরষ্কার বিতরণী মঞ্চে দাঁড়িয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘গত তিন সিরিজে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি। যে কারণে সবকয়টিই জিততে পেরেছি। এটা বড় একটা বুস্ট। আশা করি, যখন আমরা বিশ্বকাপে যাবো, তখন সেখানেও জয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে।’
পাঁচ ম্যাচ সিরিজে চতুর্থ ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। আজ পঞ্চম ম্যাচে কিউইদের সঙ্গে পেরে উঠেনি স্বাগতিকরা। ম্যাচ হেরেছে ২৭ রানের ব্যবধানে। মাহমুদউল্লাহ জানালেন, এ ম্যাচেও জিততে চেয়েছিল দল। তবে শেষপর্যন্ত হেরে গেলেও সিরিজ জিততে পেরে খুশি টাইগাররা।
মাহমুদউল্লাহ জানালেন, ‘আজকেও আমরা জিততে চেয়েছিলাম। কিন্তু নিউজিল্যান্ড সত্যিই ভালো ব্যাটিং করেছে। আমরা রান তাড়ায় ভালো করিনি তবে সিরিজ জিততে পেরে খুশি। আমি মনে করি, বোলাররা ভালোই করেছে। তবে শেষটা ভালো হয়নি। স্পিনাররা দারুণ বোলিং করেছে। শরিফুল শুরুতে দুই উইকেট নিয়ে আমাদের মোমেন্টাম এনে দিয়েছে।’
নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ১৬২ রানের লক্ষ্য টপকাতে নেমে ১৩৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। মাহমুদউল্লাহ দুষলেন শুরুর দিকের ব্যাটসম্যানদের, ‘রান তাড়ার বিষয়টি হলো, আমরা শুরুটা ভালো করতে পারিনি। আফিফ এবং আমি জুটি গড়ার চেষ্টা করেছি কিন্তু তাদের বোলাররা সত্যিই ভালো বোলিং করেছে।’
এদিকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন মনে করছেন, টানা তিনটি সিরিজ জয় বিশ্বকাপের আগে খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। তার কথা, ‘যেহেতু পরপর তিনটা সিরিজ জিতলাম, এটা খেলোয়াড়দের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি করবে। তাই আমি বলব এ সিরিজগুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ যে অবস্থায় ছিলাম, সে অবস্থায় গেলে আমার ধারণা আরও খারাপ হতো।’
যদিও বিসিবি প্রধান বলেননি, প্রস্তুতিটা একদম আদর্শ হয়েছে। তার ভাষায়, ‘প্রস্তুতি ভালো নেয়ার একটা সুযোগ ছিল।’ এরপরের কথাটি উহ্য থেকে গেছে। যার ভাবার্থ হলো, সে সুযোগ কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি।
তারপরও শেষ তিন সিরিজ জয় বিসিবি সভাপতির কাছে বড় প্রাপ্তি। কেন, সেটাও ব্যাখ্যা দিলেন পাপন, ‘কিছুদিন আগেও আমরা একদম তলানিতে ছিলাম টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে। আসলে টি-টোয়েন্টির জন্য যেমন দল হওয়া দরকার, আমাদের দলটা সেই রকম না। সেজন্য আমরা একটু পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করার চেষ্টা করেছি।’
পাপনের যোগ করেন, ‘প্রথমে অস্ট্রেলিয়া, পরে নিউজিল্যান্ডের সাথে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ জিতলাম। এগুলো আমাদের জন্য একটা অর্জন। এখন পারফরম্যান্সের কথা যদি বলতে হয়, আমি বলবো যে টি-টোয়েন্টিতে যেমন দরকার, আমরা সেরকম পারফরম্যান্স দেখিনি। এটাতে কোনো সন্দেহ নেই। অনেকে বলতে পারে যে, ভালো ব্যাটিং কন্ডিশন যদি হয়, পিচ যদি ভালো হয়, তাহলে ওরা ভালো করবে। আমরা আশা করতে পারি, হয়তো ভালো হতে পারে।’
টাইগারদের ব্যাটিং পারফরম্যান্স সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে বিসিবি সভাপতি প্রথম ৬ ওভারের পাওয়ার প্লে‘তে ব্যাটিং ভালো না হওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তো প্রথম ৬ ওভারের অ্যাডভান্টেজটাই পাচ্ছি না।’