বাগেরহাটের চিতলমারীর চাষিরা নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আগাম টমেটো চাষে সাফল্য অর্জন করেছেন। তারা প্রতিকুল আবহাওয়াকে মোকাবেলা করে টমেটোর বাম্পার ফলন ফলিয়েছেন। আর এই বাম্পার ফলনকে ঘিরে এ উপজেলার ১৫ হাজার চাষি ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন। তাদের উৎপাদিত টমেটো দেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রাক ভরে যেতে শুরু করেছে। নায্যমূল্য পেলে এবং বেশী করে বাইরের পাইকারি ব্যবসায়ী এলে অবশ্যই ভাগ্য বদল হবে বলে চাষিরা জানিয়েছেন।
চিতলমারী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এ উপজেলায় মোট এক হাজার ৫২৫ একর জমিতে আগাম টমেটোর চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হাইটম জাত ৫৭৩ একর, বিউটিফুল-১ জাত ৯৯ একর, লাভলী ১৩১ একর, চক্র ৯৪ একর, পানপাতা ২২১ একর, বিজলী ১২ একর, বিউটিফুল-২ জাত ২৪৭ একর, বিপুল প্লাস ৭০ একর, মেজর ৯৭ একর, বাহুবলী-২ জাত ৭০ একর ও অন্যান্য ২০ একর জাতের টমেটো।
আগাম জাত তাই প্রথম দিকে বৃষ্টির কারণে অনেক টমেটো চাষির ২-৩ বারও চারা রোপণ করতে হয়েছে। এছাড়াও তারা এ বছর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আগাম টমেটো চাষে সাফল্য অর্জন করেছেন। প্রতিকূল আবহাওয়াকে মোকাবেলা করে টমেটোর বাম্পার ফলন ফলিয়েছেন। আর এই বাম্পার ফলনকে ঘিরে এ উপজেলার ১৫ হাজার চাষি ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন।
ইতিমধ্যে শরীয়তপুর, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা চিতলমারী উপজেলার বিভিন্ন টমেটোর আড়তে আসতে শুরু করেছেন। বর্তমান এখান থেকে প্রতিদিন ২০-৩০ ট্রাক টমেটো দেশের বিভিন্ন শহরে যাচ্ছে। আগামীতে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক টমেটো উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রথম দিকে প্রতি মন টমেটো দুই হাজার ৮শ’ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এখন প্রতি মন টমেটো এক হাজার ২০০ টাকা থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার দড়িউমাজুড়ি গ্রামের টমেটো চাষি অনিমা বাড়ৈ, নকুল বিশ্বাস, বিউটি মন্ডল, বিধান রায়, নির্মল রায়, মিলন হীরা ও মুকন্দ মন্ডলসহ অনেকে জানান, এ বছর অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। কষ্ট হলেও তারা সার্থক। তাদের ক্ষেতে টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। টমেটোর বাম্পার ফলনকে ঘিরে তারা ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন। উৎপাদিত টমেটোর নায্যমূল্য এবং বেশী করে বাইরের পাইকারী ব্যাপারীরা এলে অবশ্যই তাদের ভাগ্য বদল হবে। সেই সাথে মিটবে সকল ধারদেনা।
শরীয়তপুর থেকে আসা পাইকারী ব্যবসায়ী মোঃ আবুল কালাম ও মোঃ মোতালেব হোসেন জানান, গত ১৫ দিন আগে তারা চিতলমারীতে টমেটো ক্রয়ের জন্য এসেছেন। আরও দুই মাস থাকবেন। বর্তমানে প্রতি মন টমেটো এক হাজার ২০০ টাকা থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা দরে ক্রয় করছেন। এ বাজার দর বজায় থাকলে চাষিরা লাভবান হবেন।
এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানান, আগাম টমেটো চাষে এ উপজেলার চাষিরা সাফল্য অর্জন করেছেন। এবার টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে চাষিরা লাভবান হবেন। এছাড়া কৃষি বিভাগ প্রথম থেকেই চাষিদের খোঁজ-খবর নিচ্ছে ও সার্বিক সহযোগিতা করছে।
খুলনা গেজেট/এনএম