খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইপিএল নিলামে অবিক্রিত মোস্তাফিজুর রহমান, ভিত্তিমূল্য ছিলো ২ কোটি রুপি
  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি
  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

ঝুঁকিতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আউটডোর ও প্রশাসনিক ভবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

চল্লিশ বছর আগে নির্মিত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরাজীর্ণ ভবনে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। ছাদের পলেস্তারা আর বড় বড় সিমেন্টের দলা যখন তখন খসে ও ভেঙ্গে পড়ছে। এরপরও কয়েক বছর আগে দূর্বল এই ভবনের এক তলা সংস্কার করে তার উপর দুই তলা উর্দ্ধোমুখি ভবন সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, যেকোন সময় হাসপাতালের আউডডোর ও প্রশাসনিক ভবনের ছাদ ভেঙ্গে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।

হাসপাতালের জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুকি নিয়ে চিকিৎসক, সেবিকা ও স্টাফরা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। নিয়মিত ৪ থেকে ৫শ` জন চিকিৎসা সেবা প্রার্থীরা আসছেন এই হাসপাতালে। জরাজীর্ণ এই ভবনের ছাদের পলেস্তারা ধসে পড়ে- ইতিমধ্যে অনেক রোগী আহত হয়েছেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পরও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরাজীর্ণ এই ভবন সংস্কারে কার্যকরি কোন পদক্ষেপ আজোও গ্রহণ করা হয়নি। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, ভবন সংস্কারের জন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে অনুরোধ করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে যানা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাছখোলা গ্রামের আব্দুল জব্বারের স্ত্রী আয়েসা খাতুন গত ২ অক্টোবর দুপুরে তার পুতনিকে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। জরুরী বিভাগে শিশুটির ভর্তির সময় ভবনের নীচে বাইরে দাড়িয়ে থাকা আয়েসা খাতুনের মাথায় আকর্ষিকভাবে ছাদের পলেস্তারা ভেঙ্গে পড়লে তিনি গুরুত্বর আহত হন। তাৎক্ষনিকভাবে গুরুতর অসুস্থ শিশুর চিকিৎসা বন্ধ রেখে দাদী আয়েসাকে নিয়ে চিকিৎসায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন চিকিৎসকরা। এঘটনার পর বৃদ্ধার মাথায় ২৮টি সেলাই দিতে হয়েছে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। ছোট খাট এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে সদর হাসপাতালে। ফলে দীর্ঘদিনের পুরাতন আর জরাজীর্ণ ভবন ভেঙ্গে নতুনভাবে নির্মাণের দাবি জেলাবাসীর।

হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করে বলেন, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে এসে কর্ণিশের পলেস্তারা ভেঙ্গে মাথায় পড়ে আহত আয়েশার সুচিকিৎসা হয়নি। কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে চিকিৎসা শেষে তাকে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। পুরাতন এবং নিন্মমানের ও দূর্বল এই ভবনের অবস্থা এখন খুবি আশংখা জনক। প্রতিদিন ভবনের কোথাও না কোথাও পলেস্তারা ভেঙ্গে পড়ছে। এরপরও ছাদের উপর রুম করে টিন সেড দিয়ে ভবন বাড়িয়ে ঘর নির্মাণ করে সেখানেই মেডিসিনের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছে। এই হাসপাতালে চাকুরিরত কর্মকর্তা ও কর্মচারি এবং রোগী ও তার সঙ্গে আসা স্বজনদের প্রতি মুহুর্তে জীবনের ঝুকি নিয়ে থাকতে হচ্ছে হাসপাতালে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামান হাসপাতালের ঝুকিপূর্ণ ভবনের কথা স্বীকার করে বলেন, যে কোন মুহুর্ত্বে বড় ধরণের দুর্ঘনাটনা ঘটতে পারে। হতাহতের ঘটনা এড়াতে ভবনটির এখুনি সংস্কার বা নতুনভাবে নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ হুসাইন সাফায়াত জানান, আশির দশকের এই দূর্বল ভবনের উর্দ্ধোমুখি সম্প্রসারণে ঝুঁকি আরও বেড়েছে। ভবনের চাপ তো আছেই তার সাথে রোগির চাপ আরো বাড়তি। দ্রুত সংস্কারের জন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে সিভিল সার্জন আরো বলেন, ভেঙ্গে পড়লে বড় ধরণের হতাহতের ঘটনা ঘটবে। তাই বাজেট আসলে স্বাস্থ‌্য অধিদপ্তর সংস্কার করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গতঃ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল আশির দশকে নির্মিত ভবনে ৫০ শয্যা করা হয়। এরপর ১৯৯৭ সালের ২৭ জুন একই ভবনে ১শ` শয্যায় উন্নীত হয়। পর্যায়ক্রমে দূর্বল ভবনে উর্দ্ধোমুখি সম্প্রসারণ করায় আউটডোর ও প্রশাসনিক ভবনসহ সকল ভবনই চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। ফলে বড় ধরণের হতাহতের ঘটনা এড়াতে নতুন ভবন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।

খুলনা গেজেট / টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!