ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলার কারনে এন্টিভেনাম মজুদ থাকার পরও অবহেলায় পঞ্চম শ্রেনীর এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এমন অবহেলা ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে প্রতিনিয়ত মানুষ মারা গেলেও কোন জবাবদিহীতা নেই এখানে। রাজনৈতিক বা প্রভাবশালী কোন রোগী আসলেই চাপ কমানোর জন্য অহরহ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ফরিদপুর ও ঢাকায়। ফলে অনেক হতদরিদ্র রোগী ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে মারা যাচ্ছে।
হরিণাকুন্ডু উপজেলার কাচারীতোলা গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রী লিলি খাতুন সাপে কামড়ায় গত শনিবার দিনগত রাতে। রাতেই তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। জরুরী বিভাগ থেকে তাকে মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।
রোস্টার ডিউটির তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার দিন রাতে ডিউটিতে ছিলেন ডাঃ রাজিব। ব্যবস্থাপত্রে এন্টিভেনাম ইনজেকশন দেওয়ার কোন নির্দেশনা না থাকায় ডিউটি নার্স এন্টিভেনাম দিতে পারেনি। ফলে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে কুষ্টিয়া হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
লিলির ভাই আব্দুল আজিজ অভিযোগ করেন, বার বার এন্টিভেনাম ইনজেকশন দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও নার্স ডাক্তারের অনুমতি না থাকায় দেননি। ফলে কুষ্টিয়া হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই মারা যায় লিলি। চোখের সামনে বোনের মৃত্যু যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। এ ঘটনায় তার স্বজনরা ক্ষুদ্ধ হন। বিষয়টি হাসপাতালের তত্বাবধায়ককে জানানো হলেও কোন কর্ণপাত করেন নি বলে রোগীর স্বজনরা জানান।
ঘটনার দিন রাতে মেডিসিন ওয়ার্ডে ডিউটিরত একাধিক নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ডিউটি ডাক্তার ব্যবস্থা পত্রে এন্টিভেনাম উল্লেখ করেনি। যে কারণে লিলিকে ইনজেকশন পুশ করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ জাকির হোসেন ও আশরাফুল ইসলাম রিপন তাদের বকাঝকা করেছেন বলেও ওই নার্সরা উল্লেখ করেন।
এন্টিভেনাম মজুদ থাকার পরও কেন সাপে কাটা রোগীকে দেওয়া হলো না বিষয়টি জানতে ঘটনার দিন রাতে ডিউটিরত চিকিৎসক রাজিবের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে সোমবার(১৩ জুন) বিকালে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি। ফোন ধরেননি তত্বাবধায়ক ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলামও।
অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালে যোগদানকৃত চিকিৎসকরা বেশির ভাগই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। ছেড়াকাটা রোগী ছাড়া তাদের বড় সমস্যায় চিকিৎসা দেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই বল্লেই চলে। তাছাড়া রাতে একজন মুমূর্ষু রোগীর জন্য কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাওয়া দুস্কর বলেও ভুক্তভোগী রোগীরা অভিযোগ করেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই