খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ পৌষ, ১৪৩১ | ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ঢাকার চিঠি গ্রহণ করেছে দিল্লি, নিশ্চিত করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী মুখপাত্র
  ২০২৫ সালে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছুটি ৭৬ দিন, একটানা বন্ধ ২৮ দিন
চার জন শিক্ষার্থী

ঝিনাইদহে সড়কে নিহত বেড়ে ১২

গেজেট ডেস্ক

ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে যশোর সদর হাসপাতালে আরো একজন মারা গেছেন। তার বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে। এ নিয়ে ওই দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জনই শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। বাকি শিক্ষার্থীরা হলেন, কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের সুন্দরপুর গ্রামের ইছাহাক মণ্ডলের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান কল্লোল। কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের রণজিত দাসের ছেলে সনাতন দাশ (২৫), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে রেশমা (২৬), আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ গ্রামের জান্নাতুল বিশ্বাসের ছেলে ওয়ালিউল আলম শুভ (২৫)। এর মধ্যে রেশমা, সনাতন দাশ ও ওয়ালিউল আলম শুভ অনার্সের পরীক্ষার্থী।

এছাড়া দুর্ঘটনায় শৈলকুপা উপজেলার বগুড়া গ্রামের মৃত মহরম বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল আজিজ (৭৫), সদর উপজেলার নাথকুন্ডু গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদের ছেলে ইউনুস আলী (৩২), কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের ইসাহাক আলীর ছেলে মুস্তাফিজুর রহমান (২২), বাসের ড্রাইভার মাগুরা জেলার উজ্জল হোসেন (৩৫), কোটচাঁদপুর উপজেলার হরিণদিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে হারুনুর রশিদ সোহাগ (২৪)। নিহত অন্যদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

নিহত কল্লোলের ফুফাতো ভাই মিশন আলী বলেন, কল্লোল সাতক্ষীরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে চাকরি করতেন। মাস্টার্স পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাড়িতে ছুটি নিয়ে এসেছিলেন। পরীক্ষা শেষ করে বাড়িতে ফেরার পথে বারোবাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি।

নিহত রেশমার ভাই সোহেল রানা জানান, তার বোন অনার্স শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে ফিরছিল। হঠাৎ ফোন আসে যে বোন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে এসে বোনের লাশ শনাক্ত করেছি। শেষ পরীক্ষা দিয়ে তার বোন আর বাড়ি ফিরল না। শেষ পরীক্ষা দিয়ে বোনেরও শেষ বিদায় হয়ে গেল।

জানা গেছে, বাসটিতে যাত্রী ছিল ৪০ জনের বেশি। ওভারটেক করতে গিয়ে বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান ১১ জন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। এর মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ওই বাসেই যাত্রী হিসেবে ছিলেন সাতক্ষীরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা।

সাতক্ষীরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিদর্শক বিজয় কুমার বলেন, মোস্তাফিজুরের নিহতের কথা আমরা শুনেছি। শোনামাত্রই সেখানে অফিস থেকে দুইজনকে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার তার কর্মস্থলে ফেরার কথা ছিল। মাস্টার্স পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সে ছুটি নিয়ে বাড়িতে গিয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার মাগুরাগামী জিকে পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো গ-১১০২১৪) যাত্রী নিয়ে যশোর থেকে মাগুরার দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বাসটি বারোবাজার পার হয়ে আমজাদ আলী ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছলে বিপরীত থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

এতে যাত্রীবাহী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার উপর আড়াআড়ি হয়ে উল্টে পড়ে। এতে যাত্রীরা হতাহত হন। এ ঘটনায় সড়কটিতে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ঘটনাস্থলের উভয় পাশে শত শত বাস ট্রাক আটকে পড়ে। খবর পেয়ে স্থানীয় জনতার সাথে কালীগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা আহত ও নিহতদের উদ্ধার করেন।

কালীগঞ্জ দমকল বাহিনীর স্টেশন অফিসার শেখ মামুনুর রশিদ বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করি এবং উদ্ধারকৃত রোগীদের মধ্যে একজন রোগী যশোর নেওয়ার পথে ও কোটচাঁদপুরের নিজ বাড়িতে একজন মারা যান। সব মিলিয়ে ১১ জন মারা গেছেন। পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাসের মধ্যে থেকে হতাহতদের উদ্ধার করি। আহতদের কালীগঞ্জ ও যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, আহতদের উদ্ধার করে যশোর ও কালীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!