গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে বিবিজান বেগম (৪৫) নামের এক নারীকে ধর্ষণচেষ্টায় বাধা দিলে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। নড়াইল জেলা শহরের ডুমুরতলা গ্রামের মৃত চান মোল্লার ছেলে ইয়াদ আলী পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে র্যাবে সোপর্দ করেন।
এ ঘটনায় ওই দিন নিহতের ছেলে আবু জাফর বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে র্যাব ইয়াদ আলীকে পুলিশে সোপর্দ করে। মামলার পর আসামিকে নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। আঘাতের ধরন একই সন্দেহ হলে ওই দুই হত্যার সঙ্গে সে জড়িত কি না, তা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। একপর্যায়ে ইয়াদ আলী স্বীকার করেন আরও দুটি হত্যাকাণ্ডের কথা।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার বলেন, ‘বিবিজান বেগম নামের ওই নারীকে হত্যার পর আঘাতের ধরন দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। এর আগে গত ৬ জানুয়ারি তেঁতুলতলা এম কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে ইলিয়াস পাটোয়ারী ও ৯ জানুয়ারি লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিঁড়ির নিচ থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। তাদেরও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা ইয়াদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করি। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে ওই দুটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করে।’
ইয়াদ আলীর দেওয়া বর্ণনার বরাত দিয়ে আবুল বাশার বলেন, ‘গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে এম কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় ইলিয়াস পাটোয়ারিকে টিউবওয়েলের হাতল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। এর আগে লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তিকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। তার পচা-গলা লাশের গন্ধ আশপাশের মানুষ বুঝতে পেরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। আমরা তদন্ত করে ও তার হত্যার বর্ণনা দেখে এটা নিশ্চিত হয়েছি যে, বিকৃত যৌনাচার ও ধর্ষণে বাধা দেওয়ার কারণে ইয়াদ আলী এই তিনটি হত্যা করেছে।’
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মো. সোহেল রানা বলেন, ‘তিনটি ঘটনার মধ্যে দুটিতে হত্যা মামলা ও একটিতে অপমৃত্যু মামলা হয়েছিল। এখন তিনটিই হত্যা মামলা বলে গণ্য হবে। আমরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছি। ইয়াদ আলী আর কোনো হত্যার সঙ্গে জড়িত কি না, তা বের করার চেষ্টা করছি। ইয়াদ আলী মাদকাসক্ত। তার এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, সে মাদক সেবন করে। আমাদের তদন্ত অব্যাহত আছে।’
খুলনা গেজেট/এএ