ঝিনাইদহের মহেশপুরে ব্যাংকের মধ্যে ব্যাংক খুলে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে ৫ কোটি টাকা হাতি নিয়ে পালিয়েছেন আল আরাফা ব্যাংকের কোটচাঁদপুর শাখার এজেন্ট আহসানগীর। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেছেন টাকা লগ্নিকারী এক গ্রাহক। আহসানগীর মহেশপুর উপজেলার কাকিলাদাড়ি গ্রামের আমিনুর ইসলাম (শান্তির) ছেলে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে কোটচাঁদপুরে আল-আরাফা এজেন্ট ব্যাংকের শাখা খোলা হয়। চাকুরী দেয়া হয় স্থানীয় যুবকদের। এর জন্য তাদের কাছ থেকে নেয়া হয় টাকা। যার মধ্যে রয়েছে ব্যাংকের অপারেশন ম্যানেজার জুবায়ের আলমের ৩লক্ষ, টেইলর এনামুল হকের ১লক্ষ, নুরুনাহারের ৩লক্ষ, মুক্তার হোসেনের ১লক্ষ, জাকির হোসেনের ১লক্ষ, আলামিন হোসেনের ১লক্ষ, শামীম হোসেনের ১লক্ষ, সুজন হোসেনর ১লক্ষ, চামেলি খাতুনের ৩লক্ষ, আরিফা খাতুনের ৩লক্ষ।
আরো জানা যায়, ব্যাংকে স্থানীয় যুবকদের চাকুরী দেয়ায় দ্রুত ব্যাংকটি দ্রুত পরিচিতি লাভ করে এলাকায় । এ সুযোগে ব্যাংকের আহসানগীর অধিক মূনাফা দেয়ার কথা বলে এলাকার মানুষের কাছ থেকে ৫ কোটিরও অধিক টাকা হাতি নিয়ে নিজের গ্রে মেটাল ইন্ড্রাষ্ট্রিজের হিসাব নাম্বারে জমা করেন। বিনিময়ে তারা পাবেন লাখে ১হাজার ৫০ টাকা। আর এ চুক্তিতে ওই ব্যাংকে টাকা লগ্নি করেছেন হাফিজা হ্যাপী ১১লক্ষ, আল আলী ১১লক্ষ, সাইদুজ্জামান ২লক্ষ ৭০ হাজার, লিটন হোসেন ৬লক্ষ, শাহাজান আলী ১০লক্ষ, আরিফ হোসেন ১৩ লক্ষ, ৮০ হাজার, নয়ন ইসলাম ২লক্ষ, হাসান আলী ২লক্ষ, জাহাঙ্গীর হোসেন ২লক্ষ, ইমরান হোসেন ৩লক্ষ, মামুন হোসেন ৩লক্ষ, ফাতেমা বেগম ১লক্ষ ৫০ হাজার। এছাড়া ও আহসানগীর জীবননগরের আন্দোল-বাড়িয়া ও হরিণাকুন্ড থানায় ওই ব্যাংকের শাখা খুলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ব্যাংকের গ্রাহক শাহাজান আলী বলেন, ব্যাংকে ৩ বছরের জন্য টাকা ফিষ্ট করতে গিয়ে ছিলাম। এ সময় এজেন্ট আহসানগীর টাকা নিয়ে এ স্লিপ লিখে দেন। এরপর বলেন প্রতি মাসে ১ হাজার ৫০ টাকা করে মুনাফা নিয়ে যাবেন।
তিনি বলেন,আমাদের যাদের টাকা নিয়ে গেছেন। এরমধ্যে ১৪/১৫ জনের খোজ মিলেছে। তবে এর বাইরে আরো মানুষ আছেন, যারা এখনও জানেন না ব্যাংকের এ অবস্থার কথা। আমার জানা মতে ৫ কোটিরও বেশি টাকা নিয়ে পালিয়েছেন ওই এজেন্ট। এ ব্যাপারে আমরা সবাই থানায় অভিযোগ করবো।
পলাতক থাকায় এ ব্যাপারে ব্যাংকের এজেন্ট আহসানগীরের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর ভাই আলমগীর হোসেন বলেন, ১৪ বছর ধরে তাঁর সঙ্গে কোন যোগাযোগ নাই। তবে টাকা নিয়ে পালিয়েছে শুনছি। কোথায় আছে জানিনা।
এ ব্যাপার স্ত্রী নাইস খাতুন বলেন, তার ব্যবসা সম্পর্কে আমাকে কিছু বলত না। এখন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, মানুষ বাড়িতে আসছে, এ কারনে জানতে পারছি। তবে কোথায় আছে জানিনা। সর্বশেষ ৮ আগষ্ট আমার সঙ্গে কথা হয়। এর আগে আমি গ্রামের বাড়ি কাকিলা দাড়িতে ছিলাম। মানুষ গিয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। এ কারনে নিরাপত্তার জন্য বাইরে চলে এসেছি।
ব্যাংকের কোটচাঁদপুর শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, এ ঘটনার পর আমি দায়িত্বে আছি। তবে শাখাটি দেখা শোনা করছেন ঝিনাইদহ অফিস। তবে যে ঘটনা ঘটেছে এর দায়ভার ব্যাংক নিবে না। কারন অধিক লাভের আশায় তারা ব্যক্তিগত ভাবে এজেন্টের কাছে টাকা রেখেছেন। এ খবর পেয়ে হেড অফিস থেকে খোজ খবর নিয়ে গেছেন। যা করার ওনারা করবেন।
এ প্রসঙ্গে কোটচাঁদপুর থানার উপপরিদর্শক ফরিদ হোসেন বলেন,ওই ঘটনায় কোটচাঁদপুর থানায় ব্যাংকের এজেন্ট আহসানগীর ও অপারেশন ম্যানেজার জুবায়ের আলমের নামে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এইচআরডি