স্বার্থের সংঘাত, অর্থের অভাব, পর নর-নারীতে আসক্তি, মাদকাসক্ত, যৌতুক, মতের অমিল আর আত্মসম্মান মোকাবিলায় চূড়ান্ত হচ্ছে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন নারীরাই।
ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বিবাহ বিচ্ছেদ বেড়েই চলেছে । গত ১৪ মাসে উপজেলায় ২১৯ টি বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। আগের বছরের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। নানা কারণে ক্রমেই তালাকের সংখ্যায় ভারি হচ্ছে নিকাহ রেজিস্ট্রারের রেকর্ড খাতা।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটেছে ২১৯ টি। এর মধ্যে স্ত্রীর ইচ্ছায় ৯৯ টি, স্বামীর ইচ্ছায় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৭৮ টি। আর উভয়ের আপসের মাধ্যমে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে ৪২ টি।
নিকাহ রেজিস্ট্রার মো. সাইদুর রহমান জানান, এসব বিচ্ছেদে নারীরা স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌতুক দাবি, স্বামীর বেপরোয়া জীবনযাপনসহ নানা কারণ উল্লেখ করেছেন। আর পুরুষরা তাদের নোটিশে বনিবনা না হওয়া, স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির প্রতি স্ত্রীদের অবহেলার কথা জানিয়েছেন। তুচ্ছ ঘটনাতেও বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে।
সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী জেলা জুড়ে বিবাহ বিচ্ছেদের আরও ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। জেলা নিকাহ রেজিস্ট্রারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিন বছরে জেলায় বিচ্ছেদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৭৭৮ টি। প্রতি মাসে গড়ে ২৭১.৬১ টি বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে এ জেলায়। তবে এ সংখ্যা আরও বেশিও হতে পারে বলে জানিয়েছেন ওই কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। কারণ নিকাহ রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ছাড়াও আদালত, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমেও ঘটছে এই তালাকের ঘটনা।
জেলা কাজী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ওবাইদুর রহমান জানান, করোনাকালে বিয়ে বন্ধনের চেয়ে বিচ্ছেদের ঘটনাই বেশি ঘটছে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মুন্সী ফিরোজা সুলতানা বলেন, তালাকের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে নারীদের কর্মমুখী শিক্ষার দিকে নিয়ে যেতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যাতে তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হয়।
খুলনা গেজেট/ এস আই