বসন্তবরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে ৪৫ কোটি টাকার বেশি ফুল বিকিকিনির টার্গেট করেছেন ঝিকরগাছা গদখালীর ফুলচাষী ও ব্যবসায়ীরা।
গদখালী ফুলচাষী ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির প্রধান আহবায়ক শামীম রেজা জানিয়েছেন, গত দুই বছরে করোনাভাইরাস, লকডাউন, হঠাৎ ঘুর্ণিঝড়, বৃষ্টি ও ঠান্ডার কারণে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় ফুলচাষিরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। অন্যান্য বছরের থেকে এবার ফুলের উৎপাদন বেশি চাহিদা বেশি এবং বাজার বেশ চড়া। বসন্তবরণ ও বিশ্ব ভালোবাসা এই দুই দিবসে প্রায় ২০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হওয়ায় চাষিদের মধ্যে উৎফুল্ল বিরাজ করছে।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী, পানিসারাসহ ৯টি ইউনিয়নের ১৭ শ’ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে ডার্স রোজ বা লং স্টিক রোজ, রজনীগন্ধা, গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, জিপসি, রডস্টিক, কেলেনডোলা, চন্দ্র মল্লিকা, চায়না গোলাপসহ ১৩ ধরণের ফুল। এবার নতুন করে তালিকায় যুক্ত হয়েছে নেদারল্যান্ডসের টিউলিপ নামক ফুল।
এসব ফুলচাষের সাথে জড়িত আছে এলাকার প্রায় ৬ হাজার ফুলচাষী। এখানকার উৎপাদিত ফুলই দেশের মোট চাহিদার ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ পূর্ণ করে থাকে।
প্রতিদিন সকালে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে ঝিকরগাছার গদখালীতে বসে ফুলের পাইকারী বাজার। এখান থেকেই প্রতিদিন বিভিন্ন জাতের ফুল রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে সরবরাহ হয়ে থাকে।
১৩ ফেব্রুয়ারি পয়লা ফাল্গুন- বসন্তবরণ, ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস ডে বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এ দুটি দিবসে প্রিয়জনের মন রাঙাতে চান তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সীরা। প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে ফুলই শ্রেষ্ঠ। কিছুদিন পরেই ২১ ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। তার কিছুদিন পরে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস।
গদখালী নারাঙ্গালী এলাকার ফুলচাষী আবু তাহের বলেন, চার দিবসে এবার ৩৫ লাখ টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট ছিল কিন্তু উৎপাদন বেশি হওয়ায় এবং দাম বেশির কারণে আরো বেশি বিক্রির আশা করছি। ২২ বিঘা জমিতে তিনি গ্লাডিওলাস এবং ৯ বিঘা জমিতে ভুট্টা ও রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করেছেন।
নীলকন্ঠনগর এলাকার ফুলচাষী হোসেন জানান, এবার তিনি সাড়ে চার লাখ টাকার গোলাপ বিক্রির আশা করছেন। তবে অন্য বছরের তুলনায় এবার পোকার উপদ্রব কম থাকায় উৎপাদন অনেক বেশি।
ফুলচাষী ও ব্যবসায়ী শাহাজান এবার তিনি ১২ বিঘা জমিতে, জবা, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাসের পাশাপাশি জারবেরার চাষ করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকায় বাগানে আগের চেয়ে ফুলের উৎপাদন বেশি। তারপর দামও বেশি থাকায় দশ লাখ টাকা ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা তার।
খুলনা গেজেট/ এস আই