ঝালকাঠির গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় সিমেন্টবাহী একটি ট্রাক প্রাইভেট কারসহ কয়েকটি গাড়িকে চাপা দেওয়ার ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছে। বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ১৪ জনের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ৩ জন শিশু রয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। আহত বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, টোল প্লাজায় টাকা দেওয়ার অপেক্ষায় ছিল ইজিবাইক, প্রাইভেট কারসহ একাধিক গাড়ি। সিমেন্টবাহী ট্রাকটি সামনে থাকা সব গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে প্রতিবন্ধক ভেঙে রাস্তার পাশে চলে যায়। সিমেন্টবাহী ওই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে আছে একটি প্রাইভেট কার। ওই গাড়িতে শিশুসহ ৬ জন আরোহী আছেন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ কামাল হোসেন বলেন, দুর্ঘটনায় আমার ছোট ভাই দশম শ্রেণির ছাত্র আতিকুর রহমান সাদি নিহত হয়েছেন। আমার ভাই চোখের সামনেই মারা গেল। আমি কিছুই করতে পারিনি।
শেখেরহাট ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আতফি আহম্মেদ বলেন, আমার ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ কামাল হোসেনের শ্যালিকার বৌভাতে সবাই যাচ্ছিল। কামাল হোসেন আমাকে জানিয়েছে, মোট ১৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১০ জন কামালের নিজের ও শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়-স্বজন।
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক তারাহ গুল নিঝুম জানান, ঝালকাঠির গাবখান সেতু টোলপ্লাজায় সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক ৩টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও একটি প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে চাপা দেয়। এতে সাতজন ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে আহতদের গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিলে সেখানে আরও ৭ জন মারা যান।
তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারের জন্য ৫ লাখ টাকা, যারা পঙ্গুত্বের শিকার হবেন তাদের জন্য ৩ লাখ টাকা এবং আহতদের জন্য ১ লাখ টাকা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্পেশাল অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় সিমেন্টবোঝাই ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহনগুলোর উদ্ধার কার্যক্রম চলমান আছে।
দুর্ঘটনার তদন্তে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রুহুল আমিনকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএম