শুরুতে উইকেট হারালেও দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছে আফগানিস্তান। হজরতুল্লাহ জাজাই ও ওসমান গণির অর্ধশত রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়ে আফগানরা। বাংলাদেশি বোলাররা আঁটসাঁট বোলিং করলেও উইকেট নিতে পারছে না। জাজাই ৩১ ও উসমান ২৯ রানে অপরাজিত আছেন।
বাংলাদেশ: ১১৫/৯ (২০ ওভার)
আফগানিস্তান: ৬৪/১ (৯.৪ ওভার)
শুরুতেই মেহেদীর আঘাত
১১৬ রান তাড়া করতে নামা আফগানিস্তানের প্রথম উইকেট ওভারের তৃতীয় বলেই পেতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু হজরতুল্লাহ জাজাইয়ের উঁচু ক্যাচ উইকেটের সামনে দাঁড়িয়ে তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন নাসুম আহমেদ। এরপর দ্বিতীয় ওভারে মেহেদী হাসান এসেই উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেন। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান রহমানুল্লাহ গুরবাজ। কিন্তু তৃতীয় বলেই আউট হন তিনি। মেহেদীর বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। ৫ বল খেলে ৩ রান করে আউট হন গুরবাজ।
পাওয়ার প্লে-তে ১ উইকেট হারিয়ে ৩৪
পাওয়ার প্লেতে আফগানিস্তানকে লাগামছাড়া হতে দেয়নি বাংলাদেশ। ১ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩৪ রান তুলে আফগানরা। নাসুম-শরিফুলের বলে এলবিডব্লিউর সুযোগ তৈরি হয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভাগ্য সহায় হয়নি।
বিব্রতকর ব্যাটিংয়ে ১১৫ রানে থামলো বাংলাদেশ
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। বিব্রতকর ব্যাটিং ৯ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করে বাংলাদেশ।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে বাংলাদেশ হারাতে থাকে উইকেট। মাঝে মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক ৪৩ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দিয়েছেন। সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন মুশফিক। ২১ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। এ ছাড়া ২০ রানের ঘর কেউ পার হতে পারেননি। আফগানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট করে নেন ফজল হক ফারুকি ও আজমতুল্লাহ ওমরজাই।
শেষ দিকে উইকেটের মিছিল, ৬ রানে নেই ৪ উইকেট
১৮তম ওভারে চতুর্থ বলে আফিফ হোসেন ফেরার পর ১৯তম ওভারের প্রথম বলে ফেরেন শরিফুল ইসলাম। এর আগে ১৭তম ওভারে ফেরেন মুশফিক-মেহেদি। আফিফ ৯ বলে ৭ রান করেন। শরিফুল রানের খাতা খুলতে পারেননি। ৬ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশ হারালো ৪ উইকেট!
একই ওভারে ফিরলেন মুশফিক-মেহেদি, বাংলাদেশের সেঞ্চুরি
ক্রিজে থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি মুশফিকুর রহি। ২৫ বলে ৩০ রান করে ফিরলেন ফজল হক ফারুকির করা ১৭তম ওভারের প্রথম বলে। তার স্লোয়ার বলে কাভারের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন মোহাম্মদ নবীর হাতে। এর দুই বল পরেই সাজঘরে ফেরেন মেহেদি হাসান। তিনি রানের খাতাই খুলতে পারেননি। এই ২ উইকেট পড়লেও বাংলাদেশ দেখা পায় তিন অঙ্কের রানের। ৯৮ বলে ১০০ রান করে বাংলাদেশ।
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে মাহমুদউল্লাহর ২ হাজার
৪৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল বাংলাদেশ। ততক্ষণে ওভারও চলছিল ১০টি! এরপর মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে বাংলাদেশ। দুজনে বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারি মেরে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন। দুজনের জুটি থেকে আসে ৩১ বলে ৪৩। কিন্তু বাগড়া দেন রশিদ খান। তার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। ৩ চারে ১৪ বলে ২১ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আজ তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এই ম্যাচ খেলতে নামার আগে তিনি ১৯ রান দূরে ছিলেন। ১১৫ ম্যাচে তিনি এই রান করেন।
৬৮ বলে ৫০ রান করেছে বাংলাদেশ
টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এটি অবিশ্বাস্য। তবে তা যেন সত্যি করে দেখালেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ৫০ রান করতে বাংলাদেশের লেগেছে ৬৮ বল! তার মধ্যে অতিরিক্ত রান আছে ৩টি। আর সময়ের হিসেব করলে ৫৭ মিনিট! এ সময় উইকেট হারিয়েছে ৪টি।
ফিরলেন সাকিবও, বিপাকে বাংলাদেশ
৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন ধুঁকছিল তখন হাল ধরতে পারেননি সাকিব আল হাসানও। আজমতুল্লাহর বলে মারতে গিয়ে উইকেটের পেছনে বল তুলে দেন আকাশে। একটু দৌড়ে গিয়ে বল তালুবন্দি করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। ১৫ বলে ৯ রান করেন তিনি। ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে বাংলাদেশ। ১০ ওভারে বাংলাদেশ ৫০ রানও পূর্ণ করতে পারেনি।
রান আউট নাঈম, তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে বাংলাদেশ
ইনিংসের নবম ওভারে রশিদ খানের বল লাগে নাঈমের পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। কিন্তু রান নিতে গিয়ে নন-স্ট্রাইক প্রান্তে করিম জানাতের থ্রোতে আউট হন বাঁহাতি এই ওপেনার ব্যাটস্যমান। ১৯ বলে ১৩ রান করেন তিনি। খেলার ৯ ওভার না যেতেই বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলে তিন উইকেট। রান হয়েছে মাত্র ৩৮!
২ উইকেট হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ
টি-টোয়েন্টিতে এ সমস্যা যেন কাটছেই না। শুরুতে রান তোলায় পারদর্শিতা দেখাতে পারছেন না বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩৩ রান করে স্বাগতিক দল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মুনিম (৪) ও চতুর্থ ওভারে ফেরেন লিটন (১০)। ক্রিজে আছেন নাঈম-সাকিব।
মুনিমের পর আউট লিটন
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মাত্র ৪ রানে ফেরেন মুনিম শাহরিয়ার। আর চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে ফেরেন লিটন দাস। আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করে ইনিংসের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন। এই ম্যাচেও ১ ছয় মেরে তেমন আভাসই দিচ্ছিলেন; কিন্তু ১০ রানে থামতে হয় তাকে। আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে ক্যাচ দেন শরফুদ্দিন আশরাফের হাতে। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান।
শুরুতেই ফিরলেন মুনিম
অভিষেকে ১৭ রান করলেও দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দুই অঙ্কের ঘর পার হতে পারেননি মুমিম শাহরিয়ার। মোহাম্মদ নবীর করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে মিড অফে ক্যাচ দেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ১০ বলে ১ চারে মুনিমের ব্যাট থেকে আসে ৪ রান। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান লিটন দাস।
শেন ওয়ার্ন-রড মার্শের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন
অস্ট্রেলিয়ার দুই কিংবদন্তি ক্রিকেটার শেন ওয়ার্ন-রড মার্শের মৃত্যুতে নীরবতা পালন করেছেন বাংলাদেশ-আফগিনাস্তিতানের ক্রিকেটাররা। ম্যাচ শুরুর আগে সাকিব আল হাসান ও রশিদ খানরা এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। ম্যাচ শুরুর ৬ মিনিট আগে দুই দলের ক্রিকেটার ও ম্যাচ অফিসিয়ালরা দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন। তার আগেই দাঁড়িয়ে যান গ্রাউন্ডসম্যানরা। ক্রিকেটারদের সঙ্গে গ্যালারির দর্শক ও প্রেস বক্সে কর্মরত সাংবাদিকরাও নীরবতা পালনে সামিল হন।
মুশফিকের শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে মুখোমুখি বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। শনিবার (৫ মার্চ) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ। আজ জিতলেই আফগানদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে শততম টি-টোয়েন্টি খেলতে নামছেন মুশফিকুর রহিম।
টি-টোয়েন্টিতে মুশফিকের সেঞ্চুরি
ক্যারিয়ারের এক অনন্য মাইলফলকে নাম লেখালেন মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সেঞ্চুরি করতে যাচ্ছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি হতে যাচ্ছে মুশফিকের শততম ম্যাচ।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এই অর্জনে নাম লেখাবেন। মুশফিকের পরেই শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের হাতছানি দিচ্ছে সাকিব আল হাসানকে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার খেলেছেন ৯৫ ম্যাচ।
টি-টোয়েন্টিতে মুশফিকের অভিষেক হয়েছে ২৮ নভেম্বর, ২০০৬ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এখন পর্যন্ত খেলা ৯৯ টি-টোয়েন্টিতে ১৯.৭৯ গড়ে মুশফিকের রান ১৪৬৫। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭২। হাফ সেঞ্চুরি ৭টি। স্ট্রাইক রেট ১১৫.৩৫।
একাদশে মুশফিক, বাদ ইয়াসির
চোট মুক্ত হয়ে বাংলাদেশ একাদশে এসেছেন মুশফিকুর রহিম, বাদ পড়েছেন ইয়াসির আলী।
মুনিম শাহরিয়ার, লিটন দাস, নাঈম শেখ, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদ।
আফগানিস্তান একদাশ
আফগান একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন মুজিব উর রহমান ও কাঈস আহমেদ।
রহমানউল্লাহ গুরবাজ, হজরতউল্লাহ জাজাই, নাজিবউল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবী (অধিনায়ক), রশিদ খান, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, ওসমান গনি, করিম জানাত, ফজল হক ফারুকি, শরফুউদ্দিন আশরাফ ও দারউইশ রাসুলি।
প্রথম সিরিজ জয়ের সুযোগ
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের জয় মাত্র ৩টিতে। ভারতের দেরাদুনে খেলা তিন ম্যাচের সিরিজে সবগুলোতেই হেরে হতে হয়েছিল হোয়াইটওয়াশ। এবার নিজেদের মাঠে দুই ম্যাচের সিরিজে জয়ের হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশকে। প্রথম ম্যাচে জিতে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে ১-০তে। আজ জিতলেই প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ।
মাহমুদউল্লাহর সামনে মাইলফলকের হাতছানি
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ একটি রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে। প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ২ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁতে তার প্রয়োজন ১৯ রান।
র্যাংকিংয়ে এগিয়ে যাওয়ার লড়াই
দুই দলের জন্য ম্যাচটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে র্যাংকিংয়ের দিক থেকে বিবেচনা করলে কেউ কাউকে ছাড় দেবে না। ২৩১ পয়েন্ট নিয়ে ৯-এ থাকা বাংলাদেশ আজ জিতলে ২৩২ পয়েন্ট নিয়ে ৮-এ উঠবে। ২ পয়েন্ট হারিয়ে ২৩০ পয়েন্ট নিয়ে আফগানিস্তান চলে যাবে ১০-এ। ভশ্নাংশ ব্যবধানে এগিয়ে ২৩০ পয়েন্ট নিয়ে ৯-এ থাকবে শ্রীলঙ্কা। আফগানিস্তান ম্যাচটি জিতে গেলে বাংলাদেশের বিপদ। ২ পয়েন্ট হারিয়ে বাংলাদেশ চলে যাবে ১০-এ। তবে সিরিজ ড্র করতে পারলে র্যাঙ্কিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলে ৭-এ উঠে যাবে অতিথিরা। ২৩৫ পয়েন্ট হবে তাদের।
খুলনা গেজেট/এএ