খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সোনারগাঁওয়ে টিস্যু গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিট
  আগামীতে সরকারের মেয়াদ হতে পারে চার বছর : আলজাজিরাকে ড. ইউনূস

১৫ ব্যক্তি ও সংগঠন পেল জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড

গে‌জেট ডেস্ক

দেশ ও মানুষের কল্যাণে যেসব তরুণ উদ্যোক্তা ও সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে তাদের ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও সিআরআইয়ের ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। আজ সোমবার সাভারের শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে এ পুরস্কার তুলে দেন তিনি।

চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই শেষে ১৫ সংগঠন ও ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হলো জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। এটি জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের পঞ্চম আসর।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা ও সিআরআইয়ের চেয়ারম্যান সজীব ওয়াজেদ জয়ের ধারণ করা বক্তব্য প্রচার করা হয়।

যুব সমাজের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে সব সময় তাদের পাশে থাকার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যুব সমাজ আমাদের মূল শক্তি। আমরা যে নির্বাচনি ইশতেহার দিয়েছি সেই ইশতেহার আমরা আমাদের যুব সমাজকে উৎসর্গ করেছি। আজ তরুণরা নিজেদের তৈরি করবে আগামী দিনের জন্য, যাতে তারা এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আর প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে এই ধারা অব্যাহত থাকে। একটা কথা মনে রাখতে হবে, আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে তরুণদের শক্তি, উদ্যোগ, উদ্যম কাজ করেছে।’

বঙ্গবন্ধু তরুণ বয়স থেকে এ দেশের নিপীড়িত-শোষিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম শুরু করেছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু তরুণদের সব ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সবসময় তরুণদের গুরুত্ব দেয়। কারণ তারাই পারে পরিবর্তন আনতে।

তরুণরাই পরিবর্তন এনে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন বিজ্ঞানের যুগ, প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আসছে। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে। যদি এই পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারি, তাহলে পিছিয়ে যেতে হবে। জ্ঞান ও মেধা দিয়ে তরুণরাই সেই পরিবর্তন আনতে পারে।’

দেশ ও মানুষের কল্যাণে যেসব তরুণ উদ্যোক্তা ও সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে তাদের পুরস্কৃত করার উদ্যোগের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘৫০ বছর আগে জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। এই দীর্ঘ সময়ে অনেক পথ পার হয়ে আসতে হয়েছে। ষড়যন্ত্র, হত্যাকাণ্ড, স্বৈরাচারী সরকার। তবে এখন ৫০ বছর পর খুব গর্ব করে বলতে পারি, বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন হচ্ছে তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।’

জয় আরও বলেন, ‘যারা নিজেদের পরিশ্রম দিয়ে নিজেদের উদ্যোগে দেশের মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা সোনার বাংলার একটি উদাহরণ। সোনার বাংলা হচ্ছে আমাদের দেশের মানুষের উন্নয়নের স্বপ্ন। আমার দেশের উন্নয়নের স্বপ্ন। দেশের প্রতিটি মানুষ যাতে সুস্থ থাকে, শান্তিতে থাকে, অভাব না থাকে; সেটাই হচ্ছে সোনার বাংলার স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণ করার জন্য আমাদের আওয়ামী লীগ সরকার পরিশ্রম করে যাচ্ছে।’

দেশের জন্য কাজ করা তরুণ উদ্যোক্তা ও সংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জয় বলেন, ‘আমাদের ভিশন ২০২১ হচ্ছে সেই স্বপ্নের একটি ভিশন। ডিজিটাল বাংলাদেশ সেই স্বপ্নের একটা উদ্যোগ। তবে শুধু সরকারের ওপর নির্ভরশীল থাকলে হবে না। আমাদের দেশে যারা দেশের জন্য পরিশ্রম করছে, তারা সময় দিচ্ছে, অর্থ দিচ্ছে…তারা কারো কাছে হাত পেতে নয়…তাদের ইচ্ছে হচ্ছে বিভিন্ন মানুষের সমস্যা সমাধান করা। তারাই হচ্ছে আমাদের সোনার বাংলার স্বপ্ন।’

প্রধানমন্ত্রী এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি। লড়াই করে রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। কেউ আমাদের স্বাধীনতা হাতে তুলে দেয়নি। তেমনি সোনার বাংলাও আমরা গড়ছি নিজেদের পরিশ্রম, নিজেদের মেধা দিয়ে। আমরা কারও ওপর নির্ভরশীল না। তাই আমি অত্যন্ত গর্বিত যে, আমাদের দেশে ইয়াং বাংলার পার্টিসিপেন্টের মতো উদ্যোগ আছে, মেধাবী-তরুণ ছেলেমেয়েরা আছে; যারা দেশের জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছে।’

পুরস্কার তুলে দেওয়ার আগে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও সিআরআইয়ের ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি সমাজের জন্য কাজ করা তরুণ উদ্যোক্ত ও ব্যক্তির প্রশংসা করেন বলেন, ‘আপনারা যেভাবে কাজ করছেন এভাবে কাজ করে যাবেন। আমরা আপনাদের কাছ থেকে অনেক উৎসাহ ও সাহস পাই। আপনারাই হচ্ছেন আমাদের ভবিষ্যৎ।’

এ সময় দেশের সব সেক্টরে আরও বেশি তরুণদের হাতে দায়িত্ব দেওয়ার সময় এসেছে মন্তব্য করে ববি বলেন, তরুণদের সামনে নিয়ে আসতে হবে, তাদের সাপোর্ট আসতে হবে।

রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ইয়াং বাংলা ও সিআরআইয়ের পক্ষ থেকে তরুণদের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তরুণ প্রজন্মকে সরাসরি অন্তর্ভুক্ত করার উদ্দেশে তাদের নতুন ধারণা ও উদ্ভাবনগুলোকে তুলে আনার জন্যই ২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর আত্মপ্রকাশ করে ইয়াং বাংলা প্ল্যাটফর্ম। ৫০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী এবং ৩১৫টির বেশি সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে চলা এ সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা বর্তমানে প্রায় তিন লাখ।

এই প্ল্যাটফর্ম থেকে তরুণদের ক্ষমতায়ন ও দেশ গঠনে তাদের অবদান তুলে ধরার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তরুণদের কাজের স্বীকৃতির জন্য জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে প্রশিক্ষণ ও নানা ধরনের সহায়তা করছে ইয়াং বাংলা। রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআইয়ের ট্রাস্টি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি দেখভাল করেন। সিআরআইয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইয়ং বাংলার মাধ্যমে তরুণদের ক্ষমতায়ন ও উদ্বুদ্ধকরণের কাজ করছেন তিনি। সিআরআই থেকে প্রকাশিত নীতি-নির্ধারণী ম্যাগাজিন হোয়াইটবোর্ডের প্রধান সম্পাদক রাদওয়ান মুজিব

এবারের জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

১. অমিয় প্রপান চক্রবর্তী (আরকা) – ধ্রুবতারা যুব উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (ডিওয়াইডিএফ): ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত ধ্রুবতারা যুব উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (ডিওয়াইডিএফ) গত ২১ বছর ধরে দেশে যুব ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নে কাজ করছে। ৪৪টি জেলায় তাদের কার্যক্রমে ৪৮ হাজার যুবক সহযোগিতা পেয়েছে।

২. মোহাম্মদ শামস জাব্বার – টেক একাডেমি: ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত টেক একাডেমির লক্ষ্য হলো গেমিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষামূলক তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া। ‘৪র্থ শিল্প বিপ্লব’-এর নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ৮ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের লালন-পালন করা, অ্যানিমেশন, কোডিং, গেম ডেভেলপমেন্ট এবং রোবটিক্সের মতো ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির দক্ষতা শিখিয়ে থাকে। এরই মধ্যে ১০০০ হাজারের মতো তরুণ এর সুবিধা পেয়েছে।টেক একাডেমি জাকার্তা এবং সান ফ্রান্সিসকোতে তারা কাজ করছে। একাডেমিটি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে।

৩. শিরিন আক্তার আশা – আসমানী যুব নারী ফাউন্ডেশন: কিশোরী ও তরুণীদের জন্য ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় আসমানী যুব নারী ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠাতা নিজে বাল্যবিবাহ থেকে বেঁচে যাবার পর এই প্রতিষ্ঠান তৈরি করে ২৯৪টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছে। এছাড়া কর্মশালার মাধ্যমে ২৫৯৫ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। স্বল্পমূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি করে কারখানাও বানিয়েছে এই প্রতিষ্ঠান।

৪. এসরাত করিম – অমল ফাউন্ডেশন: ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত অমল ফাউন্ডেশন দেশের চরাঞ্চলে জীবিকা, স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষার প্রসারে কাজ করছে। তাদের মাধ্যমে ৫২ হাজারের বেশি মানুষ সুবিধা পেয়েছে। এছাড়া তাদের সামাজিক ব্যবসা আযোয়ায় নারীদের মাধ্যমে তৈরিকৃত পণ্য বিক্রি করে ৫২ হাজার ইউএস ডলার আয় করেছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রান্তিক শিশুদের ৩টি স্কুল পরিচালনা করছে। ফোর্বস সাময়িকীতে এশিয়ায় অনূর্ধ্ব ৩০ প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি পেয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি।

৫. মাশরুর ইশরাক – থার্ড আই: ‘শেয়ার দ্য রেসপনসিবলিটি’ এই স্লোগানকে ধারণ করে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় থার্ড আই। দৃষ্টিশক্তিহীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে সেচ্ছাসেবী এই সংগঠনের মূল কার্যক্রম। এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অডিও বই, ক্লাস রেকর্ড, কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, উচ্চারণ প্রতিযোগিতাসহ কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা উন্নয়নের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে থার্ড আই। এই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সময় স্টেনোগ্রাফারের ব্যবস্থাও করছে সংগঠনটি। দৃষ্টিশক্তিহীন ৪০০ শিক্ষার্থীকে সহায়তা করেছে সংগঠনটি।

৬. সানজিদুল আলম সেবন শান – ইকোভেশন বাংলাদেশ: ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ইকোভেশন বাংলাদেশ একটি গবেষণা ও উদ্ভাবন-ভিত্তিক সামাজিক উদ্যোগ। স্বেচ্ছাসেবী এই পদ্ধতির মাধ্যমে ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ উপকার পেয়েছে। এটি রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ প্রায় ৯০ হাজার মানুষকে আলোর সুবিধা, সৌর বাতি ও রাস্তার আলোর ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এছাড়া ৩০০০ সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তি প্রশিক্ষণ নিয়ে সোলার ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন। ইকোভেশন বাংলাদেশের বিনামূল্যে ২০টির বেশি সৌর-চালিত পানি শোধনাগার থেকে ৫০ হাজার মানুষ বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে। এছাড়া পুনঃব্যবহারযোগ্য প্যাড তৈরিতে শতাধিক নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

৭. গিরি ধর দে – বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য ছবি সমগ্র: ‘বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য ছবি সমগ্র’ ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দেশের ইতিহাসের বিকৃতি রোধে ঐতিহাসিক দলিলাদি সংগ্রহ করে আসছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকালীন চেতনা বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। এখন পর্যন্ত ৭০ হাজারের বেশি ইতিহাস ভিত্তিক ছবি সংগ্রহ ও প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। ভবিষ্যতে ডিজিটাল মিউজিয়াম চালু করতে চায় তারা। ফেসবুকে এই সংগঠনটির ফলোয়ার রয়েছে ১১ লাখ এবং তার প্রতিটি পোস্টের রিচ প্রায় ১ লাখ।

৮. শাহানা আফরিন দিনা – স্টেপ এহেড: ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ”স্টেপ এহেড” কর্মসূচির মাধ্যমে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রান্তিক কিশোরী-তরুণী ও নারীদের নিয়ে কাজ করা হয়। এর আওতায় নারী স্বাস্থ্য, হাইজিন কিট বিতরণ কর্মসূচি ও নারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি হস্তশিল্প তৈরি, সেলাই, গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের প্রশিক্ষণ ও শীতল পাটি তৈরির বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেয়। এ ছাড়া হোম-ফ্যাক্টরি নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ঘরে বসেই পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরি ও বিপণনের পথ দেখিয়ে নারীদের আয় করার সুযোগ করে দেয় তারা।

৯. ফাইরুজ ফাইজাহ বেথার – মনের স্কুল: তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় মনের স্কুল।এই সংগঠনটির পক্ষ থেকে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় কাউন্সিলিং প্রদান করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সভা-সেমিনারের মাধ্যমেও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার শিক্ষা প্রদান করা হয়। ২০১৯ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের খুঁটিনাটি বিষয়ে কর্মশালার আয়োজন করে। এই সংগঠনের মাধ্যমে সমাজের গতানুগতিক ধারার কারণে মানসিক চাপে থাকা প্রায় ১১ হাজার তরুণ মানসিক স্বাস্থ্যসেবা লাভ করেছে। দেশের ৩৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই সংগঠনের প্রতিনিধি রয়েছে যেখানে সফলতার সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে মনের স্কুল।

১০. লামিয়া তানজিন তানহা – ট্রান্সএন্ড: তরুণদের দ্বারা পরিচালিত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ট্রান্সএন্ড ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। তৃতীয় লিঙ্গ এবং লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাসের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা এই সংগঠনটি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য, ক্ষমতায়ন ও উদ্যোক্তা তৈরির জন্য কাজ করছে। অনলাইন ও অফলাইন উভয় ক্ষেত্রে তাদের রয়েছে বেশ কিছু অসাধারণ অনুষ্ঠান। যার মাধ্যমে দক্ষতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সচেতনতা কার্যক্রমও পরিচালনা করছে তারা। ট্রান্সএন্ড ৩ লাখ ৪৫ হাজারেরবেশি মানুষের মাঝে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। তাদের মাধ্যমে ১৮৫ জন তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিক প্রশিক্ষণ লাভ করেছে যাদের সমাজে ‘হিজড়া’ বলে সম্বোধন করা হয়। এ ছাড়াও ১২৪ জন তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিককে তারা মূল ধারার কর্মক্ষেত্রে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছে।

১১. ইউসুফ ইবনে ইয়াকুব – রিফ্লেক্টিভ টিনস: ২০১৩ সালে আত্মপ্রকাশ করে রিফ্লেক্টিভ টিনস। উদীয়মান তরুণদের সৃজনশীলতার সর্বোচ্চ বিকাশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠান। বিগত ৮ বছরে এক লাখের বেশি সৃজনশীল কিশোর-কিশোরীকে প্রভাবিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যুক্তরাজ্য, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান এবং ভুটানসহ বেশকিছু দেশের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে উদীয়মান তরুণদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে তারা।

১২. রাতুল দেব – জেন ল্যাব: তিনটি বিষয়কে সামনে নিয়ে ২০১৫ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে জেন ল্যাব। মূলত শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সমাজের বৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা এই সংগঠনটি এখন পর্যন্ত ৩ লাখ মানুষের কাছে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িক শান্তির কথা প্রচার করে যাচ্ছে তাদের পরামর্শ কার্যক্রমের মাধ্যমে। এ ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়েও কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। ‘পিস ক্যারাভান’ এই সংগঠনের নতুন কার্যক্রম। এই উদ্যোগের আওতায় তরুণ ও পেশাজীবীদের কেন্দ্র করে শিল্প চর্চা ও ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে সমাজে শান্তির বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়।

১৩. আবু হাসান (জয়তা পলি) – দিনের আলো হিজড়া উন্নয়ন মহিলা সংস্থা: ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের উন্নয়নে দিনের আলো হিজড়া উন্নয়ন মহিলা সংস্থা ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর থেকে তারা হিজড়া সম্প্রদায়কে উন্নয়নের মূল ধারায় যুক্ত করতে কাজ করছে। মূলধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হিজড়া শিশুদের পড়াশোনা করার সুযোগ  ও ট্রান্সজেন্ডারদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এর মাধ্যমে অনেকেই উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠেছে। তাদের ৯০০ সুবিধাভোগী রয়েছে।

১৪. রিগান কুমার কানু – বাংলাদেশ চা সম্প্রদায় ছাত্র যুব পরিষদ: ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ চা সম্প্রদায় ছাত্র যুব পরিষদ চা শ্রমিকদের মধ্যে নানা সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা চালিয়ে থাকে। এর মধ্যে যুবকদের মাঝে  মাদকবিরোধী লিফলেট, পোস্টার বিতরণ করে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে কুইজ প্রতিযোগিতা, ভর্তি পরীক্ষায় আবাসনে সহায়তা করে।

১৫. মো. নুরুল আলম – মেধাবী কল্যাণ সংস্থা (এমকেএস): ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত মেধাবী কল্যাণ সংস্থাটি (এমকেএস) আর্থিক কারণে পড়াশোনা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সহায়তা দিয়ে থাকে। এর আওতায় চিলমারী, কুড়িগ্রামের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের খাদ্য, বস্ত্র ও আর্থিক বৃত্তি দেওয়া হয়। এছাড়া প্রাথমিক পর্যায় থেকে অতিরিক্ত পাঠদানের মাধ্যমে তারা ১৪ জন শিক্ষার্থীকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সহায়তা ও ৫ জনকে নার্সিং ইনস্টিটিউটে ভর্তিতে সহায়তা করেছে। প্রতিষ্ঠানটির সহায়তায় ২ তরুণী বিকেএসপিতে ভর্তি হয়েছে। এছাড়া তারা আরও ৩৭৬ জনকে সহায়তা করছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!