নতুন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে দাম সমন্বয় করতে গিয়ে বাংলাদেশে পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কিছুটা কমবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
চলতি মার্চ মাসের প্রথম দিনই মাসে মাসে দাম সমন্বয়ের নির্দেশিকা প্রকাশ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। সেই নির্দেশিকায় চলতি মাস থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে জ্বালানির দাম পুননির্ধারণের ঘোষণা দেওয়া হয়।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, “জ্বালানির দাম সমন্বয়ের ফলে দাম কিছুটা সাশ্রয় হবে। প্রস্তাব এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের অপেক্ষায়। সেখান থেকে অনুমোদন হয়ে এলেই ঘোষণা করা হবে। সামনের মাসে বিশ্ববাজারে দাম কমলে তখন আরও কমানো যাবে।”
দাম কতটা কমতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “প্রস্তাব অনুমোদন হওয়ার আগে তো বলতে পারছি না। আমরা অপেক্ষায় আছি যেন, মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্য তেল দিতে পারি। সমন্বয়ের ফলে সব ধরনের তেলের দামই কমবে বলে আশা করছি।”
মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে এদিনই তেলের নতুন দর ঘোষণা করে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশে ডিজেলে দাম এখনও ভারতের চেয়ে কম জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এতে তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ওই দেশের রুপিমূল্যকে বাংলাদেশি টাকায় পরিবর্তন করলে দেখা যায় সেখানে ডিজেলের লিটার ১৩৩ টাকা; আর বাংলাদেশে সেটা ১০৯ টাকা। বড় একটা ফারাক আছে। আমাদের এখানে আরও সাশ্রয়ী হলে পাচার হওয়ার আশঙ্কা আরও বেড়ে যাবে।”
২০২২ সালের ৩০ অগাস্ট তারিখের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বর্তমানে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ১০৯ টাকা, পেট্রোল ১২৫ টাকা এবং অকটেন ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাধারণ গণপরিবহনগুলো দেশের জ্বালানির দামের সঙ্গে সমন্বয় করে ভাড়া বাড়িয়ে থাকে। জ্বালানি তেলের দাম কমলে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সেবাগুলোর দামও সমন্বয় করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “যেসব সংস্থা এদেরকে রেগুলেট করে, তাদেরকে রেগুলেশনের মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। অনেকের অভিযোগ যে, জ্বালানিতে ৫ শতাংশ মূল্য সমন্বয় হলে ওদের ওখানে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ সমন্বয় করে ফেলে। এটা সম্পূর্ণ রূপে ঠিক না। এবার দাম সমন্বয় হলে গণপরিবহনে অবশ্যই প্রভাব পড়বে।”
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, লিটারপ্রতি ডিজেল ও কেরোসিনের দাম চার টাকা কমানো হতে পারে। অর্থাৎ বর্তমানে ১০৯ টাকার তেল ১০৫ টাকা নির্ধারণ করা হতে পারে।
এ ছাড়া ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া অকটেনের দাম লিটারপ্রতি ১১৫ টাকা এবং ১২৫ টাকা দরে বিক্রি হওয়া পেট্রোলের দাম ১১১ টাকা নির্ধারণ করা হতে পারে।
চলতি মাস থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণের নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সরকার। মূলত, এই সমন্বয়ের পরেই জ্বালানি তেলের দাম কমার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এমএম